বরগুনার সদর উপজেলায় পায়রা নদীর তীরে ঈদে বেড়াতে গিয়ে কিশোরদের হামলায় এক স্কুলছাত্র নিহত হয়েছে।
গুরুতর আহত হৃদয় (১৫) বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার (২৬ মে) ভোরে মারা যায়। ঈদের খুশির মাঝেও এমন নির্মমতা হতভাগ করে দেয় স্থানীয় জনগণকে।
এর আগে বরগুনায় ঈদের দিন সোমবার (২৫ মে) বিকেলে পায়রা নদীর পাড়ে গোলবুনিয়া বল্ক ইয়াডে ঘুরতে গেলে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রকাশ্যে পেটানো করা হয় হৃদয় নামের এই কিশোরকে। পরে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যার এ দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।
হৃদয় এ বছর টেক্সটাইল ভোকেশনাল স্কুল থেকে এসএসসি পাশ করেছে। সে তার বাবা মায়ের একমাত্র ছেলে। তার বাবা দরিদ্র দেলোয়ার হোসেন একজন রিকশাচালক। তারা বরগুনার চরকলোনি এলাকার চাঁদশী সড়কের একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করে আসছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় এলাকাবাসীসূত্রে জানা গেছে, ঈদের দিন সোমবার (২৫ মে) বিকেলে পায়রা নদীর পাড়ের ব্লক ইয়ার্ডে শতশত তরুণ-তরুণী ঘুরতে যায়। ওইদিন বিকেলে হৃদয়ও তার বেশ কয়েকজন বন্ধু নিয়ে গোলবুনিয়া ব্লক ইয়ারডে ঘুরতে যায়। এসময় হৃদয়ের এক বান্ধবীর সাথে দেখা হলে তার সাথে কথা বলে হৃদয়। তখন হৃদয় এবং তার বান্ধবীকে নিয়ে স্থানীয় নয়ন ও তার সহযোগিরা বাজে মন্তব্য করায় এর প্রতিবাদ করে হৃদয়।
এর কিছুক্ষণ পরেই উত্যক্তকারী নয়ন, হেলাল, আবীর, তনিক এবং নোমানসহ তাদের সহযোগিরা লাঠিসোটা নিয়ে হৃদয়ের ওপর হামলা চালায়। এসময় হৃদয় দৌড়ে বাঁচতে চাইলেও তাকে তাড়া করে পেটাতে থাকে নয়ন, হেলাল, এবং নোমানসহ তাদের সহযোগিরা।
এক পর্যায়ে লাঠির আঘাতে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে হৃদয়। কিন্তু কেই তাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেনি কেউ। সাথে সাথে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় বরগুনা সদর হাসপাতালে আনা হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
জানা গেছে, বরিশাল শেরই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে লাশের মযনা তদন্তের পর হৃদয়ের মরদেহ বরগুনা নিয়ে আসা হবে। হৃদয়ের বাবা-মা এখনও বরগুনায় ফিরে না আসায় এ ঘটনায এখনও কোনও মামলা হয়নি। তবে বরগুনা সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত কমকর্তা (ওসি) আবীর মোহাম্মদ হোসেন জানান, অপরাধীদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে পুলিশ।