দেশের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী এন্ড্রু কিশোর দীর্ঘ দিন ধরে ক্যান্সারে ভুগছিলেন । অবশেষে ক্যান্সারের কাছে পরাজিত হয়েছেন তিনি। সোমবার (০৬ জুলাই) সন্ধ্যায় রাজশাহী মহানগরীর মহিষবাথান এলাকায় তার বোন ডা. শিখা বিশ্বাসের বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই খ্যাতিমান শিল্পী। তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে সংগীতাঙ্গনসহ শোবিজে। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৫ বছর।
শিল্পীর পরিবার জানিয়েছে, বর্তমানে রাজশাহীর একটি হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়েছে এন্ড্রু কিশোরের মরদেহ। কবরস্থ না করা পর্যন্ত এন্ড্রু কিশোরের মরদেহ সেখানেই থাকবে। অর্থাৎ ঢাকায় আনা হবে না তাকে।
করোনাকালে দেশের পরিস্থিতির কথা ভেবেই শিল্পীর পরিবার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গেছে। এন্ড্রু কিশোরের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এক শোকবার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, এন্ড্রু কিশোর তার গানের মাধ্যমে মানুষের হৃদয়ে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
১৯৭৭ সালে ‘মেইল ট্রেন’ সিনেমার মধ্য দিয়ে প্লেব্যাকে যাত্রা শুরু করেন এন্ড্রু কিশোর। এরপর আটবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
এরপর দীর্ঘদিনের ক্যারিয়ারে সুখ-দুঃখ, হাসি-আনন্দ, প্রেম-বিরহ সব অনুভূতির হাজার হাজার গান গেয়েছেন এন্ড্রু কিশোর। তার সবচেয়ে জনপ্রিয় গানের মধ্যে রয়েছে- জীবনের গল্প আছে বাকি অল্প, হায়রে মানুষ রঙিন ফানুস, ডাক দিয়াছেন দয়াল আমারে, আমার সারা দেহ খেয়ো গো মাটি, আমার বুকের মধ্যে খানে, পৃথিবীর যত সুখ আমি তোমার ছুঁয়াতে খুঁজে পেয়েছি, সবাইতো ভালোবাসা চায়, বেদের মেয়ে জোসনা আমায় কথা দিয়েছে, তুমি আমার জীবন আমি তোমার জীবন, ভালো আছি ভালো থেকো, তুমি মোর জীবনের ভাবনা, চোখ যে মনের কথা বলে, পড়েনা চোখের পলক ইত্যাদি।
বাংলাদেশের পাশাপাশি কলকাতার সিনেমাতেও গান করেছেন এন্ড্রু কিশোর। সিনেমার গানের জন্যই যেন জন্মেছিলেন এই গায়ক। ভক্ত-অনুরাগীরা তাকে ভালোবেসে প্লেব্যাক সম্রাট বলে ডাকে। সঙ্গীতে উজাড় করে দিয়েছেন নিজেকে। আর বিনিময়ে পেয়েছেন কোটি কোটি মানুষের ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা। সেইসঙ্গে রাষ্ট্র তাকে আটবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে সম্মানিত করেছে।