কাতার বিশ্বকাপের শ্বাসরুদ্ধকর ফাইনালে নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময়ের শেষে ৩-৩ গোলে সমতা থাকলে ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানে ফ্রান্সকে ৪-২ গোলে হারিয়ে শিরোপা জিতে নেয় লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা। তবে ম্যাচ শেষে প্রশ্ন ওঠে আর্জেন্টিনার তৃতীয় ও মেসির করা দ্বিতীয় গোলটি নিয়ে।
ফিফার নিয়ম অনুযায়ী, গোলটি বাতিল হতে পারত বলে দাবি করেন অনেকেই। এবার সেই গোলটি নিয়ে কথা বললেন পোলিশ রেফারি সিমন মারচিনিয়াক।
“ডিজিটাল বাংলা নিউজ” অনলাইনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
আর্জেন্টিনার তিন যুগের দীর্ঘ অপেক্ষার প্রহর শেষ হয় কাতারে। দীর্ঘ ৩৬ বছর ধরে যে শিরোপার পানে চেয়েছিল আলবিসেলেস্তেরা, তার পূর্ণতা পায় লিওনেল মেসির হাত ধরে। বিশ্বকাপে নিজের শেষ ম্যাচে যত অপ্রাপ্তি ছিল, সবই মিটিয়েছেন আর্জেন্টাইন খুদে জাদুকর। সৃষ্টিকর্তা তাকে দিয়েছেন দু’হাত ভরে। এই আনন্দের মাঝেই মেসির গোল নিয়ে সমালোচনায় মাতেন ফরাসিরা।
লুসাইল স্টেডিয়ামে গত রোববার (১৮ ডিসেম্বর) কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল আর্জেন্টিনা-ফ্রান্স। দারুণ রোমাঞ্চে ভরা এই ফাইনালকে বলা হচ্ছে বিশ্বকাপ ইতিহাসের সেরা ফাইনাল।
ম্যাচের ৭৮ মিনিট পর্যন্ত ২-০ গোলে এগিয়ে থাকা আর্জেন্টিনার বিপক্ষে দুই মিনিটেরও কম সময়ে জোড়া গোল করে ফ্রান্সকে সমতায় ফেরান কিলিয়ান এমবাপ্পে। অতিরিক্ত সময়ে লিওনেল মেসির গোলে ফের এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা।
তবে গোলের হ্যাটট্রিক করে দলকে ফের সমতায় ফেরান পিএসজির ফরাসি ফরোয়ার্ড। পরে টাইব্রেকারে গড়ানো ম্যাচে কিংসলে ক্যোমান ও অউরিলিয়ে শুয়েমিনি পেনাল্টি মিস করলে ৪-২ ব্যবধানে জয় পায় আর্জেন্টিনা।
✪ আরও পড়ুন: কাতার বিশ্বকাপের সেরা গোল কোনটি, জানালো ফিফা
ম্যাচের পর ডালপালা মেলে বিতর্ক। ম্যাচের ১০৮তম মিনিটে রিবাউন্ড শট থেকে গোলটি করেন আর্জেন্টিনার অধিনায়ক মেসি। এটি ম্যাচে তার দ্বিতীয় গোল। তবে গোলটি নিয়ে শুরুতে জেগেছিল শঙ্কা। মেসি যখন গোলটি করেন সে সময় লাইন্সম্যান অফসাইড ফ্ল্যাগ তুলে সঙ্গে সঙ্গে ফের নামিয়ে নেন। তাতে শুরুতে গোলটি বাতিলের আশঙ্কা জাগলেও তা দ্রুতই দূর হয়।
এরপর ফরাসি গণমাধ্যম ‘এল-ইকুইপ’ দাবি করে, আর্জেন্টিনার তৃতীয় গোলটি অবৈধ ছিল। গোল হওয়ার সময় মাঠে আর্জেন্টাইন বদলি খেলোয়াড়রা ঢুকে পড়েছিলেন। ফুটেজে দেখা যায়, গোলটি করার সময় আর্জেন্টিনার অন্ততপক্ষে একজন খেলোয়াড় মাঠে ঢুকে পড়েছিলেন। নিয়ম অনুযায়ী, তাই গোলটি বাতিল হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু পোলিশ রেফারি সিমন মারচিনিয়াক কিংবা ম্যাচের অফিসিয়ালদের কারোরই দৃষ্টিগোচর না হওয়ায় গোলটি বৈধতা পেয়ে যায়।
✪ আরও পড়ুন: গোল্ডেন গ্লাভস নিয়ে অশ্লীল ভঙ্গি করায় তোলপাড়, কারণ জানালেন মার্তিনেজ
ফরাসি গণমাধ্যমটির এমন দাবির জবাবে কিলিয়ান এমবাপ্পের পেনাল্টিতে গোলের ভিডিও গণমাধ্যমকে দেখালেন মারচিনিয়াক। যেখানে আর্জেন্টিনা ৩-২ গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর এমবাপ্পে সমতাসূচক গোলটির সময় ফ্রান্সের খেলোয়াড়রা মাঠে ছিল। পোলিশ রেফারি বলেন, ‘ফরাসিরা এই ছবিটার কথা উল্লেখ করেননি। আপনারা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছেন, এমবাপ্পে গোল করার সময় ফ্রান্সের সাত খেলোয়াড় মাঠে ছিল।’
✪ আরও পড়ুন: লিওনেল মেসির বিশ্বরেকর্ড
এছাড়া কাতার বিশ্বকাপে মার্টিনেজের গোলকিপিং নৈপুণ্যে নেদারল্যান্ডস ও ফ্রান্সের বিপক্ষে টাইব্রেকারে জয় পায় আর্জেন্টিনা। তাছাড়া শেষ ষোলোতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শেষ মিনিটে তার সেভে জয় নিশ্চিত করে আর্জেন্টিনা। সবকিছু বিবেচনায় আসরে সেরা গোলরক্ষক নির্বাচিত হয়ে গোল্ডেন গ্লাভস জেতেন মার্টিনেজ। তবে বিশ্বকাপজয়ের পর নিজের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে প্রশংসিত হওয়ার চেয়ে সমালোচিত হচ্ছেন বেশি।
এমবাপ্পেকে নিয়ে আর্জেন্টিনার ড্রেসিংরুমে ট্রল করেছিলেন মার্টিনেজ। এরপর বুয়েনোস আইরেসে বাস প্যারেডের সময় এমবাপ্পের পুতুল হাতে নিয়ে মার্টিনেজের উদযাপনের দৃশ্য ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এনিয়ে আর্জেন্টিনা ফুটবল ফেডারেশনের কাছে ফরাসি ফুটবল ফেডারেশন অভিযোগও করেছে।
✪ আরও পড়ুন: অল্পের জন্য দুর্ঘটনা থেকে প্রাণে বাঁচলেন মেসিরা