বর্তমানে দেশে যে পরিমাণ চাল মজুত আছে তা দিয়ে আগামী নভেম্বর পর্যন্ত চাহিদা মিটিয়েও চাল উদ্বৃত্ত থাকবে। তাই প্রাণঘাতী করোনা মহামারি ও চলমান বন্যার ক্ষয়ক্ষতির পরও দেশে খাদ্যঘাটতির কোনো আশঙ্কা নেই।
ব্রি আয়োজিত কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে খাদ্যনিরাপত্তা :বাংলাদেশ কি চাল ঘাটতির মুখোমুখি হতে যাচ্ছে?’ শীর্ষক এক অনলাইন সেমিনারে গেল রবিবার বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) এর গবেষণায় চাল উদ্বৃত্তের এ তথ্য তুলে ধরা হয়।
ব্রি-গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী নভেম্বর পর্যন্ত চাহিদা মিটিয়ে ৫.৫৫ মিলিয়ন টন চাল উদ্বৃত্ত থাকবে। তাই দেশে খাদ্যঘাটতির কোনো আশঙ্কা নেই। ব্রি-এর গবেষণায় দেখা গেছে, চালের উত্পাদন গতবছরের তুলনায় প্রায় ৩.৫৪ ভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে। গত বোরো ও আমন মৌসুমের উদ্বৃত্ত উত্পাদন থেকে হিসাব করে, জুন পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরে ২০.৩১ মিলিয়ন টন চাল ছিল। আগামী নভেম্বর পর্যন্ত ১৬.৫০ কোটি মানুষের চাহিদা মিটানোর পরেও ৩৬-৭৮ দিনের চাল উদ্বৃত্ত থাকবে। এছাড়া, নভেম্বরের মধ্যে দেশের ফুড বাস্কেটে নতুনভাবে আউশ ও আমনের উত্পাদন যুক্ত হবে। ফলে, বাংলাদেশে আপাতত খাদ্যঘাটতির কোনো আশঙ্কা নেই।
তবে চাল উদ্বৃত্ত থাকার কথা বলা হলেও গত কিছু দিন ধরেই দেশে চালের বাজার অস্থির। সরকারের বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসেবে গত এক বছরের ব্যবধানে স্বল্প আয়ের মানুষের মোটা চাল ইরি/স্বর্ণার দাম বেড়েছে ১৮ শতাংশের বেশি। আর সরু চাল নাজিরশাইল/মিনিকেটের দাম বেড়েছে ৮ দশমিক ৭৪ শতাংশ। রবিবার রাজধানীর বাজারে প্রতি কেজি মোটা চাল ইরি/স্বর্ণা বিক্রি হয় ৪০ থেকে ৪৫ টাকায়। যা গত বছর এই সময় ছিল ৩৪ থেকে ৩৮ টাকা। অন্যদিকে সরু চাল বিক্রি হয় ৫০ থেকে ৬৪ টাকায়। যা গত বছর ছিল ৪৭ থেকে ৫৬। মাঝারি মানের চাল পাইজাম/লতা বিক্রি হচ্ছে ৪৪ থেকে ৫০ টাকায়।
সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, গত বোরো মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে করোনা সংকট ও চলমান বন্যার কারণে এক শ্রেণির ব্যবসায়ী এর সুযোগ নিচ্ছে। সরকার বন্যাদুর্গত ও করোনায় শ্রমজীবী মানুষদের সাহায্যার্থে প্রতি মাসে ২ থেকে ৩ লাখ টন চাল দিচ্ছে। এতে সরকারের মজুতও কমে যাচ্ছে। এই ব্যবসায়ীরা চুক্তি অনুযায়ী সরকারের গুদামে চাল-তো দিচ্ছেই না, উলটো চালের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বাড়াচ্ছে।
উল্লেখ্য, বর্তমানে সরকারি গুদামে ১০ লাখ ৭ হাজার টন চালের মজুত আছে। গত বছর ছিল ১৫ লাখ ২১ হাজার টন।