করোনা পরিস্থিতিতে চলমান সাধারণ ছুটি আরও বাড়তে পারে-এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মঙ্গলবার (৩১ মার্চ) সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এ ভিডিও কনফারেন্স শুরু হয়। ৬৪ জেলার কর্মকর্তারা এ ভিডিও কনফারেন্সে সংযুক্ত হন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, পরিস্থিতি বুঝে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ঘোষিত সাধারণ ছুটি আরও বাড়ানো হতে পারে। এ বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছে সরকার।
তিনি বলেন, লোকজন গ্রামে চলে গেছেন, সেখানে আবার এ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা না দেয় সে সময়টা হিসেব করে ৯ তারিখ পর্যন্ত ছুটি বাড়ানো হতে পারে।
এ সময় এ বছর সারাদেশে বাংলা নববর্ষের অনুষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে জনসমাগম আরও বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে। আমাদের বাংলা নববর্ষের উৎসবে এ বছর জনসমাগম হয় তেমন কিছু করা উচিত হবে না। তবে ডিজিটাল ব্যবস্থায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা যেতে পারে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, করোনার উপসর্গ দেখা দিলে তা লুকানো যাবে না। উপসর্গ দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে টেস্ট করাতে হবে। লুকাতে গিয়ে নিজের সর্বনাশ করবেন না, পরিবারের সর্বনাশ করবেন না। করোনা প্রতিরোধে দেওয়া নির্দেশনাগুলো যথাযথভাবে মেনে চলবেন।
তিনি আরও বলেন, জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন, সরকারি ও বেসরকারি সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। প্রান্তিক ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের কাছে আমাদের খাদ্য ও চিকিৎসাসহ সব ধরনের সাহায্য পৌঁছে দিতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে, তারা যেন অভুক্ত থেকে না যায়।
বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের পর আসন্ন বিশ্বমন্দা কাটিয়ে উঠতে দেশবাসীকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা পরবর্তী বিশ্বমন্দা মোকাবেলায় আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে। কারো আবাদি জমি ও জলাশয় যেন পড়ে না থাকে। যার যেখানে যতটুকু জমি আছে সেখানে যে যা পারেন চাষ করুন।
বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেশ ও দেশের বাইরে থেকে অনেকে গুজব ছড়ানোর চেষ্টা করছেন বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি। আর দেশবাসীর কাছে তিনি অনুরোধ করে বলেন, আপনারা গুজব ছড়াবেন না, গুজবে কান দিবেন না, বিচলিত হবেন না।
পাশাপাশি এই পরিস্থিতিতে দ্রব্যমূল্য যেন নিয়ন্ত্রণে থাকে সেদিকে নজর রাখতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রত্যেকে যেন সরকারের সহযোগিতা পায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের যথাযথভাবে সরকারের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে হবে। সেটি করতে গিয়ে যেন এতটুকু দুর্নীতি না হয়। দুর্নীতি অনিয়ম হলে ছাড় দেওয়া হবে না। কারণ মানুষের দুঃসময়ের সুযোগ নিয়ে কেউ অর্থশালী সম্পদশালী হবেন সেটি বরদাস্ত করা হবে না। তিনি বলেন, ভুক্তভোগী কারো কোনো অভিযোগ যদি পাই তাহলে আমি কিন্তু ছাড়বো না। অভিযুক্ত যেই হোন না কেন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ এবং গবেষণা ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী দেশে এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৯ জনে। এর মধ্যে পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে আর ১৯ জন সুস্থ হয়েছেন। চিকিৎসাধীন আছেন ২৫ জন।