পেঁপে যেমন উপকারী তেমনি এর বীজও নানা গুণে পরিপূর্ণ। আমাদের দেহের নানা রকম রোগ থেকে মুক্তি পেতে পেঁপের বীজ দারুণ সহায়তা করে। আর মধু প্রাচীনকাল থেকেই মহৌষধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। মধুতে আছে প্রচুর পরিমাণে মিনারেল, ভিটামিন ও এনজাইম যা শরীরকে বিভিন্ন অসুখ-বিসুখ থেকে রক্ষা করে।
একাধিক এনজাইম এবং নানান ওষুধি গুণে ঠাসা এই দুটি প্রাকৃতিক উপাদনকে একসঙ্গে মিশিয়ে খাওয়ার রয়েছে বিস্ময়কর উপকারিতা। এটি শরীরের ভেতরের ক্ষমতা এতটা বাড়িয়ে দেয় যে, দেহের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ রোগ মুক্তির পথে আরো কয়েক ধাপ এগিয়ে যায়। ফলে সার্বিকভাবে শরীর এতটাই চাঙ্গা হয়ে ওঠে যে আয়ু বৃদ্ধি পায় চোখে পরার মতো।
তাই প্রতিদিন ২ চামচ পেঁপের বীজের সঙ্গে এক চামচ খাঁটি মধু মিশিয়ে খান। এবার চলুন জেনে নেয়া যাক পেঁপের বীজ ও মধু একসঙ্গে খেলে যে বিশেষ রোগগুলো থেকে মুক্তি মিলবে সে সম্পর্কে-
- পেঁপের বীজ এবং মধুতে উপস্থিত বেশ কিছু এনজাইম স্পার্ম কাউন্টের উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। ফলে এই দুটি প্রাকৃতিক উপাদান একসঙ্গে খাওয়া শুরু করলেই মিলবে আশ্চর্য উপকার।
- অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবনের কারণে লিভার সিরোসিসের মতো রোগে ভুগেন অনেকেই। প্রতিকার পেতে নিয়মিত পেঁপের বীজ খান। কারণ বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত এই প্রকৃতিক উপাদনটি খাওয়া শুরু করলে এমন রোগের প্রকোপ কমে। সেই সঙ্গে শরীরে জমতে থাকা টক্সিক উপাদানেরাও বেরিয়ে যেতে শুরু করে।
ফলে লিভার তো চাঙ্গা হয়ে ওঠেই, সেই সঙ্গে আরো নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়। এক্ষেত্রে প্রথমে অল্প করে শুকনো পেঁপের বীজ নিয়ে গুঁড়া করে নিতে হবে। তারপর সেই পাউডার থেকে এক চামচ নিয়ে লেবুর রসের সঙ্গে মিশিয়ে খেতে হবে। এমনটা নিয়মিত করতে পারলেই উপকার মিলবে।
- পেটের ভেতরে থাকা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ারা ধ্বংস করে এটি। স্টমাকে এসব ক্ষতিকর উপাদানের মাত্রা যত বৃদ্ধি পাবে, তত হজমের সমস্যা বাড়বে। আর এ ধরনের রোগের হাত থাকে বাঁচাতে এই ঘরোয়া ওষুধটির কোনো বিকল্প নেই। কারণ এতে উপস্থিত নানা উপকারী উপাদান ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ারা ধ্বংস করে, ফলে হজমের সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশে হ্রাস পায়।
- যারা ওজন কমাতে চাইছেন, তাদের জন্য এটি বেশ উপকারী। কারণ পেঁপে ও মধুতে রয়েছে বেশ কিছু লিপিডস এবং পটাশিয়াম, যা মেটাবলিজম বাড়িয়ে চর্বি হ্রাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। নিশ্চয়ই জানেন আমাদের হজম ক্ষমতা যত ভালো হবে, তত শরীরে চর্বি জমবে কম। তাইতো এই মিশ্রণে ওজন কমবে চোখে পড়ার মতো।
- এই ওষুধটিতে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে অনেক শক্তিশালী করে দেয়। ফলে কোনো ভাইরাস দেহে আক্রমণ করতে পারে না।
- পিরিয়ডের সময় প্রতিদিন পেঁপের বীজের সঙ্গে পরিমাণ মতো মধু মিশিয়ে খাওয়া শুরু করলে দেহের ভেতরে ইনফ্লেমেশন বা প্রদাহের মাত্রা কমে। ফলে কষ্ট এবং অস্বস্তি কমতে সময় লাগে না।
- নিয়মিত পেঁপের বীজ এবং মধু খাওয়া শুরু করলে ত্বকের ভেতরে জমে থাকা টক্সিক উপাদান বেরিয়ে যেতে শুরু করে। ফলে বলিরেখা কমে, সেই সঙ্গে কমে ত্বকের বয়সও। ফলে ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায় চোখে পরার মতো। তাছাড়া প্রতিদিন মধু এবং পেঁপে বীজ দিয়ে বানানো পেস্ট মুখে লাগালেও সমান উপকার মিলবে।
- এই ওষুধটিতে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় প্রোটিন, যা পেশীর গঠনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। যদি পেশীবহুল শরীর পেতে চান, তাহলে আজ থেকেই খাওয়া শুরু করুন এই ঘরোয়া ওষুধটি।
- কোনো কোনো সময় ক্লান্তি আমাদের এতটাই দুর্বল করে দেয় যে, এই আধুনিক যুগে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। আপনিও যদি একই সমস্যায় শিকার হয়ে থাকেন তাহলে পেঁপে এবং মধু মিশ্রিত এই ওষুধটি খাওয়া শুরু করুন। কারণ এতে রয়েছে গ্লকোসিনোলেট নামে একটি উপাদান, যা দেহের কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। ফলে ক্লান্তি ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না।