অলিউর রহমান নয়ন, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ কুড়িগ্রামের নুরনবী হলোখানা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে জমি বিক্রির কথা বলে ১৫ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।
ভুক্তভোগী হারুন অর রশীদ অভিযোগে জানান, আমি নুরনবী হলোখানা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে পিয়ন হিসেবে কর্মরত আছি। প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম পারিবারিক সমস্যার কারণে বিগত ২৯/০৬/২০০৮ সালে তার স্ত্রীর নামীয় জেলা শহরের কৃষ্ণপুর মৌজায় অবস্থিত দুই কক্ষ বিশিষ্ট বাড়ীসহ ৯শতক জমি মোট ৩০ লক্ষ টাকায় বিক্রির কথা চুড়ান্ত করেন আমার ছোট ভাই হাসান দেওয়ানের সাথে। সে প্রেক্ষিতে আলোচনা করে উক্ত প্রধান শিক্ষককে নগদ ১৫ লক্ষ টাকা প্রদান করা হয়। এসময় বায়না রেজিস্ট্রির কথা বললে তিনি একেবারে দলিল রেজিস্ট্রি করে দিবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। পরবর্তীতে পারিবারিক সমস্যা মিটে যাওয়ার পর নুরুল ইসলাম স্ত্রীর নামীয় বাড়ীসহ জমি বিক্রি করতে অস্বীকার করেন। এরপর টাকা ফেরত দিতে গড়িমশি শুরু করেন।
পরবর্তীতে কয়েকবার সালিশ বৈঠক করার পর বিগত ২৫/০৫/২০২২ তারিখে সোনালী ব্যাংক কুড়িগ্রাম শাখায় তার নিজস্ব হিসেব নম্বরের বিপরীতে ১৫ লক্ষ টাকার একটি চেক প্রদান করেন। কিন্তু একাউন্টে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় চেকটি ব্যাংক ডিজঅর্নার হয়। পরে আমার ভাই হাসান দেওয়ান বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে ধর্ণা দিয়েও কোন ফলাফল না পেয়ে বাধ্য হয়ে গত ০৬/১২/২২ তারিখে নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে চেক জালিয়াতির জন্য লিগ্যাল নোটিশ প্রদান করেন।
✪ আরও পড়ুন: ফুলবাড়ীতে গাঁজা ও মোটরসাইকেলসহ ২ যুবক গ্রেফতার
এতে প্রধান শিক্ষক ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে চাকুরীচ্যুতির নিমিত্তে দুদিন পর গত ৮/১২/২২ তারিখে আমার বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের গাছ কর্তন, জিনিষপত্র তছরুপ, জমি দখল, পুকুরে মাছধরা, পুকুর খনন করে মাটি বিক্রির কল্পিত অভিযোগ এনে বিদ্যালয়ের সভাপতির কাছে লিখিত অভিযোগ প্রদান করেন এবং গত ১৫/১২/২২ তারিখে উক্ত অভিযোগের ভিত্তিতে কেন আমার বিরুদ্ধে বেসরকারি চাকুরী বিধি অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হইবে না মর্মে আবারও শোকজ লেটার প্রদান করেন। শুধু এতেই তিনি ক্ষান্ত হননি আমার ও আমার ভাইকে জব্দ করতে গত ০৬/০৬/২০২২ তারিখে মানিব্যাগ থেকে চেক চুরির অভিযোগ এনে ০৮/০৬/২২ তারিখে কুড়িগ্রাম সদর থানায় একটি জিডি দায়ের করেন।
কুড়িগ্রাম সদর থানার মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শাহিনুর রহমান চেক চুরির ঘটনা সরজমিনে তদন্ত পূর্বক গত ২৪/১১/২২ তারিখে ফাইনাল রিপোর্ট দাখিল করেন। রিপোর্টে তিনি উল্লেখ করেন যে, আরজিতে বর্ণিত আসামী হাসান দেওয়ান ও হারুন অর রশীদের বিরুদ্ধে মামলার ঘটনার সাথে সংশ্লিস্টতার বিষয়ে কোন সাক্ষ্য প্রমাণ পাওয়া যায় নাই।
✪ আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে মুক্তিযোদ্ধা গেজেট থেকে নাম বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন
হারুন অর রশিদের ছোট ভাই হাসান দেওয়ান বলেন, একদিকে আামাকে জমি বিক্রির ১৫ লক্ষ টাকা ফেরৎ দিচ্ছেন না, অপর দিকে বড় ভাইকে চাকুরী থেকে বরখাস্তর চেষ্টা করছেন। আমি সুবিচারের জন্য আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি।
✪ আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে ইয়াবাসহ ইউপি সদস্য গ্রেফতার
নুরনবী হলোখানা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম তার বিরুদ্ধে আণিত অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, আমার নামে মামলাটিও সাজানো। এ ব্যাপারে আদালতে পাল্টাপাল্টি মামলা রয়েছে।
ডিবিএন/এসডিআর/মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান