নওগাঁর আত্রাইয়ে প্রধান নদী আত্রাই নদী ও গুড় নদী ও বিলসুতি, মাগুড়া বিলে, খালে পানি কমে গেছে। পাশাপাশি বিভিন্ন ছোট-বড় খাল ও জলাশয় শুকিয়ে গেছে। খাল বিলে পানি কমে যাওয়ায় মাছ ও দূলর্ভ হয়ে উঠেছে। এতে আয়-রোজগার বন্ধ হওয়ার পথে উপজেলার জেলেদের।
মৎস্য কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সরকারী পুকুরের সংখ্যা তিন হাজার চার শত চৌদ্দটি ও খালের সংখ্যা পাঁচটি ছোট বড় খাল রয়েছে। এসবের মধ্যে সামান্য পানি আছে কেবল লালপাড়া, নওদুলী, ইসলামগথী, ডুবাই খালে। কিন্তু খাল চারটিতে পানির স্রোত না থাকায় মাছ ধরতে পারছে না জেলেরা।
উপজেলার বুক চিরে বয়ে যাওয়া আত্রাই নদী ও খাল গুলোতে পাঁচ বছর পূর্বেও সারা বছরই পানি থাকতো। জেলেদের আয়- রোজগারের ভরসা এই দুই নদী ও খাল বিল। কিন্তু চলতি শুস্ক মৌসুমে এই দুই জলাশয়ে পানি শুকিয়ে যাওয়ায় জেলেরা পড়েছেন মহা কষ্টে। আয় রোজগারের পথবন্ধ হওয়ায় অনেকে পেশা বদল করে অন্য কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন।
পাঁচুপুর গ্রামের মৎস্যজীবি সভাপতি ভূষন চন্দ্র হালদার (৬৫) বলেন, এবার আমাদের নিদারুন কষ্ঠ হচ্ছে। কোন খাল বিল এমনকি আত্রাই নদী ও গুড় নদীতে পর্যন্ত পানি নেই। বেকার বসে দিন যাপন করতে হচ্ছে। আমাদের অন্য কোন কাজ করার অভিজ্ঞতাও নেই। মৌসুম এলেই কেবল দুই বেলা ঠিকমতো খাবার ঝুটছে।
পাঁচুপুর জেলে পাড়াগ্রামের বীরেন দাশ জেলে (৩৮) বলেন, এখন ফেরি করে বরফ দেওয়া নদীর মাছ বিক্রি করি। ছোটখাটো খাল ও নদীতে এখন পানি নাই। তাই সংসার চালাতে শহর ও আত্রাই মাছের আড়ৎ থেকে মাছ ক্রয় করে গ্রামে কেজি দরে বিক্রি করি। এতে যা লাভ হয় তা দিয়ে কোন মতে সংসার চালাই।
পার পাঁচুপুর গ্রামের জেলে সুজয় হালদার (৩২) বলেন, আগে খাল-নদীতে জাল ফেলে মাছ পেতাম। মাছবিক্রি করে ভালোমতো সংসার চালাতাম এখন তো জাল ফেলার জায়গাই নাই। পরিবার নিয়ে খুব কষ্টে আছি এখন আমি সংসার-পরিজন নিয়ে চলতে না পারায় কাঠ ফার্নিচারে কাজ করছি।
সাহেবগঞ্জ গ্রামের জেলে স্বপন কুমার হালদার (৩৫) বলেন, নদী খালে বিলে পানি না থাকায় নদীতে আমরা মাছ ধরতে না পেরে পরিবার পরিজন নিয়ে একবেলা খেয়ে না খেয়ে থাকতে হচ্ছে কোন উপায় না পেয়ে আত্রাই আড়ৎ থেকে মাছ কিনে ব্যবসা করতে হচ্ছে এত যা লাভ হয় তা দিয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে কোন মতো বেঁচে আছি।
আত্রাই উপজেলা সিনিয়র মৎস্য অফিসার পলাশ চন্দ্র দেবনাথ সাংবাদিকগনকে জানান, আত্রাই নদী, গুড়নদী, বিলসূতি বিল, মাগুড়া বিল সহ বিভিন্ন ছোট-বড় খালে পানি না থাকায় জেলেরা এখন মাছ পাচ্ছেন না। এ জন্য তাদের জীবন- জীবিকার পথ বন্ধ হওয়ার উপক্রম। বিকল্প কর্মসংস্থান না থাকায় তাদের মধ্যে বেকারের সংখ্যাও ক্রসেই বাড়ছে। জেলেদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছেন। তাই বর্তমানে সমস্যার বিষয়ে সরকার ব্যবস্থা নেবে। বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
ডিবিএন/এসই/ মোস্তাফিজ বাপ্পি