ফেসবুক এখন সবচাইতে জনপ্রিয় গনমাধ্যম, মুহুর্তে ছড়িয়ে পড়ে। সত্যতা যাচাই করে ক’জন? পড়েই নীজের মত করে মন্তব্য লিখে দেয়। গতকাল একটি পোষ্ট দেখলাম, একজন মহিলা ফেসবুক লাইভে এসে বলছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গনভবনে বসে ঘুষ গ্রহন করছেন এবং তার কাছে ঘুষ গ্রহনের ছবি রয়েছে। ভুমিকায় যা বলেছেন তা লিখার আগ্রহ আমার নেই। একটি ছবি দেখালেন, সালমান এফ রহমান মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে দুই কোটি টাকার চেক প্রদান করছেন। অন্য ছবিটিও আরেকজন ব্যবসায়ী একইভাবে চেক প্রদান করছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হাতে এবং তার ছবি দেশের দৈনিকগুলি গুরত্ব দিয়ে ছেপেছে। জাতীয় দুর্যোগে সরকার প্রধান এমন সাহায্য নিয়েছেন সব সরকারের আমলেই। এই অর্থ গ্রহন ঘুষ কিনা তা বোঝবার যোগ্যতা ঐ মহিলা থাকলে ফেসবুক লাইভে এসে এমনভাবে বলতেননা। ঘুষ কেউ প্রকাশ্য ছবি তুলে নেয়না। যত ঘুষখোর ধরা পরেছে তাদের ঘুষ গ্রহনের প্রমান বের করতে পুলিশকে পরিশ্রম করতে হয়েছে। এমন পাগল ঐ মহিলা একা না, আরো আছে। অবাক কান্ডটি হলো, মহিলার এই অভিযোগ দেখে আর শুনে যারা মন্তব্য করেছেন তাদের বিবেক বুদ্ধি নিয়ে সন্দেহ হচ্ছে। উত্তেজীত লেখকদের ভাষাজ্ঞান আর মন্তব্য অত্যান্ত নিম্নমানের। কিন্তু সাধারন মানূষ এই প্রচারনাটিকে সম্বল করেই চায়ের টেবিলে ঝড় তুলছেন ” শেখ হাসিনা চোর” বলে। এটাই এখন আলোচনার বিষয়। বর্তমান সরকার টানা তৃতীয় মেয়াদে এখন ক্ষমতায়। দেশে চুরি হয়নি কেউ বলেনি। স্বয়ং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও চোর, দুর্নীতিবাজ আর ঘুষখোরদের বিরুদ্ধে অনমনিয় অবস্থান ঘোষনা করেছেন। নিজ দলের দুর্নীতিবাজদেরকেই ধরেছেন আগে। তাদের কারও কারো বিচার হয়েছে আবার কারো বিরুদ্ধে বিচার চলছে। তাই বলে শুধু আওয়ামী লীগের লোকেরাই চুরি করছে বলে যারা আত্নতুষ্টিতে ঢোকর গিলছেন, তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চলবেনা ভাববার কোনই কারন নেই। করোনা পরিস্থিতির কারনে বিশ্ব এখন বেশামাল, মানূষের জীবন বাচানোই এখন সরকারের প্রধান লক্ষ্য। করোনা সংক্রমনের শুরুতেই অনেকে বলেছিলেন, বাংলাদেশে করোনায় এক কোটি মানূষ মারা যাবে। তাদের সেই অনুমান সত্য হয়নি বরং, বাংলাদেশ এখন বিশ্বের অন্য যে কোন দেশের মতই সঠিক ভাবে করোনা মোকাবেলা করছে। আপদকালিন অনুদান প্যকেজ দিয়ে মানূষকে নিরাপদ অবস্থানে থাকার ব্যবস্থা গ্রহন করেছে। করোনাকে লক্ষ্য করে যারা অনৈতিকভাবে অর্থ উপার্জন করেছে, সরকার তাদেরকেও আইনের আওতায় এনেছে। সবচেয়ে বড় কথা বিগত ১১ বছরে বাংলাদেশকে একটি স্থিতিশীল অবস্থানে দাড় করিয়েছে বর্তমান হাসিনা সরকার। প্রত্যাশিত পদ্মা সেতু নির্মানের আগেও দেশীয় অনুচর আর শত্রুরা বিদেশে দালাল নিয়োগ করে বিশ্বব্যংকের প্রদত্ত্ব অর্থ ফেরত নেওয়া নিশ্চিত করেছে। ঢোল বাজিয়ে সরকারের দুর্নীতির বক্তৃতা করেছে মাঠেময়দানে। সরকার চ্যলেঞ্জ দিয়েছিল অভিযোগের বিরুদ্ধে, ঘোষনা করেছিল নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মানের। পদা সেতু এখন বাস্তবতা আর দুর্নীতির মামলাটিও কানাডার আদালতে মিথ্যা প্রমানীত হয়েছে। হাসিনা সরকারকে উৎখাত করার ষড়যন্ত্রটি নতুন নয়, অজানাও নয়। তবে ব্যর্থ হয়েছে বার বার। রাজনীতিতে ষড়যন্ত্রকারীরা কখনোই জয়ী হয়নি, হবেওনা। ৭৫ সালের অবস্থাটি এখন আর নেই। যারা গনতান্ত্রিক পন্থায় ক্ষমতায় যাওয়া সম্ভাব নয় ভাবছেন, তারাই বক্র পথে ক্ষমতা দখলের ষড়যন্ত্র করছেন। জনগন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে এখন ফেসবুকে মিথ্যাচারের রাজনীতি করছেন। মিথ্যা আর অপবাদ দিয়ে সরকারকে জনগন থেকে বিচ্ছিন্ন করা যাবেনা। সাবেক সেনাপ্রধান মঈন ইউ আহাম্মেদ একটি সত্য কথা লিখেছেন তার বইতে ” শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশে সবাইকেই কেনা যায়”। শেখ হাসিনা জাতীর জনক বংগবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা এবং নির্মোহ। জনগনের কল্যানে বংগবন্ধু জীবন উৎসর্গ করছেন, শেখ হাসিনা বাবার অসমাপ্ত স্বপ্নপুরন করবেন। মিথ্যাচার করে শেখ হাসিনাকে থামানো যাবেনা। করোনা মোকাবেলা করে দেশ বংগবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশে পরিনত হবেই ইনশাল্লাহ।
আজিজুর রহমান প্রিন্স
রাজনীতিবিদ, লেখক ও গবেষক
টরেন্টো, কানাডা
১৯ জুলাই, ২০২০।