কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়াই কৃষি জমিতে অবৈধ ভাবে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে ছয়টি ইটভাটা। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র, ইট পোড়ানোর লাইসেন্স, ফায়ার সার্ভিসের সার্টিফিকেট এমনকি ভ্যাট-আয়কর প্রদানের কাগজপত্র ছাড়াই আবাদী জমি,জনবসতি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশে রাত-দিন ইট পোড়ানোর কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন ইটভাটার মালিকরা। ফলে ভাটার বিষাক্ত ছাঁই, কালো ধোঁয়ায় ফলন হ্রাসের আশংকার পাশাপাশি স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে পার্শ্ববর্তী এলাকার বাসিন্দারা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের আজোয়াটারী গ্রামের বিস্তীর্ন কৃষি জমিতে মেসার্স ডব্লিউএএইচ ব্রিকস ফিল্ড, এবি ব্রিকস, মেসার্স এমএসএইচ ব্রিকস, বড়ভিটা ইউনিয়নের নওদাবশ এলাকায় সাইফুর রহমান সরকারী কলেজের পাশে মেসার্স এএমবি ব্রিকস ফিল্ড, ফুলবাড়ী সদর ইউনিয়নের খামারের বাজার এলাকায় মেসার্স কেএমবি ব্রিকস ফিল্ড এবং শিমুলবাড়ী ইউনিয়নের জকুরটল এলাকায় মেসার্স জেএমএস ব্রিকস ফিল্ড নামের ছয়টি ইটভাটা গড়ে উঠেছে।
এসকল ইটভাটার একটিরও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র, ইট পোড়ানোর লাইসেন্স, ফায়ার সার্ভিসের সার্টিফিকেট, ভ্যাট-আয়কর প্রদানের কাগজপত্র কিছুই নাই। সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে চালাচ্ছেন ইট পোড়ানোর কাজ। ভাটার আয়তন দুই একরের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার নিয়ম থাকলেও বিস্তৃত এলাকা দখলে নিয়েছেন তারা। ভরাট করেছেন পানি নিষ্কাষনের পথ। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রভাবশালী হওয়ায় সরকারী নিময়নীতির তোয়াক্কা করছেন না ইটভাটার মালিকরা।
স্থানীয় শফিকুল ইসলাম (৩৫), উমর আলী (৫৫), মজিদুল ইসলাম (৩০) জানান, ভাটার মালিকরা জমি ভাড়া নিয়ে ইট পোড়ানোর কাজ করছেন। এসব ইটভাটার কালো ধোঁয়ায় আশপাশের জমিতে বোরো এবং আমন আবাদের ফলন কমে গেছে। ধরতি কমে গেছে সুপারী, আম, কাঠাল, নারিকেল সহ বিভিন্ন ফলের। তারা ইট পরিবহনের সুবিধার্থে সেতুর মুখ বন্ধ করে উঁচু রাস্তা তৈরী করায় বর্ষা মৌসুমে প্রতিবছর এসব এলাকার শতশত বিঘা আমন ক্ষেত পানিতে তলিয়ে নষ্ট হচ্ছে।
এ ব্যাপারে মেসার্স ডব্লিউএএইচ ব্রিকস ফিল্ডের স্বত্তাধিকারী মোশারফ হোসেন জানান, জেলার কোন ভাটারই পরিবেশ অধিদপ্তর সহ আনুসাঙ্গিক কাগজপত্র নাই। মালিক সমিতির লোকজনসহ ডিসি অফিসে কথা বলেছি। তারা ভাটা চালনোর মৌখিক অনুমতি দিয়েছে।
ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুমন দাস জানান, গত ৮ ডিসেম্বর তিনটি ভাটায় ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হয়েছে। তারা উপযুক্ত কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। তাদেরকে আগামী ২২/১২/২০২২ তারিখ পর্যন্ত সময় দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে কাগজ দেখাতে না পারলে অবৈধ ইটভাটা গুলোর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।