দেশে নানা অভিনব কৌশলে সংঘটিত হচ্ছে সাইবার অপরাধ। গবেষণায় নিত্যনতুন অপরাধের মাত্রা ব্যাপক হারে বাড়ার চিত্র উঠে এসেছে, যা প্রচলিত অপরাধের বিভিন্ন ধরন থেকে ব্যতিক্রম।
নতুন ধরনের সাইবার অপরাধ বেড়েছে ২৮১ দশমিক ৭৬ শতাংশ। আর এটা ঘটছে অসচেতনতার কারণে। ডিজিটাল যন্ত্র ব্যবহার এবং অনলাইনের বাসিন্দা হতে কিংবা ডিজিটাল জগতে কীভাবে চলতে হবে, সেই সংস্কৃতি গড়ে ওঠেনি। এ কারণে নারী ও শিশুদের সবচেয়ে বেশি সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। আজ শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশন (সিক্যাফ) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছে সংগঠনটি।
সম্মেলনে জানানো হয়, সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশনের গবেষণা জরিপে দেখা গেছে, বাংলাদেশে ২০২২ সালে সংঘটিত নতুন ধরনের অপরাধের মাত্রায় নিত্যনতুন ও অভিনব কৌশলের আশ্রয় নিয়েছে সাইবার দুর্বৃত্তরা। এসব অপরাধের মধ্যে রয়েছে নানা মাত্রিক প্রতারণা। যেমন চাকরি দেওয়ার মিথ্যা আশ্বাস, ভুয়া অ্যাপে ঋণ দেওয়ার ফাঁদ, সেবা বা পণ্য বিক্রির নামে প্রতারণা ইত্যাদি। ২০২২ সালে ভুক্তভোগীদের ১৪ দশমিক ৬৪ শতাংশই অনলাইনে পণ্য কিনতে গিয়ে প্রতারণার শিকার হয়েছেন। সাইবার অপরাধে শিশু ভুক্তভোগীর হার বেড়েছে ১৪০ দশমিক ৮৭। ভুক্তভোগীদের ৭৫ শতাংশই তরুণ, যাঁদের বয়স ১৮ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। লিঙ্গভিত্তিক তুলনামূলক পরিসংখ্যানে সাইবার অপরাধের ভুক্তভোগীদের মধ্যে নারীদের হার বেশি (৫৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ)।
সংবাদ সম্মেলনে সিকিউরিটি অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশন জানায়, তরুণ ও শিশুদের লক্ষ্য করে আগামী অক্টোবর মাস সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতা মাস পালন করা হবে। অক্টোবরের চার সপ্তাহে ডিজিটাল সুরক্ষার চারটি বার্তা দিয়ে এই সচেতনতা কার্যক্রমের ঘোষণা দিয়েছে ফাউন্ডেশনের জাতীয় কমিটি।
সম্মেলনে সিসিএ ফাউন্ডেশনের সভাপতি কাজী মুস্তাফিজ সভাপতিত্ব করেন। স্বাগত বক্তব্যে জাতীয় কমিটির সদস্য মুশফিকুর রহমান জানান, ‘আমরা অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহে “মাল্টি-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন চালু করুন”, দ্বিতীয় সপ্তাহে “শক্তিশালী পাসওয়ার্ড চালু করুন”, তৃতীয় সপ্তাহে “ফিশিং চিনুন এবং রিপোর্ট করুন”এবং চতুর্থ সপ্তাহে “আপনার সফটওয়্যার হালনাগাদ করুন” শিরোনামে সচেতনতা চালাব।’
সম্মেলনে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসের (ব্লাস্ট) পরিচালক (সালিস এবং প্রশিক্ষণ) তাপসী রাবেয়া বলেন, শিশুর হাতে যন্ত্র তুলে দিলেও তাদের সুরক্ষার বিষয় না সেখানেই তাদের কেউ কেউ অপরাধ করছে, কেউবা আক্রান্ত হচ্ছে। তাই নারী ও শিশুদের সচেতন করতে গুরুত্ব দিতে হবে।
এবারের সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতা মাসের প্রতিপাদ্য ‘আমাদের বিশ্বকে সুরক্ষিত করি’। এই কর্মসূচির পৃষ্ঠপোষক মুঠোফোন সংযোগদাতা প্রতিষ্ঠান রবি, প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান সফোস ও সাইবার প্যারাডাইজ। সহযোগী হিসেবে আছে সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশন, ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি), সাইবার সাপোর্ট ফর উইমেন অ্যান্ড চিলড্রেন (সিএসডব্লিউসি) ও বাংলাদেশ সিস্টেম অ্যাডমিনিস্ট্রেটরস ফোরাম (বিডিএসএএফ)।
ডিবিএন/ডিআর/তাসফিয়া করিম