কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি : কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলা পল্লী উন্নয়ন অফিসে ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে উদকনিক প্রকল্পের আওতায় একটি ব্যাচের প্রশিক্ষন না হলেও প্রশিক্ষনের ৯ লাখ ১২ হাজার টাকা নিয়ে টালবাহনা চলছে। তৎকালীন উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা (আরডিও) এবং বর্তমান হিসাবরক্ষকের যৌথ স্বাক্ষরে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন হলেও সরকারী কোষাগারে ফেরত দেয়ার কোন প্রমানপত্র দেখাতে পারছেন না তারা । ফলে ওই টাকার ভবিষ্যত নিয়ে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।
সুত্রে জানা গেছে, উত্তরাঞ্চলের দরিদ্রদের কর্মসংস্থান নিশ্চিতকরণ (উদকনিক) প্রকল্পের আওতায় ফুলবাড়ী উপজেলা পল্লী উন্নয়ন অফিসের বাস্তবায়নে ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে ব্যাচ প্রতি ৪৮ জন করে মোট চারটি ব্যাচের প্রশিক্ষন বাবদ প্রায় ৩৬ লাখ ৪৮ হাজার টাকা বরাদ্দ আসে। এর মধ্যে ৩টি ব্যাচের প্রশিক্ষন সমাপ্ত হলেও করোনার কারনে একটি ব্যাচের প্রশিক্ষন সম্পন্ন হয়নি। বাদ পড়া ব্যাচের প্রশিক্ষনের ৯ লাখ ১২ হাজার টাকা অগ্রনী ব্যাংকের ৩৩৮৮০০০৫ নম্বর হিসাব থেকে তৎকালীন উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা মোঃ সামছুল হুদা এবং বর্তমান হিসাবরক্ষক ফিরোজ আহম্মেদ যৌথ স্বাক্ষর করে উত্তোলন করে নিজেদের কাছে রেখে দেন। কিছুদিন পর তৎকালীন আরডিও মোঃ সামছুল হুদা বদলী হয়ে অন্যত্র চলে যান। ফলে সরকারী কোষাগারে টাকা জমা দেয়ার বিষয়টি অমিমাংসিতই থেকে য়ায়।
এ প্রসঙ্গে ফুলবাড়ী উপজেলা পল্লী উন্নয়ন অফিসের হিসাবরক্ষক ফিরোজ আহম্মেদ জানান, করোনার কারনে প্রশিক্ষন না হওয়ায় ব্যাংক থেকে সমুদয় টাকা উত্তোলন করে প্রকল্প পরিচালক (পিডি) স্যারকে দেয়া হয়েছে। টাকা প্রদানের প্রমান আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, হাতে হাতে টাকা দেয়া হয়েছে। কোন কাগজ পত্র আমার কাছে নাই। সরকারী কোষাগারে জমা না দিয়ে পিডি স্যারকে দিলেন কেন ? এমন প্রশ্নের কোন সদুত্তোর তিনি দিতে পারেন নি।
তৎকালীন উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা মোঃ সামছুল হুদা বলেন, টাকা উত্তোলন করে অফিস কর্মচারীদের সম্মুখে সমুদয় টাকা হিসাবরক্ষকের কাছে রাখা হয়েছে। আমি বদলী হয়ে চলে আসায় পরে কি হয়েছে জানিনা। উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা মোছাঃ উম্মে কুলছুম জানান, আমি যোগদান করার আগে বিষয়টি ঘটেছে। আমি এমনিতে শুনেছি, কিন্তু ও ব্যাপারে আমার কাছে কোন তথ্য নাই।
এ প্রসঙ্গে উত্তরাঞ্চলের দরিদ্রদের কর্মসংস্থান নিশ্চিতকরণ (উদকনিক) প্রকল্পের পরিচালক (পিডি) মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, এ ধরনের কোন টাকা কেউ আমাকে দেয়নি। তাছাড়া সরকারী টাকা হাতে হাতে নেয়ার প্রশ্নই আসেনা। বিষয়টি আমি একটু একটু শুনেছি, খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।