বিশ্বকপের গ্রুপ পর্ব থেকেই দক্ষিণ আফ্রিকার বিদায় নিশ্চিত করে দিলো পাকিস্তান। সঙ্গে নিজেদের সেমির আশা বাঁচিয়ে রাখলো। লর্ডসে ৪৯ রানে জয় পেয়েছে সরফরাজ আহমেদের দল।
বড় টার্গেটে খেলতে নামা দক্ষিণ আফ্রিকাকে শুরুতেই চেপে ধরেন মোহাম্মদ আমির। দ্বিতীয় ওভারে বল করতে এসেই তুলে নেন হাশিম আমলাকে। আমিরের এলবিডব্লিউ’র আবেদনে ফিল্ড আম্পায়ার সাড়া না দিলেও রিভিউ নিয়ে ২ রান করা আমলার বিদায় নিশ্চিত করে পাকিস্তান। অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসিকে সঙ্গে নিয়ে চাপে পড়া দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন কুইন্টন ডি কক। তাদের ৮৭ রানের জুটি ভাঙেন শাদাব খান।
দারুণ খেলছিলেন অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসি। ৬৩ রানে তাকে তুলে নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকাকে খাদের কিনারে ঠেলে দেন মোহাম্মদ আমির। এর পরপরই মাত্র ৭ রান করা এইডিন মারক্রামকে শাদাব খান বোল্ড করলে আরো কুকড়ে যায় প্রোটিয়ারা।
এরপর দলকে আশা দেখায় ভ্যান ডার ডুসেন-ডেভিড মিলারের পঞ্চম উইকেট জুটি। রানের চাকায় গতি আনার চেষ্টা করছিলেন তারা। বোলারা চেপে ধরার চেষ্টা করলেও এক অর্থে তাদের সহযোগিতায়ই করছিলেন ফিল্ডাররা। বাজে ফিল্ডিং আর ক্যাচ মহড়ায় এদিন নেমেছিলো পাকিস্তান। প্রথম ওভারেই ফিরতে পারতেন ডি কক। কিন্তু হাফিজের বলে মিড অনে ক্যাচটি নিতে ব্যর্থ হন ওয়াহাব রিয়াজ। ৩৭তম ওভারের চতুর্থ বলে ডুসেনের ক্যাচ ছেড়ে দেন উইকেট কিপার শরফরাজ। পরের বলেই মিলারের সহজ ক্যাচ ছাড়েন মোহাম্মদ আমির। ম্যাচে সেটি ছিল আমিরের তৃতীয় ক্যাচ মিসের ঘটনা।
এত কিছুর পরেও ৩৬ রানে ডুসেন ফেরার পর নতুন করে চাপে পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। তখনও ব্যাট করিছিলেন ডেভিড মিলার। ৩১ রানে তিনি শাহীন আফ্রিদির বলে বোল্ড হয়ে গেলে টিম টিম করে জ্বলতে থাকা আশার প্রদীপও নিছে যায় দক্ষিণ আফ্রিকার।
এর আগে লর্ডসে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে ৩০৯ রানের বড় লক্ষ্য দাঁড় করায় পাকিস্তান।
শুরুটা ভালোই করেন দুই ওপেনার। দলীয় ৮১ রানের সময় এ জুটি ভাঙেন ইমরান তাহির। ৪৪ রানে হাশিম আমলার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ফখর জামান। এরপর বাবর আজমের সঙ্গে জুটি গড়েন ইমাম-উল হক। তবে এই জুটি বেশিদূর যেতে পারেনি। ৪৪ রানে বাবর আজমও শিকার হন ইমরান তাহিরের।
হাফিজকে নিয়ে চাপ সামলে এগিয়ে যাচ্ছিলেন বাবর। তবে ২০ রানে হাফিজকে ফিরিয়ে জুটি বড় হতে দেননি এইডিন মারক্রাম। এরপর হারিস সোহেলকে নিয়ে ৮১ রানের জুটি গড়ে দলকে শক্ত অবস্থানে নিয়ে যান বাবর। ৮০ বলে ৬৯ রানের হিসেবি ইনিংস খেলে বাবর ফিরে গেলেও রানের চাকা শ্লথ হতে দেননি হারিস সোহেল।
স্লগ ওভারে ইমাদ ওয়াসিমকে নিয়ে ঝড় তোলেন হারানো ফর্ম খুঁজতে থাকা হারিস। ইমাদ ওয়াসিম, ওয়াহাব রিয়াজরা বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি। ইনিংসের ২ বল বাকি থাকতে লুঙ্গির বলে ক্যাচ তুলে দেন ৫৯ বলে ৮৯ রানের কার্যকরী ইনিংস খেলা হারিস সোহেল। আর পাকিস্তান পায় ৩০৮ রানের পুঁজি।
স্কোর:
পাকিস্তান ৩০৮/৭ (৫০)
ইমাম উল-হক ৪৪ (৫৭)
ফখর জামান ৪৪ (৫০)
বাবর আজম ৬৯ (৮০)
মোহাম্মদ হাফিজ ২০ (৩৩)
হারিস সোহেল ৮৯ (৫৯)
ইমাদ ওয়াসিম ২৩ (১৫)
ওয়াহাব রিয়াজ ৪ (৪)
শরফরাজ আহমেদ ২* (২)
শাদাব খান ১* (১)
বোলার
কেগিসো রাবাদা ১০-০-৬৫-০
লুঙ্গি এনগিদি ৯-০-৬৪-৩
ক্রিস মরিস ৯-০-৬১-০
আন্দিলে ফেলুকাওয়ায়ু ৮-০-৪৯-১
ইমরান তাহির ১০-০-৪১-২
এইডিন মারক্রাম ৪-০-২২-১
দক্ষিণ আফ্রিকা ২৫৯/৯ (৫০)
হাশিম আমলা ২ (৩)
কুইন্টন ডি কক ৪৭ (৬০)
ফাফ ডু প্লেসি ৬৩ (৭৯)
এইডিন মারক্রাম ৭ (১৬)
রাসি ফন ডার ডুসেন ৩৬ (৪৭)
ডেভিড মিলার ৩১ (৩৭)
আন্দিলে ফেলুকাওয়ায়ু ৪৬* (৩২)
ক্রিস মরিস ১৬ (১০)
কেগিসো রাবাদা ৩ (৭)
লুঙ্গি এনগিদি ১ (৬)
ইমরান তাহির ১* (৩)
বোলার
মোহাম্মদ হাফিজ ২-০- ১১-০
মোহাম্মদ আমির ১০-১-৪৯-২
শাহীন আফ্রিদি ৮-০-৫৪-১
ইমাদ ওয়াসিম ১০-০-৪৮-০
ওয়াহাব রিয়াজ ১০-০-৪৬-৩
শাদাব খান ১০-১-৫০-৩
পাকিস্তান ৪৯ রানে জয়ী।