সমাজের তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদেরকে নাগরিক সুবিধা দিতে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং আইন মন্ত্রণালয়ের সচিবকে এ নোটিশ পাঠানো হয়। আজ বুধবার (৫ জুলাই) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মাহমুদুল হাসান জনস্বার্থে নোটিশটি পাঠিয়েছেন।
নোটিশে বলা হয়েছে, তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠী সমাজে সবচেয়ে অবহেলিত। তারা পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে বৈষম্যের শিকার। সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় ২০১৩ সালে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের উন্নয়নে নীতিমালা করেছে, কিন্তু সেটি কাগজে কলমে সীমাবদ্ধ এবং তাদের কল্যাণে যথাযথ ভূমিকা পালন করতে ব্যর্থ। ফলে এ জনগোষ্ঠী মানবেতর জীবনযাপন করছে এবং বেঁচে থাকার জন্য মানুষের কাছে হাত পাততে বাধ্য হচ্ছে। বাংলাদেশ সংবিধানের ২৮(৪) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রের যেকোনো অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জন্য সরকার বিশেষ বিধান প্রণয়ন করতে পারে। দুঃখের বিষয় এই যে, সরকার অবহেলিত তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে।
“ডিজিটাল বাংলা নিউজ” অনলাইনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
আইনি নোটিশে আরও বলা হয়, তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠী বাংলাদেশের নাগরিক এবং সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রের কাছ থেকে সমান সুযোগ-সুবিধা লাভের অধিকারী। কিন্তু সরকার এ জনগোষ্ঠীর প্রতি যথাযথ দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠী মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছে। সরকার দেশের বিভিন্ন জনগোষ্ঠীকে নানাবিধ মাসিক সুযোগ-সুবিধা দিয়ে আসছে। যেমন দেশের বয়স্ক নাগরিকদের জন্য বয়স্ক ভাতা, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য মাসিক ভাতা, পার্বত্য চট্টগ্রামের বিপুল জনগোষ্ঠীর জন্য বিভিন্ন খাদ্য সহায়তা ইত্যাদি। বাংলাদেশের তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠী সবচেয়ে অবহেলিত। তাদের কল্যাণে দেশের তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের মাসিক ভাতা দিতে হবে, তাদের জন্য পৃথক স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করতে হবে। এ ছাড়া তাদের জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। সংবিধান অনুযায়ী তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের জন্য নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।
নোটিশ পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীর সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত করতে এবং তাদের কল্যাণে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ করা হয়েছে। অন্যথায় তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীর সাংবিধানিক অধিকার বাস্তবায়নে সংবিধানের ৪৪ অনুচ্ছেদের নির্দেশনা মেনে ১০২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হবে।
ডিবিএন/ডিআর/মাহমুদা ইয়াসমিন