ডিবিএন ডেস্কঃ সম্প্রতি আলোচিত নায়িকা পরীমনি এবং চলচ্চিত্র প্রযোজক ও অভিনেতা নজরুল ইসলাম রাজের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে। তাদের বিরুদ্ধে মাদকসহ অন্যান্য অভিযোগে একাধিক মামলা দায়ের করা হবে।
র্যাব জানায়, বুধবার (৪ আগস্ট) বিকেলে সুনির্দিষ্ট কিছু অভিযোগের ভিত্তিতে পরীমনির বাসায় অভিযান চালানো হয়। অভিযানে বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদসহ অন্যান্য মাদক উদ্ধার করা হয়। এরপর প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজের বাসা থেকেও মাদক ও সিসার সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। তারপর তাদের র্যাব সদর দপ্তরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে আসা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গেছে, তিনি ২০১৪ সালে সিনেমা জগতে আসেন। এপর্যন্ত ৩০টি সিনেমা ও ৫/৭ টি টিভিসিতে অভিনয় করেছেন। তাকে পিরোজপুর থেকে ঢাকায় সিনেমা জগতে আনে গ্রেফতার হওয়া নজরুল ইসলাম রাজ।
জিজ্ঞাসাবাদে পরীমণি জানান, ২০১৬ থেকে তিনি নিয়মিত অ্যালকোহল সেবন করেন। মাত্রাতিরিক্ত চাহিদা মেটাতে তিনি বাসায় একটি মিনিবার করেছেন। মিনিবার থাকায় তার বাসায় পার্টির আয়োজন করা হতো। সেই পার্টিতে বিভিন্ন প্রকার মাদক সরবরাহ করতেন রাজ।
খন্দকার আল মঈন বলেন, গ্রেফতার হওয়া মো. নজরুল ইসলাম রাজসহ আরও অনেকে তার বাসায় অ্যালকোহলসহ বিভিন্ন প্রকার মাদকের সরবরাহ করত এবং পার্টিতে অংশ নিত বলে গ্রেফতাররা জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন।
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের বিরুদ্ধে র্যাব বাদী হয়ে বনানী থানায় মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি নিয়েছে। এরপর সেসব মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হবে।
প্রসঙ্গত, বিশৃঙ্খল জীবন, ব্ল্যাকমেইলিং, মাদক ব্যবসা ও পর্নোগ্রাফি- সব মিলিয়ে পরীমনির বিরুদ্ধে অভিযোগ অনেক। চলচ্চিত্র জগতের আড়ালে পরী নাম লেখান নিষিদ্ধ পর্নো ব্যবসায়। অঢেল টাকার নেশা তাকে টেনে নামায় অন্ধকার জগতে। অবশ্য তিনি একা নন। পরীমনি ছাড়াও বেশ কয়েকজন মডেল-অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সূত্র বলছে, সিনেমা শুটিংয়ের আড়ালে পরী মূলত প্রভাবশালীদের ঘনিষ্ঠ হতেই বেশি পছন্দ করতেন। রাজধানীর পাঁচতারকা হোটেলে তাকে লাস্যময়ী ভঙ্গিতে দেখা যায়। প্রায় প্রতিদিনই গভীর রাত পর্যন্ত পার্টি শেষে মদ্যপ অবস্থায় বের হতেন তিনি।
এছাড়া বোট ক্লাবে পরীমনির মদপান করার ভিডিও প্রকাশ এবং গুলশানের অলকমিউনিটি ক্লাবে গিয়ে মদ না পেয়ে ভাঙচুর ও কর্মচারীদের গায়ে হাত তোলার অভিযোগও আছে তার বিরুদ্ধে। আর পরী ধূমপানে অভ্যস্ত (চেইন স্মোকার)। তার ফ্ল্যাটে বিদেশি সিগারেট ও মদের বিশাল সংগ্রহ রয়েছে। বলা যায় ছোটখাটো বার। তার ফ্ল্যাট থেকে রাশিয়ান ভদকা, জিন, টাকিলা, হুইস্কি ও বহু মূল্যবান রেড ওয়াইন উদ্ধার করা হয়েছে।
এদিকে আজ বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) বিকেলে পরীমনি ও রাজসহ চারজনকে গ্রেফতারের পর র্যাব সদরদফতরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, নায়িকা পরীমনি ২০১৬ সাল থেকে মাদক সেবন করতেন। এমনকি ভয়ঙ্কর মাদক এলএসডি ও আইসও সেবন করতেন নায়িকা পরীমনি। তার বাসায় একটি মিনি বারও রয়েছে। তিনি বাসায় নিয়মিত মদের পার্টি করতেন। আর চলচ্চিত্র প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজ পরীমনির বাসায় এসব মাদক সাপ্লাই (সরবরাহ) করতেন।