ঈশাত জামান মুন্না।।
লালমনিরহাট প্রতিনিধি : জেলা পুলিশ সুপার এর সুদক্ষ নেতৃত্বে বেশকিছুদিন আগেও মাদকের ব্যবসা কালীগঞ্জে সহনীয় পর্যায়ে লক্ষ করা গেছে। কিন্তু বেশকিছুদিন থেকে আবার কালীগঞ্জের সীমান্তবর্তী এলাকা গুলোতে মাদক সেবীদের আনাগোনা বেড়ে গিয়েছে দাবী সীমান্তবর্তী এলাকাবাসীর। সীমান্তবর্তী উপজেলা হওয়া পুলিশের ব্যপক অভিযানের ফলে এবং বেশকিছু মাদক ব্যবসায়ী জেলা পুলিশ সুপার এর মাধ্যমে আত্নসমর্পন করলে বাকী ব্যবসায়ীগন কোনঠাসা হয়ে পড়ে। আত্নসমর্পনকারী গুটিকয়েক মাদক ব্যবসায়ীগন ও পুনরায় মাদকের সাথে সম্পৃক্ত হয়েছে বলে পুলিশের কাছে তথ্য আছে।
বেশ কিছুদিন অতিবাহিত হওয়ার পর আবারো সচল হয়ে উঠেছে মাদক ব্যবসায়ীগন এবং মাদক চোরাচালান চক্রগুলো। তন্মধ্যে অন্যতম মাদক ব্যবসায়ী উপজেলার চন্দ্রপুর ইউনিয়ন এর লতাবর গ্রামের মজিবর রহমান এর পুত্র মনির অন্যতম। নিজ বাড়ীর আশেপাশে রমরমা গাঁজা, ফেন্সিডিল, ইয়াবা বিক্রি করছে।
কুখ্যাত এই মাদক ব্যবসায়ী মনির জেলার মধ্যে অন্যতম সবচেয়ে বড় মাদকব্যবসায়ী বলে জানা গেছে। তার বিরুদ্ধে এ যাবত দশটি (১০) টি মাদক মামলার গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি রয়েছে এবং আরো ১০ টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে বলে জানা যায়। সীমান্তবর্তী এলাকায় মনিরের বিশাল একটি মাদকচোরাচালান চক্র রয়েছে বলে জানা গেছে। মনির সেই চক্রের মাধ্যমে ভারতীয় সীমান্ত দিয়ে অবৈধ মাদকদ্রব্য গাঁজা, ফেন্সিডিল ও ইয়াবা নিয়ে এসে খুচরাভাবে নিজ বাড়ীতে বিক্রি করে এবং চক্রের মাধ্যমে লালমনিরহাট জেলার বিভিন্ন স্থানে পাইকারীভাবে বিক্রিকরে আসছে পাশ্ববর্তী জেলা রংপুরেও একাধিক চক্রের মাধ্যমে মাদক সরবরাহ করে এই মনির। মনিরের মাদক চোরাচালান চক্রের হাতিবান্ধা ও কালীগঞ্জ উপজেলার আনুমানিক বিশ (২০) জন ছোট বড় মাদক ব্যবসায়ীর তথ্য পাওয়া গেছে। মনিরের এই বিশাল চক্রের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে হাতিবান্ধা ও কালীগঞ্জ থানাসহ পাশ্ববর্তী রংপুর জেলায় একাধিক মাদক মামলা রয়েছে।
কে এই ‘মনির, কুখ্যাত মাদক সম্রাট মনির হিসাবে পরিচিতির কারন কি, অনুসন্ধানে মনির সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে এসেছে। সেইসাথে মনিরের মাদক ব্যবসার সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত সহায়তাকারী হিসাবে বেশ কিছু ব্যক্তির নাম উঠে এসেছে। অনুসন্ধানের শুরুতে জানা গেছে মাদকের ব্যবসার সুত্র ধরে মনির প্রথম বিবাহকরে উপজেলার সীমান্তবর্তী গোড়ল ইউনিয়ন এর লোহাকুচি গ্রামে। অতঃপর মাদক পরিবহনের সাথে যুক্ত হওয়ার পর রংপুরে মাদক সরবরাহ করাকালীন মিঠাপুকুর থানাধীন জৈনক মাদক ব্যবসায়ীর সুন্দরী মেয়েকে প্রথম স্ত্রীর কথা গোপন রেখে ২য় বিবাহ করে। প্রতিনিয়ত মাদকের বড়বড় চালান কালীগঞ্জ থেকে বিভিন্নভাবে রংপুরে পাঠিয়ে খুব অল্প সময়ের মধ্যে পয়সাওয়ালা বনে যান মনির। জানা গেছে পয়সা ওয়ালা বনে যাওয়ার পর মনিরের ব্যবসার প্রসার ঘটতে থাকে শুরু করেন ফেন্সিডিল এর পাশাপাশি ইয়াবার ব্যবসা। প্রতিনিয়ত তার বাসায় আসতে থাকে মাদক সেবিদের বড়বড় মোটরবাইক, অল্পকিছুদিনেই এলাকাবাসী মাদক সেবিদের আনাগোনায় অতিষ্ঠহয়ে ওঠে মাদকসেবিদের আনাগোনার কারনে লতাবর এলাকার কিশোরী নারীসহ যুবতীরাও বাড়ির বাইরে আসতো না। এলাকাবাসী অতিষ্ঠহয়ে এক পর্যায় লতাবর গ্রামের তমিজ উদ্দিন এর পুত্র আনোয়ার এলাকার বেশকিছু যুবক কে সাথে নিয়ে কুখ্যাত মাদকব্যবসায়ী মনিরকে তার মাদক ব্যবসা বন্ধ করার জন্য বলে,অতঃপর তার কিছুদিন পর মনির তার সিন্ডিকেটের লোকজনসহ লতাবর আমতলায় আনোয়ারকে আক্রমণ করলে এলাকাবাসী ক্ষুব্ধহয়ে মনিরকে বেধক মারধরকরে আটকিয়ে রেখে থানায় খবর দিলে তৎকালিন চন্দ্রপুর ইউনিয়নের দায়ীত্বে থাকা এসআই নুরুল হক গিয়ে মনিরকে উদ্ধার করে। গ্রামবাসীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী মনিরের নামে একাধিক মাদক মামলার গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি থাকার পরও পুলিশ মনিরকে এলাকাবাসীর হাতে থেকে উদ্ধার করে নিয়ে ছেড়ে দিয়েছে। এলাকাবাসীর প্রশ্ন কিসের জন্য কিসের ভিত্তিতে মনিরকে ছেড়ে দিয়েছিলেন তৎকালিন কালীগঞ্জ থানার এসআই নুরুল হক। লতাবর এলাকার নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক যুবক জানায় গনপিটুনি খাওয়ার পর মনির আরো সোচ্চারহয়ে ওঠে এবং এক্ষেত্রে মনিরকে সাহায্যে করেন কতিপয় অসাধু মহল। মনিরকে গনপিটুনি দেওয়া সেই যুবকে কে তখনি মনির হুমকী দিয়েছিলো। যার ফলস্রুতিতে গত ৮ মে সন্ধা বেলায় চাপারহাট বাজার নিজ দোকান থেকে আনোয়ার এর বাবার সামনে মনিরের ইশারায় মদতে এসআই রেজাউল ইসলাম, এসআই মমিনুর রহমান আনোয়ারকে তুলে নিয়ে যায় এবং পরবর্তীতে চাঁদাদাবীকরে আনোয়ার এর বাবা তমিজ উদ্দিন এর কাছে। চাঁদা দেওয়ার অস্বীতৃ জানালে ইয়াবার মামলায় আনোয়ারকে চালান দেওয়ার হুমকি প্রদান করে এক পর্যায়ে তমিজ উদ্দিন সেটাতেও অস্বকৃতি জানালে ৮ মে রাতে ২০০ পিস ইয়াবাসহ আনোয়ারকে গ্রেফতার দেখিয়ে মামলা দায়ের করে যায় মামলা নং – ০৯, তারিখ- ০৮/০৫/১৯ ইং, ধারা- ২০১৮ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৩৬(১) পরেরদিন সকালবেলা আনোয়ারএর দোকান থেকে ৩ টি মোটরবাইক তুলে নিয়ে এসে চোরাই মোটরবাইক হিসাবে উল্লেখ করে। যার জিডি নং – ৩১৫ (০৮/০৫/১৯)। ঘটনা দুইটি মনিরের সাজানো এবং পরিকল্পিত হওয়ায় আনোয়ার এর পিতা তমিজ উদ্দিন বিভাগীয় ডিআইজি, জেলা প্রশাসক, এবং জেলা পুলিস সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তমিজ উদ্দিন এর দায়ের করা অভিযোগের বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার প্রেক্ষিতে নড়ে চড়ে বসেছে জেলার পুলিশ প্রশাসন।
উক্ত অভিযোগের বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার এসএম রশিদুল হক জানান, অভিযোগ পেয়েছি এবং অভিযোগ পাওয়ার পরেই অভিযুক্ত অফিসারগনকে অনত্র বদলী করা হয়েছে। পরবর্তী তে সঠিকভাবে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতিমধ্যে জেলা পুলিশ সুপার কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী মনিরকে ধরিয়ে দিতে পারলে পুরস্কার ও ঘোষনা করেছেন। তার ফেসবুক টাইমলাইন থেকে তার বক্তব্য টি হুবহু তুলে ধরা হলো,’সন্ধান দিন।
ছবির এই ব্যক্তির নাম মনির হোসেন।কালিগঞ্জ থানার চন্দ্রপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা মনিরের নামে একাধিক মাদক মামলার গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে। নজরে এলেই অনুগ্রহপূর্বক পুলিশকে অবহিত করুন। সঠিক সন্ধান দাতার পরিচয় গোপন রাখা হবে এবং উপযুক্ত পুরস্কার প্রদান করা হবে।
যোগাযোগ করুন:
০১৭৬৯৬৯১০৪৯ (এএসপি বি সার্কেল)
০১৭১৩৩৭৩৯৪৮ (অফিসার ইনচার্জ কালিগঞ্জ থানা)
০১৭১৩৩৭৩৯৪৫ (ডি আই ও-১ লালমনিরহাট)।
ধন্যবাদ,
কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী মনির এর বিশস্ত এক সহযোগীর নাম জয়নাল।দলগ্রাম ইউনিয়ন এর ৮ নং পাটোয়াটারী গ্রামের বাসিন্দা। জয়নাল সোর্স জয়নাল নামে বেশি পরিচিত। মনিরের ব্যবসার মধ্যে কেও কোন ব্যক্তি হস্তক্ষেপ করলে জয়নাল সেই ব্যক্তিকে পুলিশের মাধ্যমে হুমকি দামকি দিয়ে থাকে। জয়নাম মনিরের সহযোগী হওয়ার পর ও কালীগঞ্জ থানার কতিপয় পুলিশ অফিসার এর সাথে সর্বক্ষনিক ঘনিষ্ঠভাবে মিশতে দেখা যায়।
চন্দ্রপুর ইউনিয়ন এর উচ্চ বিদ্যালয় এর শিক্ষক ও সমাজসেবক আনিসার রহমান সীমান্তবর্তী চন্দ্র পুর ইউনিয়ন মাদকমুক্ত করার জন্য জেলা পুলিশ সুপার এবং কালীগঞ্জ থানার নব নিযুক্ত অফিসার ইনচার্জ এর নিকট জোড়ালো দাবী জানান।