কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ কর্তৃপক্ষের সামনে অন্যের সন্তানকে নিজের সন্তান হিসেবে উপস্থাপন করে মাতৃত্বকালীন ছুটি ভোগ করা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আলোচিত শিক্ষিকা আলেয়া সালমাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার মনিয়ারহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত ছিলেন তিনি।
সম্প্রতি চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি বিভিন্ন পত্রিকা ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রকাশিত হলে প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা মেলায় নড়েচড়ে বসে জেলা শিক্ষা বিভাগ।
অনৈতিক কর্মকাণ্ডের জন্য আলোচিত ওই শিক্ষিকা আলেয়া সালমাকে সরকারি কর্মচারী (শৃংখলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮ এর (৩) ধারা মোতাবেক সরকারি চাকুরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেন কুড়িগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার। পত্র-পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশের পর গত ৪ সেপ্টেম্বর সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ কে এম তৌফিকুর রহমানকে চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি তদন্তের দায়িত্ব দেন জেলা শিক্ষা অফিসার।
তদন্তে দুর্নীতির সত্যতা মেলায় অভিযুক্ত শিক্ষিকাকে গত ৬ সেপ্টেম্বর সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো: শহিদুল ইসলাম। ৭ সেপ্টেম্বর থেকে ওই আদেশ কার্যকর হবে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো: শহীদুল ইসলাম শিক্ষিকাকে বরখাস্তের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, প্রাথমিকভাবে ঘটনার সত্যতা পেয়েছে তদন্ত কমিটি। তাই তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজু করা হয়েছে। এছাড়াও এই ছুটি নেবার বিষয়ে যারা ওই শিক্ষিকাকে সহযোগিতা করেছেন তাদেরকে বিভাগীয় শাস্তির আওতায় আনা হবে বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষিকার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য-আলেয়া সালমা কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার মনিয়ারহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষিকা। তার স্বামী শফি আহমেদ স্বপন বগুড়ার গাবতলী উপজেলা কাগইল ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। তিনি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক আহ্বায়ক।
অভিযুক্ত শিক্ষিকা তার নিকটতম এক প্রতিবেশীর শিশুকে নিজের নবজাতক সন্তান হিসেবে কর্মকর্তাদের সামনে উপস্থাপন করে চলতি বছরের ১৪ মার্চ থেকে ছয় মাসের মাতৃত্বকালীন ছুটিতে ছিলেন। বর্তমানে স্বামীর সঙ্গে বগুড়ার গাবতলী কাগইল ইউনিয়নের বাড়িতে বসবাস করছেন তিনি। ওই শিশুটি তাদের প্রতিবেশী আনিছুর রহমান পাশা ও শারমীন দম্পতির বলে জানা গেছে।