মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সংসদীয় কমিটিকে ৪৯ বছর আগে দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের সময়ে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী রাজাকার, আলবদর, আলশামসের তালিকা তৈরি ও প্রকাশের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। রবিবার সংসদ ভবনে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর জন্য সংসদীয় কমিটির সভাপতি শাজাহান খানকে আহ্বায়ক করে একটি সাব কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরেই একাত্তরের মুক্তি সংগ্রামের বিরোধিতাকারী রাজাকার, আলবদর ও আলশামস বাহিনীর সদস্যদের নামের তালিকা তৈরির দাবি তুলেছে একাধিক সংগঠন। ইতিমধ্যেই একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরোধী হিসেবে জামায়েত ইসলামির বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতাকে ফাঁসিতেও ঝুলিয়েছে বাংলাদেশের আওয়ামি লিগ সরকার।
আরও বেশ কয়েকজনকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দিয়েছে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল। যদিও উচ্চ আদালতে মামলার নিষ্পত্তি না হওয়ায় ফাঁসির সাজা স্থগিত রয়েছে।
চলতি বছরের শুরুর দিকে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে রাজাকারদের এক তালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল। কিন্তু ওই তালিকা নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক দেখা দেয়। বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার নামও রাজাকার তালিকায় থাকায় সমালোচনার ঝড় ওঠে।
শেষ পর্যন্ত সমালোচনার মুখে পড়ে ওই তালিকা বাতিল করতে বাধ্য হয় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। ভুল তালিকা প্রণয়নের জন্য ক্ষমাও চেয়ে নেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী।
সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে ঠিক হয়েছে, নতুন করে রাজাকার, আলবদর ও আলশামসে-দের তালিকা তৈরির দায়িত্ব আর মন্ত্রণালয়ের আধিকারিকদের উপরে ছেড়ে দেওয়া হবে না। বরং সংসদীয় কমিটিই ওই তালিকা তৈরি করবে।
এবার রাজাকারদের তালিকা তৈরিতে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের মধ্যে যারা সংসদ সদস্য হিসেবে আছেন, তাদের সহযোগিতা নেওয়া হবে। এই সাব কমিটি যুদ্ধকালীন কমান্ডার এবং উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড থেকে রাজাকারদের তথ্য সংগ্রহ করবে।
রাজাকারদের তালিকা তৈরির বিষয়ে এদিন সংসদীয় কমিটির পক্ষ থেকে সাব কমিটিও তৈরি করা হয়েছে। সাব কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম, রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু, এবি তাজুল ইসলাম, ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল ও মোসলেম উদ্দিন আহমেদ।