নির্বাচনী প্রচারনা শুরু হয়েছে জোড়েসোড়ে। পোষ্টারে ছেয়ে গেছে শহরের অলিগলি। ভীড় বেড়েছে চায়ের ষ্টলে। সবখানে এখন একটাই আলোচনা ভোট দিব কাকে! ২৭টি দল এই নির্বাচনে অংশ নিয়েছে তবুও কোথায় যেন একটা শুন্যতা অনুভব হচ্ছে। নির্বাচন মানেই প্রতিযোগিতা কিন্তু এবার কে কার বিরুদ্ধে লড়ছে বুঝতে আসুবিধা হচ্ছে। নৌকা প্রতীক নিয়ে যারা লড়ছে তারা যা বলছে একই কথা স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও দাবী করছে। সকলেই শেখ হাসিনার নামে ভোট চাইছে। যারা এতদিন সরকার বিরোধী আন্দোলন করেছে তারা প্রতিযোগিতায় নেই। নির্বাচনি প্রচারনা যেমন চলছে আবার অবরোধ হরতালের কর্মসূচীও চলছে। তবে হরতাল অবরোধ বাঁধা হচ্ছে না জনজীবনে।
এবার প্রচারনায় একটি বিষয় পরিস্কার হয়ে উঠেছে। হেভিওয়েট অনেক প্রার্থী ধরাশায়ী হতে পারে। নৌকা মানেই জয়ী হওয়া এবার অনেকের জন্যই কঠিন হবে। প্রতিবারই নির্বাচনে টাকার ছাড়াছড়ি হয় কিন্তু মাত্রাটি এবার আরও বেশী। কোন কোন আসনে টাকাই জয় পরাজয় নিশ্চিত করবে। জাতীয় পার্টি বড় বড় কথা আর হুমকি ধমকি দিয়ে অবশেষে ২৬ টি আসন নিশ্চিত করতে পেরেছে। এই বন্টক বিভ্রাটে দলের অনেক বড় নেতা ছিটকে পরেছে। যারা নিজেদের মনোনয়ন রক্ষা করতে পেরেছে তারা “আওয়ামী লীগ সমর্থীত” প্রার্থী হিসাবে প্রচারনা চালাচ্ছে। এদের মধ্যে কতজন বিজয়ী হবেন তা এখনো নিশ্চিত বলা যাবেনা। বিজয়ীর সংখ্যাটি দলের জন্য সুখকর হবে মনে হয়না।
এবার নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দী আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ (কথাটি আলোচনায় ছিল আগে থেকেই)। এই ভয়ে দলও আগে থেকে প্রার্থী বাছাই শুরু করেছিল। কয়েকটি স্তরে জরিপ চালিয়ে মনোনয়ন দিয়েছে। কিন্তু এই জরিপ প্রক্রিয়াটি প্রভাবমূক্ত ছিল না আর তাই সব আসনে সঠিক প্রার্থীকে মনোনয়ন দিতে পারেনি দল। তাই মনোনয়ন দুর্বলতা কাটাতে আওয়ামী লীগ একটি চমৎকার কৌশল করেছে। কাউকেই হতাশ না করে ডামি প্রার্থী হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। এখন জনপ্রিয়তার ভিত্তিতে যারা বিজয়ী হবে তারাই হবে দলের প্রার্থী। কোন কোন আসনে আওয়ামী লীগেরই ৬ জন ডামি প্রার্থী লড়ছে নৌকার বিরুদ্ধে। কেউ কাউকে ছাড় দিবে না। ফলে তৃনমূলের জনপ্রিয় ব্যক্তিটি নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ পাবে। আর যারা নৌকা প্রতীক পেয়েও পরাজিত হবে তাদের নেতা হওয়ার সুখটি আর থাকছেনা। এটিও গনতন্ত্র চর্চা এবং নেতা নির্বাচনের ভাল কৌশল!
✪ আরও পড়ুন: নির্বাচন-২৪
✪ আরও পড়ুন: নির্বাচন
✪ আরও পড়ুন: আবারও রাজনীতিতে শুন্যতা
✪ আরও পড়ুন: আবারও অবরোধ
প্রভাবমূক্ত নির্বাচন হলে তৃনমূলের নেতারাই বেড়িয়ে আসবে। দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকাকা দলটিতে প্রার্থীর সংখ্যা বেশী হয়েছে যৌক্তিকভাবেই৷ কিন্তু এই কৌশল তৃনমূলের যোগ্য নেতাদের ভাগ্য খুলে গেছে। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হবে তবে স্বতন্ত্র প্রার্থী (এরাও আওয়ামী লীগের)র সংখ্যাটি অন্য যে কোন নির্বাচনের রেকর্ড ছাড়াবে বলেই মনে হয়। তৃনমূল বি এন পি বা জাতীয় পার্টি এই দুই দল মিলেও বিরোধী দলের আসনটি নিশ্চিত করতে পারবে মনে হয় না। সেই ক্ষেত্রে কারা হবে সংসদে বিরোধী দল সেই প্রশ্নটি ঘুরপাক খাচ্ছে অনেকের মনে। জাসদের (ইনু) কিংবা ন্যপের রাশেদ খান মেনন অলিখিত ভাবে আওয়ামী লীগেরই ডামী প্রার্থী। দুজনেই বিজয়ী হবেন তা বলাই বাহুল্য। সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক অটুট থাকলে মন্ত্রীও হবেন হয়ত। কিন্তু ৩০ জন সদস্য নিয়ে বিরোধী দল গঠন করতে পারবেনা।
সরকারের অর্জন বহু এবং বি এন পি নির্বাচনে এলেও আওয়ামী লীগই সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠন করত। কিন্তু সংসদে শক্তিশালি বিরোধী দল হতে পারত বি এন পি। এই নির্বাচনে সঠিক সংখ্যাটি না পেলে কারা বিরোধী দল হবে তা সংবিধানে কিভাবে বর্নিত আছে (আছে নিশ্চই) সেটাই দেখার অপেক্ষা। এসব ভাবনা মাথায় থাকলেও এবারের নির্বাচনটি প্রতিযোগিতামূলক হবে বলেই মনে হয়।
ও পড়ুন: কোন পক্ষটি সমর্থন করবে!
✪ আরও পড়ুন: বি এন পি’র রাজনীতি
✪ আরও পড়ুন: বিএনপি দলের এক দফা
✪ আরও পড়ুন:গণতন্ত্র
✪ আরও পড়ুন:বিদেশী প্রেস্ক্রিপশনে শেখ হাসিনা চলেননা
✪ আরও পড়ুন: বাংলাদেশের রাজনীতিতে এখন এক চরম দু:সময় চলছে
✪ আরও পড়ুন: যুদ্ধটি সহজ হবে না!
আজ ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | হেমন্তকাল | ১৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি | সন্ধ্যা ৭:১৫ | বৃহস্পতিবার
ডিবিএন/এসই/ মোস্তাফিজুর রহমান বাপ্পি