বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সংগঠন ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ করার দাবিতে আন্দোলনে যাচ্ছে শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সোমবার (১৪ অক্টোবর) পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে তারা।
এ সময়ের মধ্যে যদি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা না হয় আগামী মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) চট্টগ্রাম থেকে কঠোর আন্দোলন শুরু করার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সম্প্রতি একাধিক স্থানে বক্তব্যকালে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়ে আসছেন। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে এক সপ্তাহের মধ্যে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ ঘোষণা করে নিষিদ্ধ করতে হবে।
মাহমুদুর রহমানের বেঁধে দেওয়া আলটিমেটাম শেষ হচ্ছে আগামীকাল সোমবার। এর পর থেকে তার নেতৃত্বে এই দাবিতে মাঠে নামতে পারে অনেকে।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দেশের প্রায় সবগুলো বিশ্ববিদ্যালয় ছিল ছাত্রলীগের দখলে।
সরকারের বিভিন্ন এজেন্ডা বাস্তবায়নে ছাত্রলীগ অন্য কোনো ছাত্রসংগঠনকে মাঠের রাজনীতিতে অংশ নিতে দেয়নি বলে অভিযোগ। সর্বশেষ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা শুরু হয় ছাত্রলীগের মাধ্যমে। এর পর থেকে সংগঠনটিকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ বলে অ্যাখ্যা দেন শিক্ষার্থীরা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ জানিয়েছেন, কোটা আন্দোলন ছিলো সাধারণ শিক্ষার্থীদের অধিকারের আন্দোলন। কিন্তু ছাত্রলীগ এই যৌক্তিক আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ না করে বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলো। তারা আধুনিক ও দেশীয় অস্ত্র ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের প্রতিহত করার চেষ্টা করেছে। তারা আমাদের বোনদেরকে রক্তাক্ত করেছে, ভাইদেরকে গুলি করে শহীদ করেছে। এটি কোনো ছাত্র সংগঠন না, ছাত্রলীগ একটি সন্ত্রাসী সংগঠন।
তিনি বলেন, ১৬ জুলাই চট্টগ্রামে শিক্ষার্থীদের শান্তিপুর্ণ কর্মসূচিতে সশস্ত্র হামলার মাধ্যমে রক্তপাতের সুত্রপাত ঘটায় ছাত্রলীগ। এরপর ৩৬ জুলাই পর্যন্ত প্রায় প্রতিদিন শিক্ষার্থীদের উপর নির্মম হামলা চালিয়ে চট্টগ্রাম, ফেনী ও কুমিল্লা ২০ জনের বেশি শিক্ষার্থীকে নিহত করা হয়। তাই এই সন্ত্রাসী সংঘটনটিকে নিষিদ্ধে আমরা চট্টগ্রাম থেকেই আন্দোলন শুরুর ঘোষণা দিয়েছি। এটি শিক্ষার্থীদের প্রাণের দাবি।
তিনি আরও বলেন, ছাত্রলীগ গত ১৬ বছর দখল দারিত্বের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোকে মিনি ক্যান্টনমেন্টের মত ব্যবহার করেছে। যারা দূর দূরান্ত থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার জন্য আসতো তাদের হলে থাকতে বাধ্য হয়ে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কাজে অংশ নিতে হতো। ছাত্রলীগের হলরুম-গেস্টরুম কালচার তাদেরকে অমানুষ হিসেবে গড়ে তুলেছিল। তাদের হাতে আবরার ফাহাদের মত মেধারীদের প্রাণ দিতে হয়েছে।
ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধের আল্টিমেটাম দিয়ে তিনি বলেন, এই ছাত্রলীগ নামে সংগঠনকে আগামী সোমবারের মধ্যে যেন নিষিদ্ধ করা হয়। যদি না হয়, মঙ্গলবার থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রামের রাজপথে নামবে এবং আওয়ামী লীগের যতগুলো সংগঠন এবং তাদের দোসর রয়েছে তাদেরকে নিষিদ্ধের দাবিতে আন্দোলন শুরু করবে।
ডিবিএন/ডিআর/তাসফিয়া করিম