বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় ডিপ ফ্রিজ থেকে উম্মে সালমা খাতুন (৫২) নামে এক গৃহবধূর হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার (১০ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলা সদরের বগুড়া-নওগাঁ সড়কের পাশে জয়পুরপাড়ার একটি বাড়ি থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত উম্মে সালমা খাতুন দুপচাঁচিয়া ডিএস কামিল মাদরাসার উপাধ্যক্ষ, উপজেলা ইমাম-মুয়াজ্জিন সমিতির সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ জামে মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা এসএম আজিজুর রহমানের স্ত্রী।
পুলিশ ও স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে, বগুড়া-নওগাঁ মহাসড়কের পাশে মাওলানা এসএম আজিজুর রহমানের চার তলাবিশিষ্ট বাড়ির তৃতীয়তলায় ছোট ছেলে ও স্ত্রীসহ তিনি বসবাস করতেন। প্রথম, দ্বিতীয় ও চতুর্থতলায় ভাড়াটিয়ারা থাকেন। রোববার (১০ নভেম্বর) সকাল পৌনে ১০টায় আজিজুর রহমান ও তার ডিএস কামিল মাদরাসায় আলিম পড়ুয়া ছোট ছেলে সাদ বিন আজিজুর রহমান অন্যান্য দিনের মতো মাদরাসায় চলে যান। দুপুরে ছোট ছেলে সাদ বিন আজিজুর রহমান বাসায় ফিরে দেখেন বাসার মূল গেটে বাইরে থেকে তালা দেওয়া। তার মা বাড়িতে তালা দিয়ে কোথাও গিয়েছেন ধারণা করে তিনি তার কাছে থাকা চাবি দিয়ে তালা খুলে ভেতরে প্রবেশ করেন। এসময় তার মাকে আশেপাশের বাসায় খোঁজাখুজি করে না পেয়ে ফিরে আসেন। ঘরে প্রবেশ করে জিনিসপত্র এলোমেলোসহ ঘরে রাখা আলমারিতে কুড়াল দিয়ে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পান তিনি। পরে তার বাবা আজিজুর রহমানকে মোবাইলে ঘটনাটি জানান।
খবর পেয়ে তার বাবা বাসায় এসে স্ত্রীকে বিভিন্ন জায়গায় খুঁজতে থাকেন। একপর্যায়ে বাসায় রাখা ডিপ ফ্রিজের ঢাকনা কিছুটা উঁচু অবস্থায় দেখতে পান। ফ্রিজের ঢাকনা খুলে হাত-পা বাঁধা তার স্ত্রী উম্মে সালমা খাতুনকে উদ্ধার করে দুপচাঁচিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ধারণা করা হচ্ছে, দুর্বৃত্তরা কৌশলে বাসায় প্রবেশ করে সালমা খাতুনকে হত্যা করে ডিপ ফ্রিজে রেখে যায়।
স্বামী মাওলানা আজিজুর রহমান বলেন, মনে হচ্ছে দুর্বৃত্তরা বাসায় প্রবেশ করে ডাকাতির চেষ্টা করেছে। তার স্ত্রী হয়তো ডাকাতদের আলমারির চাবি দিতে রাজি না হলে তাকে হত্যা করে ফ্রিজে রেখে যায়।
দুপচাঁচিয়া থানার ওসি ফরিদুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়েই ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে হত্যার রহস্য উদঘাটনে বিভিন্ন তথ্যসহ আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। দুর্বৃত্তরা ওই গৃহবধূকে হত্যার জন্যই বাসায় প্রবেশ করেছিল। তবে বাড়ি থেকে কোনো জিনিসপত্র নিয়ে যাওয়ার আলামত পাওয়া যায়নি। হত্যার রহস্য অন্য খাতে প্রবাহিত করতে একটি আলমারিতে কুড়ালের আঘাত করলেও আলমারিটি লক করা ছিল। এছাড়াও তারা ঘরের জিনিসপত্র তছনছ করেছে।
তিনি আরো বলেন, প্রাথমিকভাবে লাশের সুরতহাল রিপোর্টে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মৃত্যুর সঠিক কারণ উদঘাটনের জন্য গতকাল সন্ধ্যায় লাশটি বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
আজ ৩০শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | হেমন্তকাল | ১৩ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি | দুপুর ২:২৭ | শুক্রবার
ডিবিএন/এসই/ এমআরবি