তিমির বনিক, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারে আমন ধানে ব্যাকটেরিয়াজনিত পাতাপোড়া রোগ দেখা দিয়েছে। কৃষকরা জানিয়েছেন, তারা আক্রান্ত জমিতে কীটনাশক দিয়েও কোনো ফল পাচ্ছেন না। এতে তারা হতাশ হয়ে পড়ছেন।
তবে কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এটা কোনো বড় ধরনের রোগ নয়। প্রয়োজনীয় বৃষ্টি ও ধান গাছের পুষ্টির অভাবে পাতা লালচে হচ্ছে। কৃষকদের ভুল পরিচর্যার কারণে পাতা সবুজ হতে একটু সময় লাগবে। জেলার সাত উপজেলায় প্রায় পাঁচ হাজার হেক্টর জমির ফসল লাল হয়েছে।
জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলায় আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ১৬ হাজার হেক্টর। গতবছর জেলায় ১ লাখ ১ হাজার হেক্টর জমিতে আমন আবাদ হয়েছিল। জেলার রাজনগর, কমলগঞ্জ, কুলাউড়া ও সদরসহ সাতটি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ধান গাছ হলুদ বর্ণ ধারনের ফলে কৃষকরা চিন্তায় পড়েছেন।
কৃষকরা জানিয়েছেন, সবুজ পাতা হলুদ বর্ণ ধারণ করে পুড়ে যাওয়ায় ধান গাছ ধীরগতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। অনেক জমিতে ধানের চারা বিবর্ণ রং ধারণ করেছে। কীটনাশক ও সার প্রয়োগ করেও কোনো লাভ হচ্ছে না। বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বিআর-১১ ও ব্রি-৪৯ জাতের ধান।
রাজনগর উপজেলার বাজুয়া গ্রামের ইয়াবর মিয়া বলেন, ধান গাছের নিচে এক ধরনের ছোট বাদামি গাছ ফড়িং আক্রমণ করে। এর পর থেকে ধান গাছে পচন শুরু হয়। আমার পাঁচ বিঘা জমির ধান একেবারে নষ্ট হয়ে গেছে।
পাঠানটুলা এলাকার ইমানি মিয়া বলেন, ১৫ দিন ধরে ধানের পাতা মরা রোগ দেখা দিয়েছে। সার-কীটনাশক দিয়েও কোনো লাভ হচ্ছে না।
কুলাউড়া উপজেলার হিঙ্গাজিয়া গ্রামের কৃষক জালাল উদ্দিন বলেন, হঠাৎ ধানের পাতা লাল হওয়া রোগের আক্রমণে হতাশায় পড়েছি। কীটনাশক ও সার প্রয়োগেও লাভ হচ্ছে না।
কমলগঞ্জের মুন্সিটিলা গ্রামের কৃষক আব্দুল আহাদ বলেন, আমরা মাজরা পোকার আক্রমণ মনে করে স্থানীয় বাজার থেকে কীটনাশক কিনে প্রয়োগ করি। তবে ২০ দিন ধরেও ধানের লালচে রং যাচ্ছে না।
মৌলভীবাজার কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সামছুদ্দিন আহমদ বলেন, এটা কোনো বড় সমস্যা নয়। কৃষকদের আতঙ্কিত না হয়ে জমিতে পরিমাণ মতো কীটনাশক ও সার প্রয়োগের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কৃষকদের ভুল পরিচর্যার কারণে পাতা সবুজ হতে একটু সময় লাগবে। প্রত্যন্ত অঞ্চলের কৃষকরা তাদের ক্ষেতে ভুল পরিচর্যা করছেন। এতে ধানের পাতা সবুজ হতে দেরি হবে। উপযুক্ত সময়ে বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় ধান গাছে খাদ্যের অভাব দেখা দিয়েছে। পটাসিয়াম ও সালফারের অভাব পূরণ হলেই ধান গাছ সবুজ হয়ে যাবে বলে জানান তিনি।