পবিত্র রমজান এক মাস শেষে ঈদুল ফিতর। এক মাসের বেতনের সমপরিমান উৎসব বোনাস ও মহান মে দিবস উপলক্ষে ১ মে বেতনসহ ছুটি প্রদানের দাবিতে ডিসি বা জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছে মৌলভীবাজার জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন।
জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি তারেশ চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহিন মিয়া স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিটি মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রদান করা হয়।
স্মারকলিপির অনুলিপি সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার, শ্রমঅধিদপ্তরের মহাপরিচালক, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক, মৌলভীবাজারের পৌর মেয়র ও পুলিশ সুপার, হোটেল-রেস্টুরেন্ট মালিক সমিতিকে প্রদান করা হয়।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয় পবিত্র ঈদুল ফিতর সন্নিকটে। শ্রমিকদের হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রম আর খাটুনিতে সৃষ্ঠ মুনাফায় মালিকশ্রেণি মহাধুমধামে ঈদ উদযাপন করলেও শ্রমিকদের ঈদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত করা হয়। কারণ ঈদের সময় অধিকাংশ হোটেল-রেস্টেুরেন্টের শ্রমিকদের উৎসব বোনাস প্রদান করা হয় না।
অথচ দেশের প্রচিলত শ্রমআইন মোতাবেক উৎসব বোনাস শ্রমিকের আইনগত ও ন্যায্য অধিকার। এমন কি ধর্মীয় মূল্যবোধ ও মানবাধিকার এর দিক থেকেও হোটেল-রেস্টুরেন্ট শ্রমিকদের উৎসব বোনাস থেকে বঞ্চিত করা হয় অমানবিক ভাবে। শুধু তাই নয় বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ এর ৫ ধারায় নিয়োগপত্র ও পরিচয়পত্র, ৬ ধারায় সার্ভিস বই, ২ (১০) ধারায় চাকুরীচ্যূতি জনিত ৪ মাসের নোটিশ পে, প্রতিবছর চাকুরীর জন্য ৪৫ দিনের গ্রাচ্যুয়েটি, ১০৩ ধারায় সপ্তাহে দেড়দিন সাপ্তাহিক ছুটি, ১০৮ ধারায় দৈনিক ৮ ঘন্টা সপ্তাহে ৪৮ ঘন্টা কাজ, অতিরিক্ত কাজের জন্য দ্বিগুণ মজুরি প্রদান।
১১৫ ধারায় বছরে ১০ দিন নৈমিত্তিক ছুটি, ১১৬ ধারায় ১৪ দিন অসুস্থাতার ছুটি, ১১৭ ধারায় প্রতি ১৮ দিন কাজের জন্য ১ দিন অর্জিত ছুটি, ১১৮ ধারায় ১১ দিন উৎসব ছুটি ও উৎসব বোনাস প্রদানের আইন থাকলেও হোটেল শ্রমিকদেরকে এই সকল আইনগত অধিকার হতে বঞ্চিত করা হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
হোটেল রেস্টুরেন্ট শ্রমিকরা দৈনিক ১০-১২ ঘন্টা অমানবিক পরিশ্রম করে অর্ধাহারে-অনাহারে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হন, যার কারণে শ্রমিকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে।
স্মারকলিপিতে আরও উল্লেখ করা হয় মহান মে দিবস উপলক্ষে ১ মে সারাবিশ্বের শ্রমিক শ্রেণি ছুটি ভোগ করে থাকেন।বাংলাদেশেরও সর্বস্তরের সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক-কর্মচারীরা ছুটি ভোগ করে থাকেন। অথচ অনেক সংগ্রামের পরও হোটেল শ্রমিকদের মে দিবসের ছুটি কার্যকর করা হয়নি আজও পর্যন্ত।
তাই আসন্ন ঈদুল ফিতরে এক মাসের বেতনের সমপরিমান উৎসব বোনাস ও মে দিবসে ছুটি কার্যকরের প্রেক্ষিতে হোটেল শ্রমিকরা জেলা প্রশাসকসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের সহযোগিতা একান্ত ভাবে কামনা করেন মর্মে শুভদৃষ্টির আন্তরিক ভাবে আবেদন করেন।
ডিবিএন/এসডিআর/ মোস্তাফিজ বাপ্পি