পুলিশ মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ বলেছেন করোনার মৃত্যু ঝুঁকি কোনো জুজুর ভয় নয়। তিনি ঈদে গ্রামে না গিয়ে যে যেখানে আছে সেখানেই থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। তাই চেকপোস্টে থেমে যান, ফিরে আসুন, নিজেকে অন্যের ঘাতক বানাবেন না বললেন আইজিপি।
মঙ্গলবার (১৯ মে) সকালে রাজারবাগ পুলিশ অডিটোরিয়ামে করোনাভাইরাস ও ঈদুল ফিতর নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত ২৪টি জেলা করোনামুক্ত ছিলো। যখনি নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা ও গাজীপুর থেকে মানুষ বিভিন্ন প্রান্তে ছুটে গেলো সঙ্গে সঙ্গে পুরো দেশ আক্রান্ত হয়ে গেলো। আবার যদি এভাবে ছুটে যাওয়া হয় তাহলে দ্বিতীয় দফা আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
“আপনারা কিন্তু করোনাদূত হয়ে পরিবার, গ্রামবাসীর কাছে উপস্থিত হবেন। শুধু করোনা হয় আপনি মৃত্যুদূত হয়েও পরিবার বা গ্রামবাসীর কাছে আবির্ভূত হতে পারেন। আদরের পরিবার, কাছের জন, গ্রামবাসী, শহরবাসীকে বিপদে ফেলবেন না”।
সরকারি নির্দেশ উপেক্ষা করে ঈদে ঘরে ফেরা মানুষের ঢল দেখে উদ্বেগ প্রকাশ করে আইজিপি বলেন, এই মুহূর্তে ফেরিঘাটে ৩ নং সতর্ক সংকেত চলছে। এর মধ্যে অনেকে ফেরি ঘাটে ভিড় করছেন। নানা চোড়াই পথে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী পার হওয়ার চেষ্টা করছেন। আমরা নৌপুলিশকে বলেছি এগুলো প্রতিহত করতে। যারা ফেরিঘাটে চলে গেছেন, তাদের বলবো ফিরে আসুন। প্রয়োজনে আপনাদের ফিরে আসার ব্যবস্থা পুলিশ করবে।
সবার কাছে সহযোগিতা চেয়ে মিস্টার আহমেদ বলেন, “যেখানে চেকপোস্ট দেয়া হয়েছে সেখানে থেমে যান, ফিরে আসুন। আসেন আমরা দেশকে নিরাপদ রাখি। এই ঈদে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন থাকলেও আগামী ঈদুল ফিতর যেনো পরিবারের সাথে উদযাপন করতে পারি সেই পথকে যেনো উন্মুক্ত রাখি”।
তিনি বলেন সরকারের এই পলিসি বা নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য তারা সর্বাত্মক চেষ্টা করবেন।
ঈদ জামাত খোলা জায়গায় নয় উল্লেখ আইজিপি বলেন, ঈদের নামাজ মসজিদে পড়ুন। যতটা সম্ভব কম সময় থাকুন। বাসা থেকে সুরক্ষার সব প্রস্তুতি নিয়ে যাবেন। আর দয়া করে ঈদের দিন কেউ সাইটসিং এ যাবেন না। মার্কেটে এই দোকান, ওই দোকান ঘুরে শপিং না করে স্বল্প সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করে ঘরে ফিরে যান। অনাকাঙ্ক্ষিত চলাচল বন্ধে পুলিশ সার্বক্ষণিক কাজ করে চলেছে।
করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অন্য দেশ কিভাবে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে তা আমাদের বিবেচ্য বিষয় না। আমরা কপি পেস্ট করছি না। স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যেভাবে গাইডলাইন দিচ্ছে আমরা সেভাবেই কাজ করছি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারি রয়েছে (সোশ্যাল ওয়াচ) উল্লেখ করে পুলিশ প্রধান বলেন, আমরা নিয়মিত সোশ্যাল ওয়াচ করছি। কেউ যদি সোশ্যাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য দেশবিরোধী প্রচারণা চালায়, তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ সময় গুজব প্রতিরোধে মূলধারার গণমাধ্যম ভূমিকার প্রশংসা করে তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে গুজব প্রতিরোধে মূলধারার গণমাধ্যমগুলোর প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করছে। এ ধারা অব্যাহত রাখতে আহ্বান জানান ড. বেনজীর আহমেদ।
ডিজিটাল বাংলা নিউজ/ ডিআর/এমআরবি