মোঃ কামরুজ্জামান, নেত্রকোণা প্রতিনিধিঃ নেত্রকোণা জেলার পূর্বধলা উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের বহুলী গ্রামে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের লোকজন একটি নিরীহ এমদাদুলের বাড়িতে হামলা,ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।
এ সময় এমদাদুল ও তার পরিবারের লোকজন বাঁধা দিতে গেলে এমদাদুল (৩৬), মমতা বেগম (৫৫), মিলন মিয়া (৪০), লিটন মিয়া (৪৮) ও মানিক মিয়া (৩৫) নামের ৫ জন আহত হয়।
এদের মধ্যে ৩ জন গুরুতর আহত হয়। গুরুতর আহত এমদাদুল, মিলন মিয়া ও মমতা বেগমকে পূর্বধলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। মিলন ও মমতা বেগম পূর্বধলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছেন। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক, এমদাদুলের অবস্থার অবনতি হলে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন ঐখানে চিকিৎসা করে পূর্বধলা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। বর্তমানে এমদাদুল হক পূর্বধলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন ।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, হামলা ও ভাংচুরের ঘটনাটি ঘটেছে গত শুক্রবার (০৮ অক্টোবর) দিবাগত রাত দেড়টা ও শনিবার (০৯ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের বহুলী গ্রামে। এ ঘটনায় পুলিশ শুক্রবার রাতেই গণি মিয়া (৪৫) ও মঞ্জুরুল হক (৩৫) নামের দু’পক্ষের দুইজনকে আটক করেছে। তবে এমদাদুল হকের ২ টি পা ভেঙ্গে দিয়েছে।
এলাকাবাসী সূত্রে আরো জানা যায়, বহুলী গ্রামের আমিরুল হকের ছেলে গণি মিয়া ও গণি মিয়ার ভগ্নিপতি একই গ্রামের জামাল মিয়ার সাথে তাদের পাশের বাড়ির ইয়াকুব আলীর ছেলে ছালাম গংদের সাথে দীর্ঘদিন যাবত জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছিল।
এ নিয়ে শুক্রবার বিকালে দুই পক্ষের কথা কাটাকাটি হয়। তাৎক্ষণিক স্থানীয়রা তা মিমাংসা করে দেয় ।
পরে রাত দেড়টার দিকে ছালাম গংদের ওয়ারেছ খাঁ, মিরাজ খাঁ, সুজন খাঁ ও ছালামসহ ৪০/৫০জন ধারালো অস্ত্র ও লাটি-শোটা নিয়ে গণি মিয়া, মানিক মিয়া, জামাল খাঁ, এমদাদুল, লিটন মিয়া ও মিলন মিয়ার টিন সেটের ৭টি বসত ঘরে হামলা চালিয়ে ঘর, ঘরের আসবাব ও তৈজসপত্র ভাংচুর করে নগদ আড়াই লক্ষ টাকাসহ স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায়।
এ সময় বাঁধা দিতে গেলে এমদাদুল, মমতা বেগম, মিলন মিয়া, লিটন মিয়া ও মানিক মিয়াকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর আহত করে।
এ ঘটনায় আহত মানিক মিয়া জানান, শনিবার সকালে তারা থানায় মামলা করতে গেলে এমন খবরে প্রতিপক্ষের লোকজন উত্তেজিত হয়ে আবারও তাদের বাড়ি-ঘরে হামলা করে। বর্তমানে তারা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এবং তাদেরকে মেরে ফেলার হুমকিও দিচ্ছে।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত ছালাম গংদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি।
এ ঘটনায় পূর্বধলা থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ শিবিরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, খবর পেয়ে শুক্রবার রাতেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে দুই পক্ষের দুইজনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। শনিবার বিকালে আবারও পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ দিকে আটককৃত দুইজনকে ১৫১ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কোর্ট এ প্রেরণ করা হয়েছে। গতকাল দুপুরে সুজন মিয়া নামের আরও ১ জনকে আটক করা হয়েছে।