সিলেট মহানগরের এয়ারপোর্ট থানা এলাকা থেকে দুটি চোরাই সিএনজিচালিত অটোরিক্সা উদ্ধার করেছে বড়লেখা থানা পুলিশ। এসময় চোরাই গাড়ি বিক্রির নগদ ৩ লাখ টাকা এবং ৩৫টি অটোরিক্সার চাবি উদ্ধার করা হয়েছে।
এ ঘটনায় সুন্দর আলী (৩২) নামে এক অটোরিক্সা চোরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) ভোরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এর আগে আটক হয় সেবুল মিয়া (৩৪) নামের আরেক চোর। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সুন্দরকে গ্রেপ্তার করা হয়। সুন্দর সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার দারাগোখালী এলাকার ইলিয়াছ আলীর ছেলে এবং সেবুল বিশ্বনাথ উপজেলার আলকাছ আলীর ছেলে।
এদিকে, শনিবার রাতে অটোরিক্সা চুরির অভিযোগে সুন্দর আলী ও সেবুল মিয়ার বিরুদ্ধে বড়লেখা থানায় মামলা হয়েছে। বড়লেখা উপজেলার বর্ণি ইউনিয়নের টোকা গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক বাদি হয়ে এই মামলাটি করেছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, সুন্দর ও সেবুলকে রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) আদালতে হাজির করা হবে। পাশাপাশি তাদের রিমাণ্ডে নেওয়ার আবেদন জানানো হবে আদালতের কাছে।
পুলিশ জানায়, বড়লেখা উপজেলার বর্ণি ইউনিয়নের টোকা গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ভাতিজা সাহান আহমদের একটি অটোরিক্সা (মৌলভীবাজার থ-১২-৭৫৭৮) ছিল। গত বছরের ২৭ নভেম্বর সাহান প্রতিদিনের মতো সারাদিন অটোরিক্সা চালিয়ে রাত ১০টায় নিজ বসতঘরের বারন্দায় রেখে ঘুমিয়ে পড়েন। পরদিন ভোর ৫টায় তিনি ঘুম থেকে উঠে দেখেন তার গাড়িটি নেই। আব্দুর রাজ্জাক ও সাহানসহ তার পরিবারের লোকজন বিভিন্নস্থানে গাড়িটি খুঁজতে থাকেন। এরপর সাহান ও তার স্বজনরা জানতে পারেন সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার সেবুল আহমদ নামে চোরসহ কয়েকজন চোর সাহানের গাড়িটি চুরি করেছে।
“ডিজিটাল বাংলা নিউজ” অনলাইনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
এদিকে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি আব্দুর রাজ্জাক ও তার ভাতিজা সাহান আহমদ সন্ধ্যা ৭টায় অটোরিক্সা চোর সেবুল আহমদকে সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার লাউতা ইউনিয়নের গাঙপাড় বাজারে পান। এসময় কৌশলে তাকে বর্ণি ইউনিয়নের টোকা গ্রামে নিয়ে আসা হয়। পরে সেবুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে স্থানীয়দের কাছে স্বীকার (২ নম্বর) আসামি সুন্দর আলীসহ আরও ২ জন মিলে গত বছরের ২৮ নভেম্বর দিবাগত রাত ২টায় সাহানের অটোরিকশাটি চুরি করেছে। এ সময় সাহান তার অটোরিকশাটি কোথায় আছে জানতে চাইলে সেবুল জানায় সাহানের অটোরিকশাটি সুন্দর আলীর নিকট আছে। এসময় তারা কৌশলে সেবুলকে সুন্দর আলীর সাথে ফোনে যোগাযোগ করতে বলেন।
পরে সেবুল সুন্দর আলীর সাথে ফোনে যোগাযোগ করলে সে জানায় তাকে ৬০ হাজার টাকা দিলে সে সাহানের অটোরিকশাটি ফেরত দেবে। এ সময় স্থানীয়রা সেবুলকে মারতে উদ্যত হলে তারা বিষয়টি বড়লেখা থানা পুলিশকে জানান।
খবর পেয়ে বড়লেখা থানার এসআই আতাউর রহমান ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয়দের কবল থেকে সেবুলকে উদ্ধার করেন। পরে পুলিশ সাহানের অটোরিকশাটি উদ্ধারে অভিযানে নামে। পূর্বের চুক্তি অনুযায়ী কৌশলে সুন্দর আলীকে গ্রেপ্তার করতে বড়লেখা থানা পুলিশ শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) ভোরে সিলেট মহানগরীর এয়ারপোর্ট থানা এলাকায় অভিযান চালায়। এসময় পুলিশ সুন্দর আলীকে আটক করে। পরে তার কাছে থাকা দুটি চোরাই অটোরিক্সা উদ্ধার করতে পারলেও সাহানের গাড়িটি পাওয়া যায়নি। তখন সুন্দর পুলিশকে জানায় সে সাহানের গাড়িটি অন্যত্র বিক্রি করে দিয়েছে।
বড়লেখা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইয়ারদৌস হাসান শনিবার রাত সাড়ে ১১টায় দিকে জানায়, দুটি চোরাই অটোরিক্সাসহ দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। রোববার দুপুরে তাদের আদালতে সোপর্দ করা হবে। পাশাপাশি তাদের রিমাণ্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে আবেদন করা হবে।
ডিবিএন/এসডিআর/মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান