সাধারন নির্বাচনের তারিখ কবে হবে জানিনা তবে, কয়েক জন এম পি’র মৃত্যুতে শুন্য হয়ে যাওয়া আসনে উপ-নির্বাচনে প্রার্থীদের দৃশ্যটি ভয় ধরিয়ে দিয়েছে। একটি পদের জন্য একই দলের প্রার্থীতা দাবী করেছে ৩৫ জন। অভিন্ন অবস্থ্যা অন্য দলেরও, মারামারী করে মাথা ফাটিয়েছে একে অন্যের। কেন এই উত্তেজনা?
কতজন জানে জানিনা, একজন ইউনিয়ন কাউন্সিলের চেয়ারমেনের ভাতা তার সেক্রেটারীর বেতনের অর্ধেক। এম পি হওয়ার জন্য নেতারা বাজেট নির্ধারন করেন ৫ কোটি টাকা। এম পি’ দেরও বেতন ভাতা সব মিলিয়ে এক লাখ টাকা। ৫ কোটি টাকা ব্যবসায় খাটালে এর চেয়ে অনেক বেশী উপার্জন করা সম্ভব। তাহলে এম পি হতে ৫ কোটি টাকা খরচ করে কেন? শুধু কি নেতা হওয়ার জন্য? বাংলাদেশের কোন এম পি এখন গরীব খুঁজে পাওয়া যাবেনা। পৃথিবীর নামী দামী ব্রান্ডের নতুন গাড়ীতে চড়ে বাংলাদেশের এম পি’রা। রিক্সাওয়ালা বৌ বাচ্চার খবর নিতে ফোন ব্যবহার করে, টেক্স দেয় সেখানেও। এম পি’রা টেক্স ধার্য করে, নীজেরা টেক্স দেয়না গড়ী কিনতেও। ৮ কোটি টাকার গাড়ীতে চড়ে সংসদে যায় এম পি’রা। প্রতিবেশী ভারতে এখনও স্বদেশী এম্বেসেডর পায় (যদি গাড়ী চায়)। দিল্লির এক লোকসভার সদস্য সাইকেলে চড়ে সংসদে যায়। কানাডা পৃথিবীর উন্নত দেশের একটি। কয়েকজন মন্ত্রীর সংগে পরিচয় সূত্রে জেনেছি তারা টেক্সিতে চড়ে সংসদে যান। বিলটি তুলে নেন সংসদ থেকে। অন্টারিও প্রদেশের একজন গুরত্বপুর্ন মন্ত্রীর সাথে দেখা হয়েছে বাসে। তিনিও একই কথা বলেছেন, বলেছেন পার্কিং নেই তাই টিকিটের ভয়ে বাসেই যাওয়া আসা করেন। বাংলাদেশের এম পি মন্ত্রীরা রাস্তার টোলও দেননা। সব সূখের চুড়া স্পর্শ করার লড়াই করেন মরিয়া হয়ে। একবার নির্বাচীত হলে আমরন পদটি ধরে রাখেন জোড় করে হলেও। আর যদি মরে যান তখন, ছেলে মেয়ে বউ নাতী নাতনীরা উত্তারাধিকারের দাবীতে এগিয়ে আসে। নেতা হবেন জনগনের জন্য, জনগনই পছন্দ করে নির্বাচীত করবে জননেতাকে। নমিনেশন পেতে লোকবল নিয়ে ঢাকায় এসে শোডাউন করতে হবে কেন?
দলের পদ পদবীও কেন্দ্রিয় নেতারাই নির্বাচন করার কথা। কর্মীদের মধ্য থেকে সবচাইতে উপযুক্ত, যোগ্য ব্যক্তিটিকে নেতা বানাবেন দলনেতা। সেই পদ পদবীর জন্য নিত্য লড়াই করতে হবে কেন? সকলেই দাবী করে ত্যগী কর্মী। ত্যগী কর্মীর পদ দরকার হবে কেন? রাজনীতির সব নিয়ম বদলে দিয়ে বাংলাদেশে এখন নিজেকে নেতা প্রমান করার প্রতিযোগিতা চলছে। যাদেরকে নেতা বানানো হয়েছে তারা এখন স্বার্থে নিমজ্জিত-জনগন হয়েছে উপেক্ষিত। এখন দলনেতাকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে কারা হবেন দলের নেতা। নাহয় দল এবং দেশ দুটোই সংকটে পড়বে।
আজিজুর রহমান প্রিন্স
টরেন্টো, কানাডা
১৭ সেপ্টম্বর ২০২০।