দেশরত্ন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২১ শে আগস্ট যে ঘটনা ঘটেছে তাতে আমার বাঁচার কথা নয়। বাংলাদেশের মানুষের জন্য কিছু করতেই আল্লাহ আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন।
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্মরণে আজ (শুক্রবার) সকালে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় এ কথা জানান তিনি। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ আলোচনা সভায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০০১ সালে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বিএনপি ক্ষমতায় আসে। ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীর ওপর নানা অত্যাচার নির্যাতন শুরু হয়। সিলেটে ব্রিটিশ হাইকমিশনারের ওপর বোমা হামলাসহ দেশের ৫ শতাধিক স্থানে বোমা হামলা, সন্ত্রাস ও দুর্নীতির প্রতিবাদে আমরা যখন বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে সমাবেশ ও র্যালি করতে যাই, সেই সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালিয়ে আমাকে হত্যা করতে চেয়েছিলেন খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান। এই হামলা চালিয়ে আমাকে হত্যা করাই ছিল তাদের প্রধান টার্গেট।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমেরিকায় সজীব ওয়াজেদ জয়কে কিডন্যাপ করে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল। এফবিআই-এর হাতে এই চক্রান্ত ধরা পড়ে।
সজীব ওয়াজেদ জয়কে হত্যার পরিকল্পনার পূর্ণ বিবরণ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘জয়কে কিডন্যাপ ও হত্যার পরিকল্পনার কথা এফবিআইয়ের তদন্তে বেরিয়ে আসার ফলে আমরা এটা জানতে পেরেছি। তাদের (এফবিআই) তদন্তে পরিকল্পনাকারী বিএনপি নেতারা ধরা পড়ে। পরে সে দেশে তাঁদের সাজাও হয়। আদালতের রায়ে বিএনপি নেতা মাহবুবুর রহমান ও শফিক রেহমানের নাম বেরিয়ে আসে। তারেক রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁরা এ পরিকল্পনা করেছিলেন। তাঁদের পরিকল্পনা ছিল জয়কে কিডন্যাপ করে হত্যা করা।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জয়কে কিডন্যাপ করে হত্যার পরিকল্পনার কথা কিন্তু আমরা খুঁজে বের করতে পারতাম না, যদি এফবিআই তদন্ত না করত অথবা আমেরিকায় পরিকল্পনাকারীদের বিরুদ্ধে ওই রায় বের না হতো।’
সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। আলোচনা সভা পরিচালনা করেন প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ ও সহ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে ১৯৭১, ১৯৭৫ ও ২০০৪ সালের ২১শে আগস্ট শহীদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। প্রায় দেড় দশক আগে ২০০৪ সালের এই দিনে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী শান্তি সমাবেশে নারকীয় গ্রেনেড হামলা চালানো হয়।
বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন নেতা সেদিন অল্পের জন্য এই ভয়াবহ হামলা থেকে বেঁচে গেলেও আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমান ও অপর ২৪ জন এতে নিহত হন।
এ ছাড়া এই হামলায় আরো ৪০০ জন আহত হন। আহতদের অনেকেই চিরতরে পঙ্গু হয়ে গেছেন। তাঁদের কেউ কেউ আর স্বাভাবিক জীবন ফিরে পাননি। দিবসটি উপলক্ষে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।