সাজা বা শাস্তি হিসেবে দোররা মারার বা বা বেত্রাঘাতের বিধান বাতিল করতে যাচ্ছে সৌদি আরব। দেশটির সর্বোচ্চ আদালত এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
সৌদি আরবের সর্বোচ্চ আদালত থেকে জানানো হয়েছে যে, সংস্কার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে এই সাজা বিলোপের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এক নির্দেশনায় বেত্রাঘাতের বদলে অপরাধীকে কারাদণ্ড কিংবা জরিমানার সাজা দিতে বলেছে আদালত।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দোররা মারার পরিবর্তে নতুন শাস্তিতে অভিযুক্তকে জেল অথবা জরিমানা করা হবে।
আইন পরিবর্তনের বিষয়ে দেশটির সর্বোচ্চ আদালতের একটি নথি দেখার দাবি করেছে রয়টার্স। নথিতে এভাবে লেখা হয়েছে, ‘কিং সালমানের নির্দেশনা এবং ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সরাসরি তদারকিতে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার অংশ হিসেবে আইন সংশোধন করা হচ্ছে।’
প্রকাশে নেশা কিংবা হয়রানিসহ নানা ধরনের অপরাধে সৌদিতে সেই আদিকাল থেকে দোররা মারার বিধান চলে আসছিল।
সালমানের ছেলে ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান সৌদি আরবের দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে বেশ কিছু ‘স্পর্শকাতর’ বিষয়ে পরিবর্তন আনেন। নারীদের গাড়ি চালানো, মাঠে গিয়ে খেলা দেখা, অভিভাবকের অনুমোদন ছাড়া পাসপোর্ট প্রাপ্তি ও বিদেশ ভ্রমণের নিষেধাজ্ঞা তুলে দিয়েছেন। তার হাত ধরে সাড়ে তিন দশক পর দেশটির সিনেমা হলগুলোও সচল হয়েছে।
মানবাধিকার কর্মীদের অভিযোগ, সৌদি আরবে মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিলেই জায়গা হয় কারাগারে।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে সাইবার ক্রাইম ও ইসলাম অবমাননার শাস্তি হিসেবে সৌদি আরব ব্লগার রাইফ বাদাউয়িকে প্রকাশ্যে বেত্রাঘাতের সাজা দিলে তা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে স্থান পায়।
বিশ্বজুড়ে ব্যাপক সমালোচনা এবং বেত্রাঘাতে রাইফের মৃতপ্রায় হয়ে পড়ার খবর জানাজানি হলে ওই সাজা স্থগিত করা হয়।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ভাবমূর্তি ঠিক করতে সৌদি আরব বেত্রাঘাতের সাজা তুলে নেয়ার কথা ভাবলেও ভিন্নমতাবলম্বী এবং নারী অধিকারের জন্য আন্দোলনকারীদের ওপর রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন ও নির্যাতন কমেনি।