সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বীর নিবাস পেয়েছেন এক মুক্তিযোদ্ধার পরিবার। তবে বাড়ির চলাচলের একমাত্র রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ায় চলাফেরার সমস্যায় রয়েছে পরিবারটি। পরিবারটির অভিযোগ তারা অবরুদ্ধ হয়ে আছে। বীর নিবাসের সামনে প্রতিবেশী নুরনবী ও আনোয়ার হোসেন সবুর নিজেদের জায়গা দাবি করে চলাচলের রাস্তায় গড়ে তুলেছেন টিনের দেয়াল।ঘটনাটি সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জের ব্রহ্মগাছা ইউনিয়নের কয়ড়া এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম আব্দুল আজিজের বীর নিবাসে। এ নিয়ে বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ করেও বিষয়টি সমাধান হয়নি। বসবাসের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করে দিতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন পরিবারটি।
সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, মুক্তিযোদ্ধা এস এম আব্দুল আজিজ এক ছেলে ও শারীরিক প্রতিবন্ধী স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস করতেন ওই বীর নিবাসে। কিন্তু তাদের বাড়ি থেকে বের হওয়ার রাস্তা নেই।
বীর নিবাসের সামনে টিন দিয়ে দেওয়াল তুলেছেন প্রতিবেশী নুর নবী ও আনোয়ার হোসেন সবুজ।বীর নিবাসে বসবাসরত বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম আব্দুল আজিজ বলেন, ‘দীর্ঘদিন থেকে আমরা প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া এই বাড়িতে বসবাস করছি। কোনো কারণ ছাড়াই আমার পরিবারের উপর পূর্ব থেকে ষড়যন্ত্র করে আসছে একটি চক্র। বীর নিবাস হওয়ার পর থেকে তারা আমাকে নানাভাবে হয়রানি করে আসছে।’ বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম আব্দুল আজিজের ছেলে বলেন, ‘আমার বাবা এ দেশের জন্য যুদ্ধ করেছেন। সরকার আমার বাবাকে বীর নিবাস করে দিয়েছেন। কিন্ত আমাদের মনে হয় বীর নিবাসে থাকা হবে না। বীর নিবাস থেকে বের হতে পারছি না। বাড়ির সামনে টিনের প্রাচীর। বার বার অঙ্গীকার সত্বেও চলাচলের রাস্তা পাচ্ছি না।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বীর নিবাসটিতে বসবাসের শুরুর পর পরই ২০১৯ সালে বাড়ির সামনে স্থানীয় নুর নবী ও আনোয়ার হোসেন সবুর এর বিরুদ্ধে বাড়ীর সম্মুখে চলাফেরার রাস্তা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির অভিযোগ করেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ ও উপজেলা প্রশাসনের নিকট।তখন বিষয়টি আমলে নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম আদালতের মাধ্যমে বিষয়টির মিমাংসা হয়।দীর্ঘদিন মীমাংসার পর আবারো মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের উপর নানা ভাবে হয়রানি করে আসছে।সম্প্রতি একটি মিথ্যা মামলাও করা হয়েছে মুক্তিযোদ্ধা এই পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে।
অভিযুক্ত নুর নবী ও আনোয়ার হোসেন সবুরের নিকট সরেজমিনে গেলে তাদের বাড়িতে পাওয়া যায় নি। তাদের মা জানান,জমি জমা সংক্রান্ত বিষয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম আব্দুল আজিজের সাথে আমাদের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। আমাদের জমির কাগজ পত্র ঠিক করে দিলে আমরা তাদের চলাচলের রাস্তা খুলে দিবো। আমাদের জায়গায় করা রাস্তায় আমরাই প্রাচীর দিয়েছি।
ব্রহ্মগাছা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম ছরওয়ার লিটন বলেন, আসলে মুক্তিযোদ্ধার ওই পরিবারের চলাচলের সমস্যার দ্রুত সমাধান করার জন্য এর আগে একাধিকবার শালিসের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু জমি জমা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে উভয় পক্ষই ঘটনাটি সমন্বয় করে নিচ্ছেন না।এক্ষেত্রে আমাদের কিছু করার থাকে না।
এ বিষয়ে রায়গঞ্জ থানার অফিসার্স ইনচার্জ ওসি হারুন অর রশিদ বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম আব্দুল আজিজের বাড়িতে চলাচলে বাঁধা সৃষ্টির কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আজ ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | হেমন্তকাল | ২০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি | রাত ১০:৫৪ | শুক্রবার
ডিবিএন/এসই/ মোস্তাফিজুর রহমান বাপ্পি