প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ও বিস্তার প্রতিরোধের লক্ষ্যে আসন্ন পবিত্র ঈদ উল ফিতরের নামাজের জামায়াত ঈদগাহ বা উম্মুক্ত স্থানের পরিবর্তে মসজিদে আদায় করার জন্য সরকারিভাবে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
চট্টগ্রাম মহানগরীতে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার দিন দিন আশংকাজনক ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। জনসমাগমের মাধ্যমে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ও বিস্তার বৃদ্ধি পায় বিধায় সরকারি সিদ্ধান্তের আলোকে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে চট্টগ্রাম মহানগরীতে ঈদগাহ বা উম্মুক্ত স্থানের পরিবর্তে আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজের জামায়াত মসজিদে আদায় সংক্রান্তে নিম্নোক্ত নির্দেশনা সমূহ মেনে চলার জন্য নগরীর সম্মানিত মুসল্লীগণের প্রতি বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়।
১. মুসল্লীদের জীবনের ঝুঁকি বিবেচনা করে এবছর ঈদের নামাজের জামায়াত ঈদগাহ বা খােলা জায়গার পরিবর্তে নিকটস্থ মসজিদে আদায় করার জন্য অনুরােধ করা হলাে । প্রয়ােজনে একই মসজিদে একাধিক জামায়াতের আয়োজন করা যাবে।
২.ঈদের নামাজের জামায়াতের সময় মসজিদে কার্পেট বিছানাে যাবে না । নামাজের পূর্বে সম্পূর্ণ মসজিদ জীবানুনাশক দ্বারা পরিস্কার করতে হবে । মুসল্লীগন প্রত্যেকে নিজ নিজ দায়িত্বে জীবানুমুক্ত করে জায়নামাজ নিয়ে আসবেন ।
৩. করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রােধ নিশ্চিতকল্পে মসজিদে ওযুর স্থানে সাবান / হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতে হবে ।
৪.মসজিদের প্রবেশদ্বারে হ্যান্ড স্যানিটাইজার / হাত ধােয়ার ব্যবস্থাসহ সাবান – পানি রাখতে হবে।
৫. প্রত্যেককে নিজ নিজ বাসা থেকে ওযু করে মসজিদে আসতে হবে এবং ওজু করার সময় কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে।
৬. ঈদের নামাজের জামায়াতে আগত মুসল্লীকে অবশ্যই মাস্ক এবং নিজস্ব টুপি পরে মসজিদে আসতে হবে । মসজিদে সংরক্ষিত জায়নামাজ ও টুপি ব্যবহার করা যাবে না ।
৭. ঈদের নামাজ আদায়ের সময় কাঁতারে দাঁড়ানাের ক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্য বিধি অনুসরণ করে দাঁড়াতে হবে ।
৮. এক কাঁতার অন্তর অন্তর কাঁতার করতে হবে ।
৯. শিশু , বায়ােবৃদ্ধ বা যে কোন অসুস্থ্য ব্যক্তি এবং অসুস্থদের সেবায় নিয়ােজিত ব্যক্তি ঈদের নামাজের জামায়াতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না ।
১০. সর্বসাধারণের সুরক্ষা নিশ্চিত কল্পে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ , স্থানীয় প্রশাসন এবং আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী বাহিনীর নির্দেশনা অবশ্যই অনুসরণ করতে হবে।
১১. করােনা ভাইরাস সংক্রমণ রােধ নিশ্চিতকল্পে মসজিদে জামায়াত শেষে কোলাকুলি এবং পরষ্পর হাত মেলানাে পরিহার করার জন্য অনুরােধ করা যাচ্ছে ।
১২. করােনা ভাইরাস মহামারি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য পবিত্র ঈদ – উল – ফিতরের নামাজ শেষে দোয়া করার জন্য খতিব ও ইমামগণকে অনুরােধ করা যাচ্ছে ।
১৩. সম্মানিত খতিব , ইমাম এবং মসজিদ পরিচালনা কমিটি বিষয়গুলাে বাস্তবায়ন নিশ্চিত করবেন ।
এছাড়া সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখা সংক্রান্তে মসজিদে ঈদের নামাজের জামায়াত আদায়ের ক্ষেত্রে যাবতীয় সহযোগিতার জন্য নিকটস্থ থানার অফিসার ইনচার্জ এর সাথে যোগাযোগ করার জন্য অথবা চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের হটলাইন মোবাইল নম্বরে(০১৪০০-৪০০৪০০, ০১৮৮০-৮০৮০৮০) যোগাযোগ করার জন্য নগরবাসীকে অনুরোধ করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম মহানগরীর সম্মানিত মুসল্লিগণ! ইসলামিক শরীয়ত মোতাবেক প্রতিবছরই আমরা ঈদের নামাজের জামায়াত ঈদগাহ বা উন্মুক্ত ময়দানে পালন করে আসছি। এবার একটা কঠিন সময়ে আমরা ঈদ-উল-ফিতর পেয়েছি। তাই আমাদের সকলের স্বার্থে করোনা ভাইরাস মহামারী প্রতিরোধের লক্ষ্যে উপরে উল্লেখিত নির্দেশনাসমূহ মেনে মসজিদে পবিত্র ঈদ -উল -ফিতরের নামাজের জামায়াত আদায় করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা যাচ্ছে।
উল্লিখিত নির্দেশনা সমূহ লংঘন করলে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের দায়ে লঙ্ঘনকারীর বিরুদ্ধে সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেক যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রিয় নগরবাসী, এ আঁধার একদিন কেটে যাবেই। আমরা আবার একটি আলোকিত ভোরে ঘুরে দাঁড়াবো। পবিত্র ঈদ -উল- ফিতরের মতো সকল ধর্মীয়, সামাজিক এবংজাতীয় উৎসব আমরা পালন করবো প্রান ভরে,আনন্দ-উচ্ছাসের সাথে।সেই দিনটি সম্ভব করে তোলার জন্য আজকের এই ত্যাগ ও সচেতনতা টুকু খুবই জরুরী।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের ৭ হাজার পুলিশ সদস্য আপনাদের সাথে সর্বক্ষণ। করোনা ভাইরাসের প্রতিরোধ যুদ্ধকালে আগত পবিত্র ঈদ-উল- ফিতর উপলক্ষে সিএমপি আপনাদেরকে জানাচ্ছে আন্তরিক ঈদ শুভেচ্ছা।
আপনাদের সকলের ঈদ সুন্দর হোক, আনন্দের হোক। পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজের জামায়াতে ধর্ম-প্রাণ মুসল্লিদের প্রার্থনায় ধ্বংস হোক করোনার দৌরাত্ম্য, আবার জেগে উঠুক সৃষ্টির সেরা জীব- মানবজাতির অবারিত প্রাণ ধারা। সেই সুন্দর ভোরের প্রত্যাশায় সবাইকে ঈদ মোবারক।।
*স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন
করোনাকে দূরে রাখুন*