শেষ ষোলোর লড়াইয়ে সুইজারল্যান্ডকে গোলবন্যায় ভাসিয়ে কাতার বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছে পর্তুগাল। অথচ জয়ের আনন্দের চেয়ে সেদেশের সংবাদমাধ্যম সরগরম হয়েছে ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর বেঞ্চে থাকার ইস্যু নিয়ে।
শুরুর একাদশে না রাখায় এ তারকা নাকি কাতার ছাড়ার হুমকি দিয়েছিলেন। পর্তুগালের ফুটবল ফেডারেশন এমন খবরের বিরুদ্ধে আগেই বিৃবতি দিয়েছে। এবার এ বিষয়ে মুখ খুলেছেন রোনালদো নিজেই।
একটি দল বাইরের শক্তি দ্বারা ভেঙ্গে যাওয়ার খুব কাছাকাছি। তবে এ জাতি এত সাহসী যে নিজেকে কোনো প্রতিপক্ষের দ্বারা ভীত হতে দেয় না। এ দলটা শেষ পর্যন্ত স্বপ্নের জন্য লড়াই করবে! আমাদের ওপর আস্থা রাখুন! শক্তি, পর্তুগাল!
ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বৃহস্পতিবার (০৮ ডিসেম্বর) রোনালদো তার বিরুদ্ধে হওয়া সংবাদের প্রেক্ষিতে লেখেন, ‘একটি দল বাইরের শক্তি দ্বারা ভেঙ্গে যাওয়ার খুব কাছাকাছি। তবে এ জাতি এত সাহসী যে নিজেকে কোনো প্রতিপক্ষের দ্বারা ভীত হতে দেয় না। এ দলটা শেষ পর্যন্ত স্বপ্নের জন্য লড়াই করবে! আমাদের ওপর আস্থা রাখুন! শক্তি, পর্তুগাল!’
এর আগে পর্তুগিজ সংবাদমাধ্যম দ্য রেকর্ড তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে শুরুর একাদশে থাকবেন না জানতে পেরে রোনালদো তার কোচ ফার্নান্দো সান্তোসের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় করেন। এমনকি তিনি বিশ্বকাপ ছেড়ে চলে যাওয়ার হুমকিও দেন।
রেকর্ডদের এমন খবরকে ভিত্তিহীন বলে আগেই বিবৃতি প্রকাশ করে পর্তুগালের ফুটবল ফেডারেশন (এফপিএফ)। তারা জানান, জাতীয় দল ও দেশের সবাই প্রতিদিনই ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর অনন্য ইতিহাস তৈরি করে চলেছে। এটা অবশ্যই সম্মানের। যা জাতীয় দলের প্রতি তার প্রশ্নাতীত মাত্রার প্রতিশ্রুতি প্রমাণ করে।
এফপিএফ বিষয়টি পরিষ্কার করছে যে, জাতীয় দলের অধিনায়ক ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো কখনোই কাতারে জাতীয় দল ছেড়ে যাওয়ার হুমকি দেননি।
শৃঙ্খলাজনিত ব্যাপার এরই মধ্যে সমাধান হয়ে গেছে। রোনালদো অতীতে কী করেছে সেটা দেখাও কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ। সে অন্যতম সেরা ফুটবলার। আর আমাদের একসঙ্গেই কাজটা করতে হবে।
ফের্নান্দো কোস্তা সান্তোস
গত ৬ ডিসেম্বর সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচের মধ্যে দিয়ে দীর্ঘ ১৮ বছর বা দিনের হিসেবে ৬৭৪৭ দিন পর বড় কোনো টুর্নামেন্টের বেঞ্চে ছিলেন রোনালদো! সবশেষ তিনি পর্তুগালের হয়ে বেঞ্চে ছিলেন ২০০৪ ইউরোতে রাশিয়ার বিপক্ষে। সুইসদের বিপক্ষে রোনালদোকে অবশ্য ম্যাচের ৭৩ মিনিটে নামান কোচ ফার্নান্দো সান্তোস। তার আগেই ৫-১ গোলে এগিয়ে যায় পর্তুগাল।
এর আগে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে রোনালদোর বাজে পারফরম্যান্সের কারণে দ্বিতীয়ার্ধের ৬৪ মিনিটে তাকে মাঠ থেকে তুলে নেন কোচ সান্তোস। কোচের সিদ্ধান্তে খুশি হতে পারেননি পর্তুগিজ অধিনায়ক। মাঠ ছাড়ার সময় তার অঙ্গভঙ্গি কোচের জন্য খুব একটা সুখকর ছিল না।
শুরুর একাদশ থেকে রোনালদোর বাদ পড়ার পেছনে অনেকে এমন ঘটনার সম্পর্ক আছে বলে অনুমান করলেও, সুইসদের বিপক্ষে শুরুর একাদশে রোনালদোর এমন আচরণ কোনো প্রভাব ফেলেনি বলে নিশ্চিত করেছেন সান্তোস।
তিনি বলেন, ‘শৃঙ্খলাজনিত ব্যাপার এরই মধ্যে সমাধান হয়ে গেছে। রোনালদো অতীতে কী করেছে সেটা দেখাও কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ। সে অন্যতম সেরা ফুটবলার। আর আমাদের একসঙ্গেই কাজটা করতে হবে।’