কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে নবম শ্রেণীর এক মাদ্রাসা ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় নারী-শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের হয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম মোঃ মোতালেব মিয়া(৪৫)। তিনি উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের গোরকমন্ডল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক এবং একই ইউনিয়নের নাওডাঙ্গা গ্রামের মৃত চাঁন্দ মিয়ার ছেলে।
শুক্রবার সকালে ওই শিক্ষার্থীকে পুলিশ ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য কুড়িগ্রাম আদালতে প্রেরণ করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের গোরকমন্ডল গ্রামে। শিক্ষক কর্তৃক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের ঘটনায় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী বৃহস্পতিবার সকালে গোরকমন্ডল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে অভিযুক্ত শিক্ষকের শাস্তির দাবী জানিয়েছে।
গোরকমন্ডল গ্রামের বাসিন্দা নুর হোসেন, ঝান্টু মিয়া ও মোশারফ হোসেন জানান, সহকারী শিক্ষক মোতালেব মিয়া বালারহাট ডি এস দাখিল মাদ্রাসার নবম শ্রেনীর ওই শিক্ষার্থীর সাথে প্রেমের সর্ম্পক গড়ে তোলে। এক পর্যায়ে ওই শিক্ষার্থীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে গিয়ে একাধিকবার দৈহিক মেলামেশা করে। তাদের প্রেমের সর্ম্পকের কথা জানাজানি হলে ওই শিক্ষার্থী মোতালেবকে বিয়ের জন্য চাপ দেন। উপায়ন্তর না দেখে শিক্ষক মোতালেব বুধবার রাতে মেয়ের বাড়ীতে লোকজন নিয়ে গিয়ে সালিশ বৈঠকের মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা চালান। কিন্তু সমাধানের চেষ্টা ব্যর্থ হলে শিক্ষার্থীর বাবা বৃহস্পতিবার রাতে বাদী হয়ে ফুলবাড়ী থানায় নারী-শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন।
ওই এলাকার গ্রাম পুলিশ আব্দুল করিম বলেন,মেয়েটির সরলতার সুযোগে ওই শিক্ষক তার সর্বনাশ করেছে। একটি প্রভাবশালী মহল সমাধানের চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত পারেনি। পরে মেয়ের বাবা ফুলবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করেছে। আমরা চাই মেয়েটি যেন সঠিক বিচার পায় এবং অপরাধীর যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়।
গোরকমন্ডল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আইয়ুব আলী জানান, এ ঘটনায় অভিভাবক ও এলাকাবাসী বিদ্যালয়ে এসে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। সহকারী শিক্ষক মোতালেব মিয়া অসুস্থ থাকায় ২৪ আগষ্ট থেকে মেডিকেল ছুটিতে আছেন। বিষয়টি উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
উপজেলার ভারপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আশরাফুজ্জামান জানান, বিষয়টি শুনেছি। তার বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারীর ঘটনা হলে আইনাগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ফুলবাড়ী থানার অফিসার ইনর্চাজ (ওসি) ফজলুর রহমান জানান, শিক্ষার্থীর বাবা বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার রাতে নারী শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেছেন। মেয়েটিকে মেডিকেল পরীক্ষা করার জন্য শুক্রবার সকালে কুড়িগ্রাম আদালতে পাঠানো হয়েছে। সেই সাথে আসামীকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।