আসন্ন কাতার বিশ্বকাপ খেলার জন্য ইতোমধ্যে দল গুছিয়ে পরিকল্পনাগুলো নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে অংশগ্রহণকারী ৩২ দেশ। ফিফা বিশ্বকাপের ইতিহাসে ৯২ বছরের মধ্যে এবারই প্রথম কোনো মুসলিম রাষ্ট্রে সর্বকালের সবচেয়ে ব্যয়বহুল বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
কাতারে বিশ্বকাপের সাজ ও আলোকসজ্জাতেও রাখা হয়েছে মুসলিম সংস্কৃতি ও বিশ্বাসের ছোঁয়া। দেশটির রাজধানী দোহাসহ বিভিন্ন স্থানে স্থাপন করা হয়েছে হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর বাণী (হাদিস) সংবলিত ব্যানার ও ফেস্টুন। ইসলামিক ক্যালিওগ্রাফি ও ম্যুরাল শোভা পাচ্ছে স্টেডিয়ামগুলোর আশপাশে।
সবচেয়ে বেশি নজর কাড়ছে বিভিন্ন স্থানে দেয়ালজুড়ে সাঁটানো বর্ণিল ম্যুরাল, ব্যানার ও ফেস্টুন। যেখানে আরবি ও ইংরেজি ভাষায় রাসুল (সা.)-এর প্রজ্ঞাপূর্ণ অনেক হাদিস লেখা হয়েছে। হাদিসগুলোর মধ্যে অন্যতম- ‘তোমরা সহজ করো, কঠিন করো না। মানুষের মধ্যে শান্তি স্থাপন করো, তাদের মধ্যে বিদ্বেষ সৃষ্টি করো না।’
দ্বিমুখী মানুষের পরিণতি নিয়ে নবীজীর একটি হাদিস লেখা হয়েছে। যার বাংলা হলো- ‘তুমি কিয়ামতের দিন আল্লাহর কাছে সবচেয়ে খারাপ ব্যক্তি হিসেবে দ্বিমুখী মানুষকে পাবে। সে এক দলের কাছে এক রূপ নিয়ে আসে এবং অন্যদের কাছে অন্য রূপ নিয়ে আসে।’ সালাম দেয়ার শিষ্টাচার নিয়েও একটি হাদিস জ্বলজ্বল করছে। যার অর্থ- ‘ছোট বড়কে, পথিক বসে থাকা ব্যক্তিকে এবং কমসংখ্যক ব্যক্তি বেশিসংখ্যক ব্যক্তিদের সালাম দেবে।’ দান ও সুন্দর কথার গুরুত্ব নিয়ে বর্ণিত একটি হাদিস শোভা পাচ্ছে ব্যানারে। সেখানে লেখা হয়েছে- ‘তোমরা খেজুরের টুকরো দান করে হলেও আগুন থেকে নিজেকে রক্ষা করো। যদি তা না পারো তাহলে সুন্দর কথা বলে নিজেকে রক্ষা করো।’
গাছ রোপণের গুরুত্ব দিতে মহানবীর সেই বিখ্যাত হাদিসও লেখা হয়েছে একটি ফেস্টুনে- ‘যদি কোনো মুসলিম গাছ রোপণ করে, অতঃপর কোনো মানুষ বা প্রাণী তা থেকে আহার করে, তা সেই ব্যক্তির জন্য দানস্বরূপ।’ এসব ছাড়াও আতিথেয়তা ও সামাজিক শিষ্টাচার নিয়ে নবী করিম (সা.)-এর বেশ কয়েকটি প্রসিদ্ধ হাদিস বর্ণিত হয়েছে ব্যানার, ফেস্টুন ও ম্যুরালে। রাস্তায় প্রদর্শিত কিছু হাদিসের মধ্যে রয়েছে- ‘প্রত্যেকটি ভালো কাজই দানস্বরূপ’, ‘যে অন্যের প্রতি দয়াশীল নয়, তার প্রতি দয়া করা হবে না।’ বিশ্বকাপে বিশ্বনবীর হাদিসকে তুলে ধরার বিষয়ে আরব নিউজের খবরে বলা হয়েছে- বিশ্বকাপ উপলক্ষ্যে আগত দর্শকদের কাছে ইসলামের সৌন্দর্য তুলে ধরে অভিনব কায়দায় অভ্যর্থনা জানাতে এমন উদ্যোগ নিয়েছে কাতার।