চট্টগ্রাম প্রতিনিধিঃ চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড থানাধীন জঙ্গল সলিমপুর এলাকায় সন্ত্রাসী মশিউরের আস্তানায় ব্যাপক অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে র্যাব-৭ এর একটি দল। এ সময় পাঁচ চিহ্নিত সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযানকালে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে র্যাব সদস্যদের গুলিবিনিময় হয়েছে। গত শনিবার রাত সোয়া ৯টায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এ অভিযান চালায় বলে উল্লেখ করে র্যাব।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন রফিকুল ইসলাম মালু (৪১), মো. সিরাজুল ইসলাম (৩৪), মো. হাসান (৩৫), জামাল শেখ (৪৭) ও মিজানুর রহমান কদর। তাদের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের একাধিক থানায় মামলা রয়েছে।
আজ রোববার দুপুর ১২ টায় বাংলাদেশ জার্নালকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) নুরুল আবছার।
র্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক জানান, তারা দীর্ঘ দিন ধরে সীতাকুণ্ড থানার জঙ্গল সলিমপুর এলাকায় নিজেদের প্রভাব বিস্তার, চাঁদাবাজি, সরকারি জমি প্লট আকারে লোক জনের কাছে বিক্রি করে টাকা আদায় করে। ওই এলাকায় গরিববসতি লোকজনের কাছ থেকে বিদ্যুতের মিটার না দিয়ে মশিউরের নিজ মিটারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে বিদ্যুতের সরকারি মূল্যের চেয়ে অনেক বেশি টাকা আদায় করতো। এছাড়াও ওই এলাকায় ছিনতাই, চাঁদাবাজি এবং নিজেদের অপরাধকর্ম চালিয়ে যাওয়ার স্বার্থে মশিউর ও তার ছেলে শিবলু একটি সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তোলেন।
নুরুল আবছার আরও জানান, গ্রেপ্তারদের নিয়ে অস্ত্র উদ্ধারের ব্যাপক অভিযান চালানো শুরু করতেই মশিউরের ছেলে শিবলুর নেতৃত্বে একদল অস্ত্রধারী ইট-পাটকেল, লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে র্যাবের ওপর আক্রমণ করে। তারা গ্রেপ্তারদের ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে র্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি বর্ষণ শুরু করে সন্ত্রাসীরা। র্যাব পাল্টা জবাব দিলে সন্ত্রাসীরা গুলি করতে করতে দুর্গম পাহাড়ের দিকে পালিয়ে যায়। এ সময় র্যাব মোট ১২৯ রাউন্ড গুলি বর্ষণ করে। এরপর রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত মশিউরের আস্তানায় তল্লাশি চালায় র্যাব। এ সময় সন্ত্রাসীদের আক্রমণে কয়েকজন র্যাব সদস্য কিছুটা আঘাতপ্রাপ্ত হন। অভিযানকালে ১০টি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র, ১টি বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র, ১টি ধারালো ছোরা এবং মোট ২২ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া আস্তানা থেকে মিলিটারি গেজেট, মিলিটারি পোশাক, মিলিটারি বাইনোকোলার ও অবৈধ ধাতব মুদ্রা উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় পৃথক তিনটি অস্ত্র মামলা ও র্যাবের ওপর আক্রমণ, সরকারি কাজে বাধা দেয়ার কারণে একটি র্যাব এসোল্ট মামলা ও মিলিটারি উপকরণ রাখা ও অবৈধভাবে ধাতব মুদ্রা রাখায় পৃথক পৃথক মামলা হয়েছে বলেও জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা।
এছাড়াও গ্রেপ্তার রফিকুল ইসলাম মালুর বিরুদ্ধে নগরীর বায়েজিদ থানায় ১টি মামলা, সিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে ৫টি অস্ত্র মামলা, মো. হাসানের বিরুদ্ধে ৭টি, জামাল শেখের বিরুদ্ধে ১০টি, মিজানুর রহমান কদরের বিরুদ্ধে ১০টিরও অধিক মামলা রয়েছে বলে জানান র্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) নুরুল আবছার।