সরকারের মেয়াদ প্রায় শেষ হতে চলেছে। এই সময়ে কোন উপ-নির্বাচন নিয়ে মানূষের মধ্যে উত্তেজনা নেই। ঢাকার-১৭ আসনটি শুন্য হওয়ায় উপ-নির্বাচনের সাংবিধানিক বাধ্যকতা থাকায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ৬ মাসেরও কম সময়ের জন্য এম পি নির্বাচিত হয়ে খুব বেশী কিছু করার আছে মনে হয় না। যে কারনে এই নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের মধ্যেও আগ্রহ নেই। কিন্তু একটি বিশেষ কারনে নির্বাচনটি গুরুত্ব পেয়েছে দেশে জুড়ে।
ঢাকার এই অভিজাত এলাকায় হিরো আলম বিজয়ী হলে সরকারের গ্রহনযোগ্যতায় চাপ বাড়বে। এলাকার ভোটারদের উপরও প্রশ্ন ছুড়বে পছন্দের বিষয় নিয়ে। দেশে যে কোন সুস্থ নাগরিক যে কোন নির্বাচনের প্রার্থী হতে বাধা নেই। হিরো আলমও এই নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছে সেই অধিকারেই। নির্বাচনটি খুব বেশী প্রতিযোগিতামুলক হবে কেউ ভাবেনি। কিন্তু হিরো আলম প্রার্থী হওয়ায় আলোচনার জন্ম দিয়েছে দেশ জুড়ে। কেউ কেউ হিরো আলম বিজয়ী হবে বলেও প্রচারনা চালাচ্ছে। যদি সত্যই হিরো আলম বিজয়ী হয় তাহলে এই আলোচনাটি থামবে মনে হয়না। ক্ষমতাসীন দলের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে জাতীয় নির্বাচনেও। হিরো আলম পরাজিত হলেও কেউ কিচ্ছু বলবেনা কিন্তু টক শো’ জমবে ভাল। কে কত ভোট পেল তা নিয়ে বিশ্লেষন হবে গনমাধ্যমে। আবার কারচুপির অভিযোগও করবে বিরোধী দল। সরকার বিরোধী আন্দোলনের ক্ষেত্র প্রস্তুত হবে হিরো আলমকে নিয়ে। রঙ্গ রসের সুযোগ হবে প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা নিয়ে। আলোচনায় থেকে হিরো আলম রাজনীতিতেও হিরো বনে যাবে।
✪ আরও পড়ুন: বাংলাদেশের রাজনীতিতে এখন এক চরম দু:সময় চলছে
এই ঢাকা-১৭ নির্বাচনে হিরো আলমকে বিজয়ী করা লক্ষ্য নয়। হিরো আলমকে ব্যবহার করে সরকার বিরোধী আন্দোলনকে উষ্কে দেওয়াই উদ্দেশ্য। বর্তমান সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় দাবীটি প্রমান করাই বিরোধী দলের মূল লক্ষ্য। দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টির অবস্থা তৈয়ার হবে এই নির্বাচনে। রাজনীতিতে অস্থির অবস্থা সৃষ্টি করে অনির্বাচিত সরকারের হাতে দেশকে তুলে দেওয়ার পায়তারা করছে বিরোধী দল। কারন ৫ বছর আন্দোলন সংগ্রাম করেও জনগনের সমর্থন আদায়ে ব্যর্থ হয়েছে। চতুর্থ বার আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে বিরোধী দলের অস্তিত্ব সঙ্কট শুরু হবে। তাই মরিয়া হয়ে এখন হিরো আলমকে ভর করে রাজনৈতিক সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করছে। বিরোধী জোট এবং তাদের শরিকরা মরিয়া হয়ে মাঠে নামবে। এমন হিরো আলম আগেও বহুবার নির্বাচনে এসেছে। হাস্য রসের জন্ম দিয়ে হারিয়ে গেছে। কিন্তু হিরো আলম এখনই বিদায় নিবে মনে হয়না। ইন্দন দাতারা হিরো আলমকে রাজনীতির মাঠে রেখে সরকারকে বিতর্কিত করতে চায়। জাতীয় নির্বাচনেও এর প্রভাব পরতে পারে।
✪ আরও পড়ুন: বদলে যাচ্ছে বিশ্ব রাজনীতি
বর্তমান সরকার টানা তিন মেয়াদ ক্ষমতায় থেকে দেশে যে উন্নয়নের দেখিয়েছে তা আগে কোন সরকার পারেনি। দেশের এই উন্নয়ন ভোট ব্যাঙ্কও বদলে দিয়েছে। বিরোধী দলের জন্য তা সুখকর নয়। মানূষ উন্নয়নে আগ্রহী। তবে বর্তমান সরকারের কোন কোন এম পি মন্ত্রী ব্যক্তিগতভাবে জনপ্রিয় নয়। বেশীদিন ক্ষমতায় থাকলে এমনটি হওয়া অস্বাভাবিকও নয়। কিন্তু আওয়ামী লীগ চতুর্থ বার সরকার গঠন করতে পারলে বিরোধী দলের রাজনীতি আর সহজ হবেনা। কেউ কেউ নির্বাচিত হলেও নিকট ভবিষ্যতে সরকার গঠনের যোগ্যতা দেখাতে পারবেনা বিরোধী দল। রাজনীতি যেভাবে লাভজনক হয়ে গেছে ব্যবসায়ীরাও আর বিরোধী দলের পক্ষে অর্থ বিনিয়োগ করবেনা। অর্থায়ন না পেলে দলের অস্তিত্বের পাশাপাশি অনেক নেতারও অনটন শুরু হয়ে যাবে। তাই হিরো আলমকে নির্বাচনে ধরে রাখা খুব জরুরী। তবে বর্তমান সরকারকে হটাতে হলে দেশের নির্বাচন ব্যবস্থাটিকে বিতর্কিত প্রমান করতে হবে প্রথম।
✪ আরও পড়ুন:বি এন পি
এছাড়া বিরোধী দলের হাতে আর কোন ট্রাম কার্ড নেই। প্রচার প্রচারনায় হিরো আলমই অগ্রাধিকার পাচ্ছে। অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে হিরো আলম ভালই ভোট পাবে। বিজয়ী হলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবেনা। তবে দেশের অভিজাত এলাকার এই আসনটিতে হিরো আলমকে নিয়ে এত আলোচনা রাজনীতির মানদন্ডটিকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। সরকারের বিরুদ্ধে অনেকের অভিযোগ থাকতেই পারে। কিন্তু হিরো আলমকে নিয়ে উম্মাদনা দেশের রাজনীতির জন্য অশুভ বার্তা বহন করবে। এখন দেখার বিষয় এই আসনের ভোটাররা কি রায় দেয়!
“ডিজিটাল বাংলা নিউজ” অনলাইনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
ডিবিএন/এসই/ মোস্তাফিজ বাপ্পি