মো.কামরুজ্জামান, নেত্রকোণা প্রতিনিধি: নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসার অবহেলায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রসূতি লিমা চৌধুরীর(২৩) মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় জন্মের পরই মা হারা হলো নিস্পাপ শিশুটি। অভিযোগ হাসপাতালে কর্তব্যরত নার্স ও আয়া প্রসূতির স্বজনদের কাছে টাকা দাবী ও অসদাচরণ করেন। লিমা জেলার মোহনগঞ্জের গাগলাজোর ইউনিয়নের বরান্ত্র গ্রামের জিয়াউদ্দিন চৌধুরীর মেয়ে ও যশোরের গাভিনা গ্রামের আল ফরিদের স্ত্রী। এ ঘটনায় প্রসূতির স্বজনদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
অভিযোগে জানা গেছে, জেলার মোহনগঞ্জের গাগলাজোড় ইউনিয়নের বরান্তর গ্রামের জিয়া উদ্দিন চৌধুরীর মেয়ে লিমা চৌধুরীর প্রসব বেদনা শুরু হলে সোমবার নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালের প্রসূতি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। মঙ্গলবার সকালে হাসপাতালের গাইনী কনসালটেন্ট ডা. জান্নাত আফরোজ নূপুর সুষ্ঠুভাবে অপারেশন করেন। প্রসূতি লিমা ছেলে সন্তানের জন্ম দেন। বিকেল তিনটার দিকে তিনি অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। তার রক্তক্ষরণ শুরু হয়। হাসপাতালে কর্তব্যরত নার্স ও আয়াদের বিষয়টি জানালে তারা প্রসূতির বাবার কাছে টাকা দাবি করে। টাকা দিতে বিলম্ব হওয়ায় নার্সরা সেবা দিতে টালবাহানা শুরু করে। একাধিকবার বলার পর প্রসূতির বাবা জিয়া উদ্দিন চৌধুরীকে গালাগাল করে। এক পর্যায়ে হাসপাতাল থেকে বের করে দিতে উদ্যত হয়। এ ঘটনায় প্রসূতির স্বজনদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
পরে রোগীর অবস্থার অবনতি হলে ওয়ার্ডের কর্তব্যরত নার্স হাসপতালে জরুরী বিভাগে কর্তব্যরত মেডিক্যাল অফিসার ডা. কল্যানী রানী ঘোষকে জানানো হয়। তিনি ওয়ার্ডে যাওয়ার আগেই প্রসূতি লিমা চৌধরীর মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে নেত্রকোনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এসএম আশরাফুল আলম ও নেত্রকোনা মডেল থানার ওসি মো. তাজুল ইসলাম রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
নেত্রকোনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ও গাইনী সার্জন ডা. রঞ্জন কুমার কর্মকার বলেন, সিভিল সার্জন ও আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার জেলার বাইরে থাকায় খবর পেয়ে বিষয়টি দেখার জন্য আসি। হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসা ব্যবস্থায় কারও অবহেলা থাকলে তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নেত্রকোনা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. তাজুল ইসলাম জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। থানায় এ ব্যাপারে কেউ কোন অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
মো.কামরুজ্জামান
নেত্রকোনা প্রতিনিধি