বাংলাদেশে ফেসবুকের স্থানীয় এজেন্ট এইচটিটিপুল বাংলাদেশ লিমিটেডের বিরুদ্ধে ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগে মামলা করেছে এনবিআরের ভ্যাট গোযন্দা ও তদন্ত অধিদফতর। প্রতিষ্ঠানটি ৯৩ লাখ টাকার ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে বলে গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের অনুসন্ধানে প্রমাণ মিলেছে।
এই মামলা বৃহস্পতিবার করা হয়েছে বলে অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান জানিয়েছেন। ভ্যাট ফাঁকির দায়ে স্থানীয় কোনো ফেসবুক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এবারই প্রথমবারের মতো মামলা করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের মে মাসে ফেসবুকের এজেন্ট এইচটিটিপুল বাংলাদেশ লিমিটেড ভ্যাট নিবন্ধন গ্রহণ করে। যার নম্বর- ০০২৮৪৮৮৩৬৭০২০৩। কিন্তু জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ভ্যাট গোয়েন্দ সংস্থার কর্মকর্তারা প্রতিষ্ঠানটির ঠিকানায় গিয়ে দেখতে পান, এইচটিটিপুল বাংলাদেশ নামের কোনো প্রতিষ্ঠানের কোনো কার্যক্রম বা অস্তিত্ব ওখানে নেই। বনানীতে অফিসটি স্থানান্তর করা হয়েছে জানানো হয়। কিন্তু তাদের দেওয়া ঠিকানা অনুযায়ী, বনানীতে গিয়ে কর্মকর্তারা ওই অফিসের হদিস খুঁজে পাননি।
ড. মইনুল জানান, ভ্যাট আইন অনুসারে অফিস পরিবর্তন করতে হলে ভ্যাট অফিসকে জানাতে হবে। তাদের এই পরিবর্তনের কোনো নোটিশ দেওয়া হয়নি।
তিনি আরও বলেন, প্রতিষ্ঠানটি তিন মাস আগে নিবন্ধন নিলেও এখন পর্যন্ত কোনো ভ্যাট রিটার্ন দাখিল করেনি। আইন অনুযায়ী প্রতি মাসে রিটার্ন দাখিল করা বাধ্যতামূলক। এইচটিটিপুল প্রতি মাসে রিটার্ন দাখিল না করায় প্রতিষ্ঠানটি কর্তৃক কর্তনকৃত ভ্যাট সরকারি কোষাগারে জমা হয় নি। ভ্যাট আইনের লংঘনের দায়ে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানটি আরও কোনো আর্থিক অনিয়ম করেছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান মইনুল খান।
ভ্যাট গোয়েন্দাদের অনুসন্ধান অনুযায়ী, স্থানীয় ফেসবুক এজেন্ট এইচটিটিপুল ইতোমধ্যে ৩১টি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ১৯৮টি চালানে ৬ কোটি ২২ লাখ টাকার বিজ্ঞাপন সংগ্রহ করেছে। এতে তারা ১৫ শতাংশ হারে ৯৩ লাখ ৩২ হাজার টাকার ভ্যাট কর্তন করেছে। এই টাকা সরকারি কোষাগারে জমা হয় নি। ফেসবুক এজেন্টের ঠিকানা সঠিকভাবে ব্যবহার না করায় এবং মাসিক রিটার্ন জমা না দেওয়ায় তাদের হাতে থাকা সরকারের ৯৩ লাখ ৩২ হাজার টাকা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়।
গোয়েন্দা কর্মকর্তরা বলেছেন, এই টাকা সরকারের কোষাগারে জমা না হওয়ায়, মাসিক রিটার্ন দাখিল না করায় এবং অনুমোদন ব্যতিরেকে অস্তিত্বহীন হওয়ায় মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। মামলাটি নিস্পত্তির জন্য ঢাকা দক্ষিণ ভ্যাট কমিশনারেট অফিসে পাঠানো হয়েছে।