ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধিঃ কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে করোনাকালীন দেড় বছরে পানিতে ডুবে ১৪ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। অসচেতনতা এবং সাবধানতা অবলম্বন না করার কারনে পানিতে ডুবে মৃত্যুর ঘটনা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে পুলিশ দাবী করেছে। তাই পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু হ্রাসে-শিশুর প্রতি যত্নশীল হওয়া, শিশুকে বাড়ীর বাইরে একা খেলতে না দেয়া, সাঁতার না জানা শিশুকে পুকুর,ছড়া কিংবা নদ-নদীতে গোসল করা থেকে বিরত রাখা সহ সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, পাড়া-মহল্লায় সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য প্রচার-প্রচারণার উপর গুরুত্বারোপ করেছেন সচেতন মহল।
অনুসন্ধানে জানা যায়, গত ১১ জুলাই রবিবার বিকালে বাড়ীর পাশের পুকুরে ডুবে মারা যায় উপজেলার নওদাবশ গ্রামের সুবল চন্দ্রের কন্যা সুর্বনা (৬)। এর একদিন আগে ১০ জুলাই দুপুরে একইভাবে মারা যায় কিশামত প্রানকৃষ্ণ গ্রামের হারুন মিয়ার ছেলে মিরাজ (২)। এছাড়াও চলতি বছরের ২১ মে বাড়ীর উঠানে খেলতে খেলতে সকলের অগোচরে পাশের পুকুরে পড়ে মারা যাওয়া ঘোগারকুটি গ্রামের মাইদুল ইসলামের ছেলে মাহিম (২) সহ ২০২০ সালের জানুয়ারী মাস থেকে ২০২১ সালে ২৯ জুলাই পর্যন্ত উপজেলায় পুকুর ডোবা খাল-বিলে পড়ে মৃত্যুবরণ করে কোলমমতি ১৪ শিশু।
পানিতে ডুবে মারা যাওয়া এক শিশুর পিতা উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের তাজুল ইসলাম জানান ,তার দেড় বছরের কন্যা সন্তান উঠানে খেলতে খেলতে পরিবারের সদস্যদের অগোচরে বাড়ির পাশের ডোবার পানিতে পড়ে মারা যায়। কন্যা সন্তানের অকাল মৃত্যুতে শোকে কাতর তাজুল ইসলাম বলেন, অসচেতনতা এবং অবহেলার কারণে আমারা সন্তানকে হারিয়েছি। তাই শিশুদের প্রতি সকলেরই সচেতন হওয়া উচিত।
নাওডাঙ্গা স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল হানিফ সরকার বলেন, পানিতে পড়ে শিশুর মৃত্য পরিবার ও সমাজকে আকর্ষ্মিক শোকের ছায়ায় ঢেকে দেয়। পারিবারিক এবং সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি হলে পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যুর সংখ্যা অনেকাংশে হ্রাস পাবে বলে আমি মনে করি। এজন্য সরকারী বা বেসরকারী ভাবে প্রচার-প্রচারণার বিকল্প নাই।
ফুলবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রাজীব কুমার রায় বলেন, ২০২০ সালের জানুয়ারী মাস থেকে ২০২১ সালের ২৯ জুলাই পর্যন্ত এ উপজেলায় পানিতে ডুবে ১৪ শিশু মৃত্যুবরণ করেছে। অভিভাবকরা সচেতন হলেই পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যুর সংখ্যা হ্রাস পাবে বলে আমার বিশ্বাস।