নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে সন্ধান পাওয়া গ্যাস কূপে আজ থেকে খনন কাজ শুরু করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড (বাপেক্স)। সোমবার (২৯ এপ্রিল) বেলা ১১টায় আনুষ্ঠানিকভাবে বাপেক্স এ খনন কাজ শুরু করবে বলে জানা গেছে।
খনন কাজের জন্য ১২০ দিনের কর্ম পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সংস্থাটি।
এর আগে গত মার্চ মাসে জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সিরাজপুর ইউনিয়নের শাহাজাদপুর-সুন্দলপুর গ্যাসক্ষেত্রের আওতাধীন ৩ নম্বর কূপের (চর কাঁকড়া) খনন শেষে গ্যাসের সন্ধান পাওয়া যায়। ওই কূপটি থেকে গ্যাস উত্তোলনের প্রয়োজনীয় পরীক্ষা কার্যক্রম এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। শিগগিরই ওই কূপটি থেকে জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহ শুরু করা হবে। কর্মকর্তারা আশা করছেন ওই কূপ থেকেও প্রতিদিন গড়ে ১০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব হবে।
উপজেলার অম্বরনগর ইউনিয়নের ওয়াসেকপুর গ্রামে অবস্থিত কূপটির ড্রিলিং ইনচার্জ মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘গত ২২ এপ্রিল দুপুরে আনুষ্ঠানিকভাবে কূপ খননের জন্য ‘ড্রিলিং রিগ’ স্থাপন করা হয়।
সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে খনন কাজের উদ্বোধন করা হবে সকাল ১১টায়। প্রাথমিকভাবে কূপটি মাটির নিচে ৩২০০ মিটার পর্যন্ত খননের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর ৪টি জোনে প্রাকৃতিক গ্যাস মিলতে পারে বলে আশা করা যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, খনন শেষে প্রতিটি জোনে প্রতিদিন ১০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা যাবে। যা বাখরাবাদ এর মাধ্যমে জাতীয় গ্রিডে সংযুক্ত করা হবে।
খনন প্রকল্পটির নাম দেওয়া হয়েছে বেগমগঞ্জ-৪ (ওয়েস্ট) মূল্যায়ন কাম উন্নয়ন কূপ খনন প্রকল্প। আগামী ১২০ দিন চলবে খনন কাজ।
দুই শতাধিক প্রকৌশলী ও শ্রমিক এ কর্মযজ্ঞে অংশগ্রহণ করছেন জানিয়ে মো. আসাদুজ্জামান আরও বলেন, ‘দেশের অর্থনীতি ও শিল্পায়নকে আরও গতিশীল করতে আমাদের বাড়তি গ্যাস প্রয়োজন- এ প্রতিপাদ্যে মানুষের চাহিদা পূরণে দেশীয় জ্বালানি অনুসন্ধান ও উৎপাদনকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে সরকার।
২০২৫ সালের মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে ৪৬টি নতুন অনুসন্ধান, উন্নয়ন ও ওয়ার্কওভার কূপ খনন করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।’
প্রসঙ্গত, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে ১৯৭৬ সালে প্রথম গ্যাসের সন্ধানে প্রথম কূপ খনন করা হয়। এরপর ১৯৭৮ সালে দ্বিতীয় আরেকটি কূপ খনন করা হয়। দুটি কূপের কোনোটিতে কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ গ্যাস পাওয়া যায়নি। পরে ২০১৩ সালে তৃতীয় আরেকটি কূপের খনন শেষে সেখানে কাঙ্ক্ষিত গ্যাস পাওয়া যায়। পরে ওই কূপ থেকে গ্যাস উত্তোলন শুরু করা হয়। ওই কূপ থেকে বর্তমানে প্রতিদিন ৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হচ্ছে।
ডিবিএন/ডিআর/তাসফিয়া করিম