তাইওয়ানে আঘাত হানা শক্তিশালী ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত চারজনের মৃত্যুর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন অনেকে। ভূমিকম্পে বহু ভবন বিধ্বস্ত হয়েছে। ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে আটকে পড়াদের উদ্ধার কার্যক্রম চলছে।
বুধবার (৩ এপ্রিল) স্থানীয় সময় সকাল ৭টা ৫৮ মিনিটে তাইওয়ানের পূর্বাঞ্চলের শহর হুয়ালিয়েনের ১৮ কিলোমিটার দক্ষিণে রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ৪ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। ভূমিকম্পটির গভীরতা ছিল ১৫ দশমিক ৫ কিলোমিটার। তাইওয়ানের পাশাপাশি চীন, ফিলিপাইন এবং জাপানেও ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে।
এনডিটিভি জানিয়েছে, ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল হুয়ালিয়েন কাউন্টিতে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে তিনজন হাইকিং ট্রেইলে এবং একজন হাইওয়ে টানেলে মারা গেছেন।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, নিউ তাইপে শহরে কিছু ভবন বিধ্বস্ত হয়েছে। ধ্বংসস্তূপে উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছেন জরুরি ও দুর্যোগ বাহিনীর কর্মীরা।
ভূমিকম্পটির পর আরও অন্তত নয়টি পরাঘাত বা আফটার শক হয়েছে তাইওয়ানে, যেগুলোর মাত্রা ৪ বা তারও বেশি ছিল।
ভূমিকম্পে হুয়ালিয়েনের কিছু ভবন আংশিকভাবে ধসে পড়েছে। কিছু ভবনকে হেলে পড়তে দেখা গেছে। স্থানীয় এক ভূতত্ত্ববিদ জানান, এটি তাইওয়ানের গত ২৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী মাত্রার ভূমিকম্প।
ভূমিকম্পের পর সেখানে বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সংযোগ ব্যাহত হয়েছে বলে জানিয়েছে মনিটরিং গ্রুপ নেটব্লকস। এ ভূমিকম্পের পর প্রতিবেশী দেশ জাপান সর্বোচ্চ ৩ মিটার উচ্চতার সুনামির সতর্কতা জারি করে তাদের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলে। একইভাবে সুনামির সতর্কতা জারি হয় ফিলিপাইনেও।
ভূমিকম্পের মুহূর্তে রাজধানী তাইপেতে ধারণ করা ভিডিওতে দেখা যায়, ভবনগুলো ভয়ানকভাবে কাঁপছিল। ঘরের তাক থেকে পড়ে যাচ্ছিল জিনিসপত্র। চুরমার হয়ে যাচ্ছিল আসবাবপত্র।
দেশটির পার্বত্যাঞ্চলের কিছু ভিডিওতে দেখা যায়, ভূমিকম্পের কারণে সেখানে বড়সড় ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। তবে এর ক্ষয়ক্ষতি এখনো নিরূপণ করা যায়নি।
স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রচারিত ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, ভূমিকম্পে আবাসিক ভবনগুলো দুলছিল। সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়া হয় স্থানীয় বাসিন্দাদের। এছাড়া স্কুলগুলো থেকে সরিয়ে আনা হয় শিক্ষার্থীদের।
১৯৯৯ সালের সেপ্টেম্বরে তাইওয়ানে ৭ দশমিক ৬ মাত্রার একটি ভূমিকম্প আঘাত হানে। ভয়াবহ ওই প্রাকৃতিক দুর্যোগে দুই হাজার ৪০০ মানুষের মৃত্যু হয়। বিধ্বস্ত হয় পাঁচ হাজারেরও বেশি বাড়িঘর।
ডিবিএন/ডিআর/তাসফিয়া করিম