সম্প্রতি দেশের পূর্বাঞ্চলে বন্যায় আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ১৪ হাজার ৪২১ কোটি টাকা। দেশের ১১ জেলার বন্যাদুর্গত এলাকায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কৃষিখাত। এ খাতে ক্ষতি ৫ হাজার ১৬৯ কোটি টাকা। এছাড়া অবকাঠামো খাতে ক্ষতি হয়েছে ৪ হাজার ৬৫৩ কোটি টাকার।
আজ (রোববার) রাজধানীর সিপিডি কার্যালয়ে ‘পূর্বাঞ্চলে সাম্প্রতিক বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি ও পুনর্বাসন প্রক্রিয়া: সিপিডির বিশ্লেষণ’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।
সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ফেনী, খাগড়াছড়ি, কক্সবাজার, কুমিল্লা, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, লক্ষ্মীপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে এ তথ্য জানিয়েছে সিপিডি।
সংবাদ সম্মেলনে সিপিডি’র নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, “দেশের পূর্বাঞ্চলে বন্যায় ক্ষতির পরিমাণ ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের এক দশমিক ৮১ শতাংশ। অন্যদিকে এটি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের খসড়া জিডিপির শূন্য দশমিক ২৯ শতাংশ ও ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য অনুমিত জিডিপির শূন্য দশমিক ২৬ শতাংশ।”
বন্যা ক্ষতিগ্রস্তের বিষয়ে তিনি বলেন, “সবচেয়ে বেশি আর্থিক ক্ষতি হয়েছে নোয়াখালীতে ২৯ দশমিক শূন্য সাত শতাংশ, কুমিল্লায় ২৩ দশমিক ৫১ শতাংশ, ফেনীতে ১৮ দশমিক ৬১ শতাংশ ও চট্টগ্রামে ১১ দশমিক ৬৩ শতাংশ।”
“কৃষি ও বন সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই দুই খাতে ক্ষতির পরিমাণ পাঁচ হাজার ১৬৯ কোটি ৭১ লাখ টাকা। এটি মোট ক্ষতির ৩৫ দশমিক ৮৫ শতাংশ”, যোগ করেন তিনি।
এর আগে জাতিসংঘের মানবিকবিষয়ক সমন্বয় অফিস (ওসিএইচএ) জানিয়েছে- দেশে গত চার মাসে (মে থেকে আগস্ট পর্যন্ত) প্রাকৃতিক দুর্যোগে ১ কোটি ৮৩ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব দুর্যোগের মধ্যে ছিল ঘূর্ণিঝড় ও বন্যা। সবচেয়ে বেশি ৫৯ লাখ মানুষ আক্রান্ত হয়েছে সাম্প্রতিক বন্যায়।
জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক জরুরি শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) জানায়, বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যায় অন্তত ৫৬ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ২০ লাখের বেশি শিশু স্বাস্থ্যগত ও মানসিক নানা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। বন্যায় এখন পর্যন্ত ৫২ জনের বেশি মানুষের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। পাঁচ লাখের বেশি মানুষ মাথা গোঁজার আশ্রয় হারিয়েছে। বন্যায় তলিয়ে গেছে বাড়িঘর, রাস্তা, মাঠ-ঘাট ও ফসলি ক্ষেত।
ডিবিএন/ডিআর/তাসফিয়া করিম