ছয় বছর আগে মারা যাওয়া এক মেয়েকে ভার্চুয়াল বাস্তবাতায় মায়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করালেন দক্ষিণ কোরিয়ার তথ্যপ্রযুক্তিবিদরা। মৃত মেয়ের সঙ্গে ওই মায়ের কথোপথোন ও আদর করার হৃদয়বিদারক ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে বিশ্বজুড়ে হইচই শুরু হয়েছে।
সৌদিআরবভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আরব নিউজের খবরে বলা হয়েছে, ২০১৬ সালে লিউকোমিয়ায় মারা যান ছোট্ট শিশু না-ইয়ন। সেই শিশুটিকে ভার্চুয়াল বাস্তবাতায় মায়ের সামনে আনা হয়। মা ঝাং জি সাং মেয়ের সঙ্গে কথা বলেন। মেয়েকে ছুঁয়ে আদর করেন। এসময় মৃত মেয়েকে পেয়ে অঝোরে কাঁদতে থাকেন ঝাং জি।
তবে ঝাং জি কাঁদলেও বাস্তবে আসেনি তার মেয়ে। ঝাং জি এর হাতে স্পর্শকাতর গ্লাভস ও চোখে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি (ভিআর) বক্স লাগানো হয়। এর মাধ্যমে তিনি ভার্চুয়ালি মেয়েকে দেখতে পান, কথা বলেন এবং সেন্সরের মাধ্যমে মেয়েকে ছুঁয়ে আদর করেন।
প্রযুক্তিবিদরা প্রথমে না-ইয়ান এর ছবি নিয়ে তার মতো এনিমেশন তৈরি করেন। পরে সেই এনিমেশনকে সংযুক্ত করা হয় ভিআর বক্স ও সেন্সর হ্যান্ড গ্লাভসে।
দক্ষিণ কোরিয়ার একটি টেলিভিশন এই ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ভিডিও প্রচার করে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, একটি গ্রিন স্ক্রিন কক্ষে মা ঝাং জি ভিআর বক্স ও গ্লাভস পরে মেয়েকে ডাকছেন। এসময় তিনি ভার্চুয়ালি দেখতে পান, মায়ের ডাক শুনে তার মৃত মেয়ে কয়েকটি পাথরের টুকরোর পাশ থেকে দৌড়ে তার দিকে ছুটে আসে।
এসময় মেয়েটি বলে, ‘মা, তুমি কোথায় ছিল? তোমাকে আমার খুব মনে পড়ে। আমাকে তোমার মনে পড়ে?’
উত্তর দেয়ার আগেই বাস্তবে কেঁদে ফেলেন মা। কাঁদতে কাঁদতে বলেন, তোমাকে আমার খুব মনে পড়ে। এসময় মা তার মেয়েকে ছুঁয়ে আদর করেন।
মা-মেয়ে এমন ভার্চুয়াল মিলনের সময় হৃদয়বিদারক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। উপস্থিত অন্যান্য প্রযুক্তিবিদরাও কাঁদতে থাকেন।
এদিকে এ ঘটনাকে মানুষের আবেগ আর বিশ্বাস নিয়ে প্রতারণা হিসেবে দেখছেন সমালোচকরা। সামাজিকমাধ্যমে ভিডিওটি প্রকাশের পর দক্ষিণ কোরিয়ার বহু মানুষ এ ধরণের রিয়েলিটির বিরোধিতা করছেন।