তাইওয়ানের পূর্ব উপকূলে ৭ দশমিক ৪ মাত্রার ভূমিকম্পের পর উদ্ধার কার্যক্রম চলছে। ভূমিকম্পে অন্তত নয়জনের প্রাণ গেছে এবং আহত হয়েছেন আট শতাধিক বাসিন্দা। উপকূল বরাবর পাহাড়ি সড়কে টানেল ধসে ১২৭ জনের বেশি লোক আটকে আছেন।
ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল হুয়ালিয়েন শহরের ১৮ কিলোমিটার দক্ষিণে। তবে ১০০ কিলোমিটারেরও বেশি দূরে রাজধানী তাইপেইতে শক্তিশালী কম্পন অনুভূত হয়। এটি গত ২৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প।
ভূমিকম্পে জাপান ও ফিলিপাইনের দ্বীপে সুনামি সতর্কতাও জারি হয়। পরে তা তুলে নেয় কর্তৃপক্ষ। এ ভূমিকম্পে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে হুয়ালিয়েন। সেখানে ভবন ধসে পড়ে, রাস্তা আটকে যায় এবং ট্রেন লাইন বেঁকে যায়।
হুয়ালিয়েনের বাসিন্দা ওশান সাই বিবিসি চায়নিজকে বলেন, ভূমিকম্পটি আরও জোরালো হয়ে উঠতে থাকে এবং আমি ঘরের জিনিসপত্র নিয়ে চিন্তায় পড়ে যাই। সৌভাগ্যবশত মোটরসাইকেল পড়ে যাওয়া ছাড়া ক্ষয়ক্ষতি কমই ছিল।
উপকূল সরু-আঁকাবাঁকা পাথুরে সড়ক আর টানেলে ঘেরা। টানেল ধসে অনেকে আটকা পড়েছেন। রুটটি পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয়, পাহাড়ের ওপর থেকে প্রশান্ত মহাসাগরের নয়নাভিরাম দৃশ্যের জন্য এটি বিখ্যাত।
হুয়ালিয়েনে সড়কের পাশে জিনওয়েন ও কিংশুই টানেলে আটকে পড়া ৭৭ জনের কাছে পৌঁছানোর অভিযান রাত পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। ছবিতে দেখা যায়, টানেল থেকে সড়কটি আলাদা হয়ে ধসে পড়েছে।
এটি এখনো স্পষ্ট নয়, কতক্ষণ তারা আটকে থাকবেন, তাদের কাছে খাবার বা পানি আছে কি না, কিংবা তারা বাইরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন কি না।
তাইপে এ ভূমিকম্পে ভয়াবহভাবে কেঁপে ওঠে। আবাসিক ভবন ভেঙে পড়ে। লোকজনকে তাদের বাড়ি ও স্কুল থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়। পুরো দ্বীপে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন এবং ইন্টারনেট বিভ্রাটের খবর পাওয়া গেছে।
তাইপের সিসমোলজি সেন্টারের পরিচালক উ চিয়েন ফু বলেন, ভূমিকম্পটির কেন্দ্র অগভীর। পুরো তাইওয়ানসহ উপকূলীয় দ্বীপগুলোতেও ভূকম্পন টের পাওয়া যায়। ২৫ বছরের মধ্যে এটি সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প।
বুধবার স্থানীয় সময় সকাল ৭টা ৫৮ মিনিটে ভূমিকম্পটি হয়। এর কেন্দ্র ভূপৃষ্ঠের ১৫ দশমিক ৫ কিলোমিটার গভীরে। এর পর অন্তত নয়টি আফটারশক হয়, যেগুলো ৪ বা তার বেশি মাত্রার,
১৯৯৯ সালের সেপ্টেম্বরে ৭ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্পে দুই হাজার ৪০০ জনের প্রাণহানি ঘটে এবং পাঁচ হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ডিবিএন/ডিআর/তাসফিয়া করিম