পা দিয়ে লিখে চলতি বছর বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী জছিমিঞা মডেল সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মানিক রহমান। জন্ম থেকেই দুই হাত নেই তার।
সোমবার দুপুরে প্রকাশিত এসএসসি’র ফলাফলে মা-বাবার মুখ উজ্জল করে গোল্ডেন জিপিএ- ৫ পেয়ে উত্তীর্ন হয়েছে সে। তার মোট নম্বর ১০৫৭। তার এ সাফল্যে বাবা-মা, শিক্ষক-শিক্ষিকা, সহপাঠি, এলাকাবাসী সহ সকলেই আনন্দিত ও গর্বিত।
শারীরিক প্রতিবন্ধী এই মানিক রহমান উপজেলার সদর ইউনিয়নের চন্দ্রখানা গ্রামের ঔষধ ব্যবসায়ী মিজানুর রহমানের ছেলে। তার মা মরিয়ম বেগম উপজেলার রাবাইতারী স্কুল এন্ড কলেজের ইতিহাস বিষয়ের সহকারী অধ্যাপক। পিতা-মাতার বড় ছেলে মানিক রহমান জন্ম থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধী। জন্ম থেকেই তার দুটো হাত নেই, একটি পা অন্যটির চেয়ে অনেকাংশে খাটো।কিন্তু পড়াশোনায় কখনও পিছিয়ে যায়নি মানিক। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা থাকলেও পিইসি ও জেএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ সহ ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছে সে।
✪ আরও পড়ুন: এসএসসি ও সমমানে গড় পাসের হার ৯৩.৫৮ শতাংশ
শুধু পা দিয়ে লেখাই নয়, পা দিয়ে মোবাইল চালনো এবং মোবাইলে কথা বলাসহ কম্পিউটার টাইপিং ও ইন্টারনেট ব্যবহারেও পারদর্শী মানিক রহমান।
মানিক রহমান জানায়, সে ঢাকা নটেরডেম কলেজে ভর্তি হতে চায়। এরপর বুয়েটে পড়াশোনা করে ভবিষ্যতে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হয়ে বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতে চায় সে।
মানিকের মা মরিয়ম বেগম বলেন, আমার ছেলে প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে পিএসসি- জেএসসি’র মতো এসএসসিতেও গোল্ডেন জিপিএ- ৫ পেয়েছে। এজন্য আমি গর্ববোধ করছি এবং তার শিক্ষক-শিক্ষিকাসহ সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আল্লাহ যেন আমার ছেলের কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন পুরণ করেন।
✪ আরও পড়ুন: চেক ডিজঅনারের মামলা করতে পারবে না ব্যাংক, হাইকোর্টের রায় বহাল
মানিকের বাবা মিজানুর রহমান জানান, আমার দুই ছেলের মধ্যে মানিক বড়। জন্ম থেকেই তার দুটো হাত না থাকায় আমরা তাকে পা দিয়ে লেখার অভ্যাস করিয়েছি। এজন্য আমার স্ত্রী মরিয়ম বেগমের অনেক কষ্ট করেছেন। মানিক পিইসি ও জেএসসিতে ভাল রেজাল্ট করেছে। এসএসসিতেও গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে সে সকলের মুখ উজ্জল করেছে। আমি দেশবাসীর কাছে মানিকের জন্য দোয়া চাচ্ছি। সকলের দোয়ায় সে যেন অনেক বড় হতে পারে।