নেত্রকোণা প্রতিনিধিঃ নেত্রকোণার বারহাট্টা উপজেলায় এক গৃহবধূকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। গত শুক্রবার (২৭ মে) দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের সেইমা গ্রামে এই নির্যাতনের ঘটনাটি ঘটে। নির্যাতনের ব্যাপারে তাৎক্ষণিক ওই ওয়ার্ডের নব নির্বাচিত ইউপি সদস্য নজরুল ইসলামকে অবগত করলেও তিনি বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন।
পরে রাতে ভুক্তভোগীর ননদের ছেলে জামরুল ৯৯৯ এ ফোন দিলে বারহাট্টা থানা পুলিশ ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে বারহাট্টা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
ভুক্তভোগী গৃহবধূর নাম রুবি বেগম (৪০)। তিনি সিলেট জেলার বালাগঞ্জ থানার কাচপুর গ্রামের মৃত হান্দু মিয়ার মেয়ে। অভিযুক্ত ফৌজদার মিয়া(৬৫) বারহাট্টা উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের সেইমা এলাকার বাসিন্দা।
হাসপাতালে ভর্তি থাকা অবস্থায় গৃহবধূ রুবি বেগম জানান, আমার স্বামী আগেও একটা সংসার করছে। আগের সংসারে তার বাচ্চা কাচ্চা আছে। আগের (স্বামী)আমারে বিয়ার শুরু থেকেই মারত।তাই আমি ঢাকাত মানুষের বাসা বাড়িত কাজ কাম কইরা খাই। আমার এক ছেলে ও তিন মেয়ে স্বামীর কাছে থাকে। প্রতি মাসে আমি স্বামীরে টাহা পাডাই।গত তিন চার মাস আমি টাহা পাডাইতে পারি নাই।তখন আমার স্বামী ও তার ভাইয়ের ফোন কইরা কইছে যে ঢাকা থাহন লাগত না বাড়িত আইয়া পর।বিশ্বাস কইরা শুক্রবারে বাড়িত আইছিলাম।তখন সাথে সাথেই আমারে মারছে।আর কইছে আমি কেরে টাহা পাডাই না। কই বিয়া বইছি। আরো কত খারাপ খারাপ কথা কইছে। রাইতে গলা কাইট্টা গাঙ্গে ফালাইয়া দেওনের কথাও কইছে। আমারে যে মারতাছে হেই বিষয়টা মেম্বাররে জানাইছি। মেম্বার আগে কিছুই করছে না আমার লাইগা। পরে আমার ননদের ছেলে জামরুল অনলাইন না কিতাই কয় হেইনে ফোন দিয়া পুলিশ নিছে। আর পুলিশ আমারে উদ্ধার কইরা রাইতেই হাসপাতাল নিয়া আইছে।
নির্যাতনের বিষয় ধামাচাপা দেওয়ার কথা সম্পূর্ণ অস্বীকার করে রায়পুর ইউনিয়নের ৬নং সেইমা ওয়ার্ডের নব নির্বাচিত ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম জানান, আমি কোন কিছু ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করিনি। আমি বরং পুলিশকে ওই গৃহবধূকে হাসপাতালে ভর্তি হতে সাহায্য করেছি। আর গৃহবধূর সকল চিকিৎসার খরচও আমার টাকা দিয়েই করছি।
অভিযুক্ত ফৌজদার মিয়ার সাথে ফোনে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
বারহাট্টা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক তন্নী জানান, রুবি বেগম চিকিৎসাধীন আছেন।গত শুক্রবার রাতে উনি ভর্তি হয়েছেন।উনার হাত, পা ও বুকের এক্সরে করতে বলা হয়েছে।রিপোর্ট অনুযায়ী পরবর্তী চিকিৎসা করা হবে।
এদিকে বারহাট্টা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. লুৎফুল হক জানান, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কোনো অভিযোগ করা হয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।