কিছু শিক্ষিত আতেল প্রায়ই বলেন জাতির পিতা বঙ্গ বন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আওয়ামী লীগের নয় সমগ্র জাতির। পরামর্শ দেন আওয়ামী লীগের গন্ডি থেকে বঙ্গবন্ধুকে বের করে দিতে। এই জ্ঞানপাপিদের কাছে প্রশ্ন রাখতে চাই, ৭৫ এর পরে এই সত্যটি বলেন নি কেন? ২১ বছর পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর নাম উচ্চারন করা নিষিদ্ধ ছিল। ১৫ই আগষ্ট খালেদা জিয়ার মিথ্যা জন্মোৎসব পালন করতেও দেখা গেছে সুশীল সমাজের অধিপতিদের। তখন তো কেউ একবারও বলেননি বঙ্গবন্ধু জাতির পিতা! ৯৬ সালে আওয়ামী সরকার গঠন করতে না পারলে নতুন প্রজন্ম আজও অন্ধকারে থেকে যেত। চিনতেই পারতনা বঙ্গবন্ধুকে। জানতে পারত না স্বাধীনতা যূদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস। কেমন করে স্বাধীনতা অর্জিত হল সেকথাও জানতে পারতনা প্রজন্ম। বঙ্গবন্ধু ইস্যুটিই বাঙালীকে বিভক্ত করে রেখেছে।
যারা আজ বঙ্গবন্ধু বাঙালীর দ্বাবী করেন, তারাই ৭২ সালে প্রথম বিজয় দিবসকে ভারতের বিজয় বলে কটাক্ষ করেছে। এই জ্ঞান পাপিদের আসল লক্ষ্যটি হল জাতির পিতাকে বঙ্গবন্ধু সম্বোধন করে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধাচারন করা। কৌশলে শেখ হাসিনার সরকারকে হেয় প্রতিপন্ন করা। কে বলেছে আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুকে দলের করে রেখেছে? জাতির পিতাকে সম্মান দিতে কারো কাছে ভিক্ষা চাইতে হবে? কেউ জাতির পিতা সম্বোধন করলে আওয়ামী লীগ কি প্রতিবাদ করেছে না দাবী করেছে জাতির পিতা বলা যাবেনা? সত্য মেনে আপনারা বঙ্গবন্ধু বলেন না কেন? লন্ডনে বসে কুখ্যাত তারেক জিয়া যখন বঙ্গবন্ধুকে তাচ্ছিল্য করে বক্তৃতা দেয় তখন আপনারকি একবারও প্রতিবাদ করেছেন? এই চক্রটি স্বাধীনতার পর থেকেই দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে আসছে। বিধ্বস্থ দেশ গড়ার বদলে তারা দাবী আদায়ের সংগ্রাম করেছে। বঙ্গবন্ধু সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার তীব্র করেছে অবিরাম। বঙ্গবন্ধুর হত্যার ক্ষেত্রটি প্রস্তুত করে দিয়েছে জ্ঞান পাপিরা। এরা সব সরকারের আমলেই সুবিধা নেয়। তাদের বক্তব্য শুনে মনে হবে যেন দেশের স্বজন তারা। আসলে এরাই দ্বন্দ্ব বাঁধিয়ে রেখেছে দেশে।
দেশে দু’টি ধারার রাজনীতি বিরাজমান। একটি বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রানীত স্বাধীনতা এবং মূক্তিযূদ্ধের পক্ষে অন্যটি ঠিক এর বিপক্ষে। বিপক্ষের রাজনীতি শুধু বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে অগ্রাহ্য করাই নয়, পাকিস্তানি ভাবধারায় পরিচালিত। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে অস্বিকার করে বাংলাদেশে রাজনীতি চলতে পারেনা। যেদিন জাতির পিতাকে গ্রহন করে রাজনীতি শুরু হবে সেদিন দেশের রাজনীতির চিত্র হবে ভিন্ন। এবং যত শীঘ্র সম্ভব সত্যটি মেনে নেওয়াই শ্রেয়। না হয় দ্বন্দ্বটি রয়েই যাবে। স্বাধীনতা এবং মুক্তিযূদ্ধের পক্ষে সমর্থনকারী জনগন এই সত্য প্রতিষ্ঠা করতে আজীবন সংগ্রাম করবে। বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচারের বিষয়টিও জড়িত রাজনীতির সাথে। এখন নেপথ্যের নায়কদেরও বিচারের দাবী জোরদার হচ্ছে। যারা দলের গন্ডিতে বঙ্গবন্ধুকে আটকে রাখা হয়েছে বলেন তারা আসলে মতলববাজ। বঙ্গবন্ধু সর্বকালেই বাঙালীর ছিলেন, আছেন এবং থাকবেন। মিথ্যাচার বন্ধ করুন প্লিজ!
আজিজুর রহমান প্রিন্স,
কলামিস্ট, ঢাকা, বাংলাদেশ।