দেশ এক ব্যতিক্রম অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতি এর আগে কখনো দেখেনি কেউ। সমগ্র পৃথিবী আজ অভিন্ন মহামারী মোকাবেলা করছে। বিশ্বকে তছনছ করে দিয়েছে করোনা। কোন অসুধ আবিস্কার হয়নি এখনো। দুই বছর অতিক্রান্ত হয়ে গেছে আরও কতদিন এই অবস্থা চলবে জানেনা কেউ। ভেকসিন দিয়ে সংক্রমন রোধ করেছে অনেক দেশ কিন্তু, সঙ্কামুক্ত নয় কোথাও। ব্যবসা বানিজ্য বন্ধ হয়ে গেছে সব খানে সব দেশে। বাংলাদেশের মত অনুন্নত দেশে করোনার ভয়াবহতা নিয়ে সঙ্কা করেছিল বিজ্ঞানীরা। কিন্তু যেভাবে অনুমান করা হয়েছিল বাংলাদেশে মৃতের হার এখনো সেভাবে হয়নি। আমেরিকার মত দেশে প্রতিদিন দশ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সেই তুলনায় বাংদেশের ২৫০ জন বেশী নয়। তবে এখন যে ভাবে সংক্রমন বাড়ছে তাতে এই সংখ্যাটি বৃদ্ধি পাবে সন্দেহ নেই।
অনেকেই সরকারকে দায়ী করেছে। অব্যবস্থাপনাও হয়েছে, তবে এককভাবে সরকার দায়ী বলা যাবেনা। অনেক উন্নত দেশেরও আগে বাংলাদেশে ভেকসিন এসেছে। বিনা পয়সায় ভেকসিন দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু কিছু নেতা পরিকল্পিতভাবে এই ভেকসিন নিয়ে রাজনৈতিক বক্তব্য দিয়েছে। বলেছে ভারত থেকে আসা এই হাঁস মুরগীর ভেকসিন গ্রহন করলে মানুষের মৃত্যু হবে। মানুষ মারার জন্য ভারত থেকে সরকার এই ভেকসিন এনেছে। সেই নেতারাই একই ভেকসিন নিয়ে ছবি পোষ্ট করেছে গনমাধ্যমে। ফলাফল দাঁড়িয়েছে মানুষের অনাকাংখিত মৃত্যু। এই মৃত্যুর দ্বায় এড়াতে পারবেনা অসত্য প্রচারকারী নেতারা। করোনার কোন ঔষুধ আবিস্কৃত হয়নি পৃথিবীর কোথায়ও। স্বাস্থ্যবিধি মেনে দুরত্ব বজায় রাখাই এখনো একমাত্র করনীয়। এভাবেই অনেক দেশ সংক্রমন নিয়ন্ত্রনে এনেছে। বাংলাদেশেও একই ভাবে দুরত্ব নিশ্চিত করতে লক ডাউন দিয়েছে বার বার। নেতারা এই লক ডাউন নিয়েও অসত্য বক্তব্য দিয়েছে এবং দিচ্ছে। বিধিনিষেধ মান্য না করার কারনে সংক্রমন বৃদ্ধি পেয়েছে সঙ্গতভাবেই। এই সংক্রমন বৃদ্ধির কারনওকি নেতারা এড়াতে পারে? করোনায় যাদের মৃত্যু হয়েছে তাদের পরিবার যদি এই নেতাদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করতে চায় আদালতকে অনুমুতি দিতে হবে!
গতকালও কোকোর মৃত্যু দিবসে বি এন পি’র মহা সচীব ফখরুদ্দিন আলমগীর বক্তব্য দিতে গিয়ে বলেছেন ” সরকার করোনা মোকাবেলায় সম্পুর্নভাবে ব্যর্থ হয়েছে”। আসলে বি এন পি সরকারের কোন সাফল্যকেই মানতে চায়না। সরকারের ব্যর্থতা খোঁজাই তাদের একমাত্র রাজনীতি। সরকারকে পদ ত্যগেরও দাবী জানিয়েছে ফখরুদ্দিন আলমগীর। এত বিপর্যয় দেখেও এই নেতাদের মিথ্যাচার বন্ধ হয়নি। বাংলাদেশে এই অপপ্রচারনাই অন্যতম প্রধান অন্তরায়। দেশের উন্নয়ন কিংবা করোনা নিয়ন্ত্রন কোনটাই সম্ভব হবেনা যদি রাজনৈতিক নেতারা মিথ্যাচার বন্ধ না করে। একজন রাজনৈতিক নেতাকে প্রথমে জনগনের বন্ধু হতে হবে।
আজিজুর রহমান প্রিন্স,
কলামিস্ট, ঢাকা, বাংলাদেশ।