বরগুনার আমতলী উপজেলায় আমতলী পৌরসভার কোন ওয়ার্ডেই নিকাহ রেজিস্ট্রার (কাজী) নিয়োগ নাই প্রায় ৯ বছর। গত ২৮/১১/২০১৭ খ্রিঃ জেলা রেজিস্টার মো. গোলাম ফারুক এক চিঠিতে আমতলী পৌরসভার পার্শ্ববর্তী ৬ নং আমতলী ইউনিয়নের কাজী মো. জয়নুল আবেদীনকে দ্বায়িত্ব দেয়া হয়।
ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, আমতলী পৌরসভার ১, ২, ৩, ৪ ও ৫ নং ওয়ার্ডের নিকাহ রেজিস্টার এর অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনরত বরগুনা জেলার আমতলী উপজেলার ৫ নং চাওড়া ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রার জনাব মোঃ শাহ আলম পারিবারিক কারণহেতু অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন হইতে অব্যাহতির জন্য আবেদন করায় তাহার অব্যাহতি পত্র গ্রহণপূর্বক উক্ত স্মারকে প্রদত্ত আমতলী পৌরসভার ৬, ৭, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের নিকাহ রেজিস্ট্রার এর অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনরত ৬ নং আমতলী ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্টার জনাব মোঃ জয়নুল আবেদিনকে মুসলিম বিবাহ ও তালাক (নিবন্ধন) বিধিমালা ২০০৯ এর বিধি ৬(১০) অনুবলে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বা স্থায়ী/অস্থায়ী নিকাহ রেজিস্ট্রার নিয়োগ না পাওয়া পর্যন্ত আমতলী পৌরসভার ১, ২, ৩, ৪ ও ৫ নং ওয়ার্ড সহ ৬, ৭, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডের নিকাহর রেজিস্টার এর অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হইল।
পরবর্তীতে জেলা রেজিস্ট্রার মিজানুর রহমান তালুকদারের স্বাক্ষরিত একটি চিঠিতে বলা হয়েছে, অত্র কার্যালয়ের ২৮/১১/২০১৭ খ্রিঃ তারিখে ১০০০(৭) নং স্মারকাদেশে আমতলী উপজেলার ৬ নং আমতলী ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রার জনাব মোঃ জয়নুল আবেদীনকে আমতলী পৌরসভায় পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্থায়ী/অস্থায়ী নিকাহ রেজিস্ট্রার নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত মুসলিম বিবাহ ও তালাক (নিবন্ধন) বিধিমালা ২০০৯ এর বিধি ৬(১০) অনুবলে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনের নির্দেশ প্রদান করা হয়। বর্তমানে শুন্য আমতলী পৌরসভায় কোন নিকাহ রেজিস্ট্রার নিয়োগ না হওয়ায় জনস্বার্থে উপরোক্ত স্মারক আদেশের ধারাবাহিকতায় ও শর্তাধীনে আমতলী পৌরসভার পার্শ্ববর্তী ৬ নং আমতলী ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রাী জনাব মোঃ জয়নুল আবেদীন কে আমতলী পৌরসভার নিকাহ রেজিস্ট্রারের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করার নির্দেশ প্রদান করা হইল।
সর্বশেষ ০৭/১২/২০২০ খ্রিঃ তারিখে জেলা রেজিস্ট্রার মো. সিরাজুল করিম সাক্ষরিত এক চিঠিতে বলা হয়, আমতলী উপজেলার সব কয়টি ওয়ার্ডে নিকাহ রেজিস্ট্রার (কাজী) পদটি শূন্য থাকায় পার্শ্ববর্তী ৫ নং চাওড়া ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রার মো. শাহ আলমকে ১,২,৩,৪ ও ৫ নং ওয়ার্ডের এবং ৬ নং আমতলী ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রার মো. জয়নুল আবেদীনকে ৬,৭,৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের দ্বায়িত্ব দেয়া হলো যা পরবর্তী ১২০ দিন বলবৎ থাকবে।
দ্বায়িত্ব পাওয়ার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও এতো বছর কিভাবে দ্বায়িত্ব পালন করছেন জানতে চাইলে মো. জয়নুল আবেদীন বলেন, আমি যে টাকা পাই তার ৫০% রেজিস্ট্রার অফিসে খরচ হয়। কাকে টাকা দিতে হয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, রেজিস্ট্রার অফিস থেকে যখন ভিজিট করতে আসেন তাদেরকে খরচ দিতে হয়, সাব রেজিস্ট্রার ও জেলা রেজিস্ট্রারকেও টাকা দিতে হয়।
উপজেলা সাব রেজিস্ট্রার নুরুল আবসর বলেন, আমতলী পৌরসভায় কোন কাজী নিয়োগ না হওয়ায় শাহ আলম ও জয়নুল আবেদীনকে দ্বায়িত্ব দেয়া হয়েছিলো। তবে কাজী নিয়োগের বিষয়টি সম্পূর্ণ জেলা রেজিস্ট্রারের অধিনে।
অভিযোগের বিষয়ে জেলা রেজিস্ট্রার মো. সিরাজুল করিম বলেন, এতোদিন যাবৎ যদি কেহ অবৈধভাবে কাজ করে থাকেন তাহলে সেটা অবশ্যই অন্যায় করেছেন। কেউ যদি সরকারি বিধি বিধান না মেনে কাজ করে তাহলে তদন্ত করে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেয়া হবে। নিয়োগের বিষয়টি সম্পূর্ণ উপজেলা সাব রেজিস্ট্রারের নিয়ন্ত্রণে কারন তিনিই হচ্ছেন নিয়োগ কমিটির আহবায়ক।
এ বিষয়ে আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, আমি বিষয়টি জেনেছি এবং উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার ও জেলা রেজিস্ট্রারের সাথে কথা বলেছি তারা আমাকে বলছেন দ্রুত সময়ের মধ্যে শূন্য পদগুলোয় নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করবেন।
আজ ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | হেমন্তকাল | ২০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি | রাত ৮:৪৭ | শুক্রবার
ডিবিএন/এসই/ মোস্তাফিজুর রহমান বাপ্পি