একেএম কামাল উদ্দিন টগর, নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি: নওগাঁ সদর উপজেলার হাঁসাইগাড়ি ইউনিয়ন এর গোপাই (মোল্লা পাড়া ) গ্রামের বিধবা আসমা বেওয়ার গোয়াল ঘরে কয়েলের আগুন থেকে আগুন লেগে ২ টি গরু মারা গেছে এবং ১ টি গাভী ও ১টি ছোট বাছুর মারাত্বক দগ্ধ হয়েছে। আসমা বেওয়া একজন বিধবা নারী, স্বামী আব্দুল লতিফ মোল্লা ৬বছর আগে মারা যায়। এরপর থেকে গরু লালন-পালন করে ছোট -ছোট ৩ ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে অনেক কষ্টে জীবিকা নিবার্হ করে আসছিলেন।
জানা যায়, প্রতিদিনের মতো আসমা বেওয়া গোয়াল ঘরে অতিরিক্ত মশার জন্য সোমবার রাত ১০টার দিকে গোয়াল ঘরে কয়েল জ্বালিয়ে দেয়। এর পর মঙ্গলবার রাত আনুমানিক ২টার দিকে অতিরিক্ত আগুন ও ধোঁয়া দেখতে পেয়ে চিল্লাতে শুরু করেন আসমা বেওয়া। এর পর প্রতিবেশি ছুটে আসে এবং আগুন নিভানোর চেষ্টা করে। এসময় আবুল হোসেন নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করলে ফায়ার সার্ভিস দল রওয়ানা দেয় এর ৩০মিনিট পর আবার ফাওয়ার সার্ভিসকে আগুন নিভিয়ে গেছে এমন সংবাদ দেয়া হলে ফাওয়ার সার্ভিসের গাড়ি মাঝপথ থেকে চলে যায়।
এদিকে ৩০মিনিটে আসমা বেওয়ার সব সম্ভল পুড়ে ছাই হয়ে যায়। স্থানীয়রা আগুন নিভাতে সক্ষম হলেও গোয়াল ঘরে থাকা দুটি গরু পুড়ে মারা যায় এবং একটি গরু মারাত্বকভাবে দগ্ধ হয়। গোয়াল ঘর ছাড়াও পাশে বসবাসের ঘর এর কিছু অংশ পুড়ে যায়। আগুনটি পাশের বাসায় ছড়িয়ে পরতে লাগলে স্থানীয়রা দ্রুত আগুন নিভাতে সক্ষম হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা আবুল হোসেন জানান, আগুন লাগার কথা জানতে পারলে প্রথমে ৯৯৯ ফোন দিয়েছিলাম পরে আমরা আগুন নিভাতে সক্ষম হই। অসহায় বিধবা আসমা বেওয়ার স্বামী মারা যাবার পর সন্তানদের নিয়ে অনেক কষ্টে সংসার চালাতো। গরু লালন পালন করে মোটা তাজা করে বাজারে বিক্রি করে জীবিকা নিবার্হ করত কোন রকমে। কয়েল এর আগুন থেকে গোয়াল ঘরে থাকা গরু ও বাড়িঘর পুরে যায়। এসময় তার ২টি গরু আগুনে পুড়ে মারা যায়। এবং একটি গাভী ও একটি ছোট বাছুর মারাত্বক দগ্ধ হয়েছে। এখন সরকারীভাবে যদি একটু সহায়তা পেতে তবে কিছুটা হলেও দু’বেলা ডাল-ভাত খেয়ে বেঁচে থাকতে পারবে।
ভুক্তভোগী বিধবা আসমা বেওয়া বলেন, দুর্ঘটনার ফলে আনুমানিক আড়াই লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে। আমার সব সম্বল আগুনের সাথে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। দুটি গরু আগুনে পুড়ে মারা গেছে এবং একটি গাভী ও একটি ছোট বাছুর মারাত্বকভাবে দগ্ধ হয়েছে। গরু এবং ঘর মিলে আমার প্রায় আড়াই লক্ষ টাকার মত ক্ষতি হয়েছে। আমি এখন কি করে খাবো । গরু লালন-পালন করে সংসার চলতো সেটাও আজ নাই। কি করে সংসার চলবে সেই চিন্তায় এখন মাথায় ঘুরপাক করছে।
এবিষয়ে নওগাঁ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি ) নজরুল ইসলাম জুয়েল বলেন, বিষয়টি জানার পর ভুক্তভুগি বিধবা আসমা বেওয়াকে থানায় লিখিত সাধারণ ডায়েরি করতে বলেছি। তবে ঘটনাটি সত্যিই দু:খজনক। তবে যতদূর জানি গোয়াল ঘরে কোয়েলের আগুন থেকেই এমন দূর্ঘটনা ঘটেছে|